আজ, বুধবারের মধ্যেই ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ খড়গপুরের পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে। মঙ্গলবার রাতে তাঁকে ফোন করে এমনই নির্দেশ দিয়েছেন জেলা তৃণমূলের কো-অর্ডিনেটর অজিত মাইতি। তৃণমূল সূত্রে খবর, সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রদীপকে খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানানো হয়েছিল আগেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও মঙ্গলবার পর্যন্ত প্রদীপ পদত্যাগ না করাতেই নেতৃত্বের ফোন তাঁকে।
জানা গিয়েছে, প্রদীপ আজ, বুধবার দুপুরের মধ্যেই পদত্যাগ পত্র জমা দেবেন খড়গপুরের মহকুমা শাসকের কাছে। তবে নিজের ক্ষোভ চেপে রাখতে পারেননি প্রদীপ। জানিয়েছেন, কেন তাঁকে ইস্তফা দেওয়ানোর জন্য অজিত মাইতি তাড়া দিচ্ছেন তা বোঝা যাচ্ছে না। খড়গপুর পুরসভার দুবারের চেয়ারম্যান প্রদীপর সরকার। আবার প্রাক্তন বিধায়কও। প্রদীপের দাবি, কেন এত তাড়া দিচ্ছেন অজিত মাইতি তা বুঝতে পারছেন না তিনি।
তিনি আরও বলেছেন, "যাঁরা কোনওদিন তৃণমূল করেনি, তাঁদের নিয়ে লাফালাফি করছেন কেন জেলা কো-অর্ডিনেটর। এতে দলের কোনও লাভ হবে কি? বুধবার দুপুর দুটোর মধ্যে আমি ইস্তফাপত্র জমা দেব। পুরসভার ফিনান্স অফিসার অসুস্থ, তাই দুদিন সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটাও আমাকে দিল না।"
আরও পড়ুন ‘ষড়যন্ত্র, চাপ দিয়ে কাউন্সিলরদের বিক্ষুব্ধ করা হয়েছে’, দল পদ কাড়তেই বিস্ফোরক খড়গপুরের চেয়ারম্যান
প্রসঙ্গত, পুরসভার ২৫ জন কাউন্সিলরের মধ্যে ২১ জনই খড়গপুরের চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারকে সরানোর দাবিতে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদকের কাছে দরবার করেছিলেন। চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দলীয় কাউন্সিলররাই সমাজবিরোধীদের দিয়ে পুরসভার জনপ্রতিনিধিদের হুমকি, তাঁদের বাড়ি ঘেরাও করার চেষ্টার অভিযোগ করেছেন টাউন থানায়। রয়েছে দুর্নীতির অভিযোগও। দলে যে গোষ্ঠীকোন্দল বাড়ছে তা ক্রমশ স্পষ্ট হচ্ছিল। এরপরই গত সোমবার অভিষেক খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পদ ছাড়ার জন্য প্রদীপ সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান অজিত মাইতি।
এর আগেই কাউন্সিলর ছিলেন প্রদীপ সরকার। দিলীপ ঘোষ সাংসদ হিসাবে জয় লাভের পর খড়গপুর বিধানসভায় উপনির্বাচনে জোড়া-ফুল ফুটেছিল প্রদীপ সরকারের হাত ধরেই। একুশের ভোটে অবশ্য বিজেপির হিরণের কাছে পরাজিত হন প্রদীপ। কিন্তু, বাইশের শুরুতে পুরসভা ভোটে ফের কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছিলেন তিনি। দল তাঁকেই খড়গপুর পুরসভার চেয়ারম্যান করে। ফলে প্রদীপকে সেই অর্থে তৃণমূল নেতৃত্বের নয়ণের মণিই বলা যেতে পারে। কিন্তু, পদ কাড়তেই দলের একাংশকে নিশানানা করে ইঙ্গিতে তোপ দেগেছেন প্রদীপ সরকার।