করোনা ও আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে আজ সর্বদল বৈঠক করলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। আমফানে বিরোধী দলের সদস্য় নিয়ে কমিটি গঠন করা হল। পাশাপাশি করোনা পরিস্থিতিতে বাংলায় কনটেনমেন্ট জোনে লকডাউন বাড়ানোর কথা জানালেন মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। এদিকে, করোনায় আক্রান্ত হয়ে রাজ্য়ে এই প্রথম কোনও বিধায়কের মৃত্য়ু হল। তৃণমূল বিধায়কের মৃত্য়ু নিয়ে মমতাকে দুষলেন দিলীপ। অন্য়দিকে, বর্ষায় আগামী কয়েকদিনে উত্তরবঙ্গে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। বাংলার এমনই সব গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়ে নিন এক এক করে...
সর্বদল বৈঠকে মুখোমুখি মমতা-দিলীপ-সূর্য-প্রদীপ, আমফান মোকাবিলায় বিরোধীদের নিয়ে কমিটি গঠন
করোনা ও আমফান পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে নবান্ন সভাঘরে সর্বদল বৈঠক করলেন মুখ্য়মন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। এদিনের বৈঠক শেষে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা জানালেন, ''আমফানে একাধিক দলের সদস্য় নিয়ে কমিটি গঠন করা হয়েছে। সর্বদলীয় রেজিলিউশনের খসড়া বানাবে কমিটি। খসড়ার একটা কপি কেন্দ্রকে পাঠানো হবে''। অন্য়দিকে, আমফানে ত্রাণ নিয়ে বঞ্চনা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্য়মন্ত্রী।
* আমফানে একাধিক দলের সদস্য় নিয়ে কমিটি গঠন করা হবে।
*কমিটিতে তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়, সিপিএমের সুজন চক্রবর্তী, কংগ্রেসের প্রদীপ ভট্টাচার্য, স্বপন বন্দ্য়োপাধ্য়ায়রা রয়েছেন। সর্বদলীয় রেজিলিউশনের খসড়া বানাবে এই কমিটি। খসড়ার একটা কপি কেন্দ্রকে পাঠানো হবে।
* গরিব কল্য়াণ রোজকার যোজনা নিয়েও কথা হয়েছে এদিনের বৈঠকে।
* মমতা বলেছেন, ''সুন্দরবন নিয়ে সমস্য়া হচ্ছে। মাস্টার প্ল্য়ান তৈরি করