মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বিতর্কের আবহ জারি রেখে এবার পুলিশকর্তাদের সতর্ক করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। এদিকে, সোনারপুরের বাড়ি থেকে রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল বাবা-মেয়ের। অন্যদিকে, রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিল চার বাম ছাত্র সংগঠন। এবার লকডাউন নিয়ে দিলীপের কথার জবাব দিলেন না ফিরহাদ হাকিম। আবারও অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করায় এক কলেজ ছাত্রকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠল। আজ বাংলার গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি পড়ুন এক এক করে...
মমতার সরকারের আইএএস, আইপিএস-দের দায়বদ্ধতার পাঠ দিলেন রাজ্যপাল
মমতা সরকারের বিরুদ্ধে বিতর্কের আবহ জারি রেখে এবার পুলিশকর্তাদের সতর্ক করলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অধীনস্থ আইপিএস-আইএসএস কর্মীরা যেন তাঁদের অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস (কন্ডাক্ট) রুলস মেনে চলেন, শনিবার টুইটে এই বার্তাই দিয়েছেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়।
* মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ট্যাগ করে রাজ্যপাল লেখেন, আইএএস-আইপিএস'রা ১৯৬৮-র অল ইন্ডিয়া সার্ভিসেস (কন্ডাক্ট) রুলস মেনে চলুন। ওই বিধি অনুযায়ী আপনাদের রাজনৈতিক ভাবে নিরপেক্ষ, দায়িত্বশীল এবং স্বচ্ছ হতে হবে। সংবিধানের সর্বোচ্চ মর্যাদা রক্ষা এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ মেনে চলতে আপনারা বাধ্য।
IAS and IPS @MamataOfficial MUST observe ALL INDIA SERVICES (CONDUCT) RULES, 1968 that mandate:
•political neutrality;
•accountability and transparency;
•commit himself to and uphold the supremacy of the Constitution and democratic values;(1/3)
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) July 11, 2020
* ওই বিধি মোতাবেক আপনারা এমন কিছু করতে পারেন না, যা দেশের আইন, বিধি, প্রচলিত ধারার বিরুদ্ধে যায়। আপনাদের দায়িত্ব পালনে শৃঙ্খলা মেনে চলতে হবে। কেবল মাত্র আইনি নির্দেশ পালনে আপনারা দায়বদ্ধ।
•refrain from doing anything which is or may be contrary to any law, rules, regulations and established practices
•maintain discipline in the discharge of his duties and be liable to implement the lawful orders duly communicated to him; (2/3)
— Governor West Bengal Jagdeep Dhankhar (@jdhankhar1) July 11, 2020
* শেষ টুইটে রাজ্যপাল বলেছেন, ওই বিধি বলছে, আপনারা সর্বোচ্চ পেশাদারি মনোভাব, সমর্পন এবং সক্ষমতা দিয়ে কাজ করবেন। রাজ্যপাল হিসাবে এই বিধির বারংবার লঙ্ঘন দেখে আমি উদ্বিগ্ন। একটি কথাই মাথায় রাখবেন, এমন প্রতিটি ঘটনার দায় আপনাদের ঘাড়ে বর্তাবে।
রাজ্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি পড়তে থাকুন নীচে,
সোনারপুরে শ্বসুর-বউকে খুন করে পলাতক জামাই
বাড়ি থেকে রক্তাক্ত মৃতদেহ উদ্ধার হল বাবা-মেয়ের। শনিবার এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়ায় সোনারপুরের সুভাষগ্রামের সুকান্তপল্লীতে। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রের খবর, ওই একই বাড়িতে থাকতেন মেয়ের স্বামী। ঘটনার পর থেকেই তিনি পলাতক। এমন ঘটনায় শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। জোড়া খুনের তদন্ত করছে সোনারপুর পুলিশ। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন বারুইপুর জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।
ঠিক কী ঘটেছে?
জানা গিয়েছে, শনিবার এক প্রতিবেশী ফুল তুলতে গিয়ে দরজা খোলা অবস্থায় মহিলার দেহ পড়ে থাকতে দেখেন। সঙ্গে সঙ্গেই খবর দেওয়া হয় সোনারপুর থানায়। ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ দেখে সুনীতা পন্ডিতের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। এরপর ঘরের ভিতরে ঢুকতেই সুনীতার বাবা বাসুদেব গঙ্গোপাধ্যায়ের নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, দু'জনের দেহেই ধারাল অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। জানা গিয়েছে, এই একই বাড়িতে থাকতেন বাসুদেবের জামাই রমেশ পন্ডিত। ঘটনার পর থেকেই তাঁর কোনও খোঁজ নেই। তদন্তকারীদের ধারনা, যেভাবে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কোপানো হয়েছে তাতে আক্রোশবসত এই খুন বলেই মনে করা হচ্ছে।
রাজ্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি পড়তে থাকুন নীচে,
"দিলীপ ঘোষের কাজ নেই, ওঁর দীর্ঘায়ু কামনা করছি"
পশ্চিমবঙ্গে লকডাউন মানা হচ্ছে কি না তা নিয়ে রাজনৈতিক চাপান-উতোর জারি রয়েছেই। লকডাউনের প্রথম ধাপে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ দাবি করেছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা লকডাউন মানছেন না। শনিবার ফের একই দাবি করেন তিনি। দিলীপ ঘোষ বলেন, "রাজ্যে খাতায়-কলমে লকডাউন চলছে। কিন্তু তৃণমূল নেতারাই লকডাউন মানছে না। এখানে লকডাউন খায় না মাখে তা বোঝাই দায়।" একই সঙ্গে দিলীপবাবুর অভিযোগ, "দক্ষিণ ২৪ পরগনায় কনটেনমেন্টের সংখ্যার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আধিকারিকদের ধমকেছেন। তাঁর নিজেরই আইন মানার মানসিকতা নেই। এখানে করোনা ব্যাপক আকারে বাড়তে চলেছে। দিল্লি-মুম্বাইয়ের মত অবস্থা হবে।"
এদিকে, ২১ জুলাইয়ের আগে একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করছে তৃণমূল কংগ্রেস। পেট্রোপণ্যের মূল্য বৃদ্ধি, রেল বেসরকারিকরণ-সহ একাধিক ইস্যুতে পথে নেমে আন্দোলন করেছে তৃণমূল। এদিন দিলীপ ঘোষের বক্তব্যের প্রতিক্রিয়া দিতে গিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "রোজ দিলীপ ঘোষের প্রশ্নের জবাব দিতে গেলে আর কোনও কাজ করতে হবে না। ওঁর তো কোনও কাজ নেই। শুধু তৃণমূল কংগ্রেসকে গালিগালাজ করা। এটা করলে খুশি হলে হন না। ওনার দীর্ঘায়ু কামনা করি।"
প্রসঙ্গত, ২০২১-এ এ রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচন। স্বভাবতই নানা ইস্যুতে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলই তাঁদের কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছে। মিটিং, মিছিল, সভা সবই চলছে। অভিজ্ঞমহলের মতে, সকলেই উপলব্ধি করছে কারা লকডাউন মানছে আর কারা মানছে না।
রাজ্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি পড়তে থাকুন নীচে,
সঙ্কটে শিক্ষা, রাজ্যপালের দ্বারস্থ বাম ছাত্র সংগঠন
করোনা আবহে বন্ধ হয়েছে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়। বন্ধ হয়েছে সমস্ত পরীক্ষা। এই আবহে রাজ্যের শিক্ষাব্যবস্থার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে রাজ্যপালের কাছে স্মারকলিপি দিল চার বাম ছাত্র সংগঠন। করোনা আবহে শিক্ষা পরিস্থিতি নিয়ে ছাত্র প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলোচনাও করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। এসএফআই, এআইএসএফ, পিএসইউ ও এআইএসবি-র নেতৃত্ব স্থানীয়রা ছিলেন এই প্রতিনিধি দলে।
শিক্ষাখাতে সরকারি ব্যয় বরাদ্দ বাড়ানো, স্পেশ্যাল স্টিমুলাস প্যাকেজ ঘোষণা, স্কুলশিক্ষায় এক শিক্ষাবর্ষের ফি ও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সেমিস্টারের ফি মকুব করা, দ্বাদশ শ্রেণী অবধি মাসে দু'বার মিড ডে মিল লাগু, অনলাইন শিক্ষা ব্যবস্থার বিরোধিতা করে রাজ্যপালের কাছে দাবিপত্র পেশ করে বাম ছাত্র প্রতিনিধিরা।
এসএফআইয়ের রাজ্য সম্পাদক সৃজন ভট্টাচার্য বলেন, "এরকম পরিস্থিতিতে ড্রপআইট হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তা আটকাতে এখনও কোনও পরিকল্পনা করেনি রাজ্য বা কেন্দ্রীয় সরকার। তাছাড়া স্কুলগুলিতে ফি বৃদ্ধি রুখতে নোটিফিকেশন করতে হবে রাজ্য সরকারকে। ইউজিসি অনলাইন শিক্ষা চাপাতে চাইছে। এর মাধ্যমে জিডিটাল ডিভাইডেশন হবে। দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত ছাত্রদের সর্বনাশ হয়ে যাবে। খুব বিপদে পড়বে। করোনা মিটলে দ্রুত ক্লাসে ফেরানোর জন্য বৈজ্ঞানিক পরকল্পনা থাকতে হবে।" ছাত্র নেতৃত্বের দাবি, পরীক্ষা নিয়ে ইউজিসি'র সার্কুলারকে সমর্থন নয় - ছাত্র শিক্ষক, শিক্ষাকর্মী সকলের সাথে কথা বলে বিকল্প মূল্যায়ন পদ্ধতির মাধ্যমেই ছাত্রদের পাশ করাতে হবে।
রাজ্যের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবরগুলি পড়তে থাকুন নীচে,
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
অসামাজিক কাজের প্রতিবাদের 'অভিযোগে' গুলিতে ঝাঁঝরা কলেজ ছাত্র
অসামাজিক কাজের প্রতিবাদ করায় এক কলেজ ছাত্রকে গুলি করে খুন করার অভিযোগ উঠল টিটাগড় উড়ানপাড়া এলাকায়।এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রের খবর। নিহত তৌফিক আলি ব্যারাকপুরের রাষ্ট্রগুরু সুরেন্দ্রনাথ কলেজের কলা বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।
জানা গিয়েছে, শুক্রবার রাতে বাইকে বাড়ি ফেরার সময় তৌফিক আলিকে লক্ষ্য করে গুলি চালানো হয়। বোমও ছোড়া হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি।
স্থানীয় সূত্রে খবর, শুক্রবার বাড়ি থেকে বেরনোর সময় কয়েকজন যুবকের সঙ্গে ওই ছাত্রের বচসা হয়েছিল। তারপর বাড়ি ফেরার সময় তৌফিকের ওপর হামলা চালানো হয় বলে জানা গিয়েছে।
তৌফিকের পরিবারের লোকেদের অভিযোগ, এলাকায় বেশ কয়েকজন যুবক রাতে মদ-গাঁজার নেশা করে। নিষেধ করা হলে ওই যুবকরা খুনের হুমকি দিত। একবার মারধরও করেছিল। টিটাগড় থানাতে এই নিয়ে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল। কিন্তু এরপরও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন এমনটাই অভিযোগ তাঁদের। তৌসিফের এই মৃত্যু ঘিরে পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন পরিবারের সদস্যরা।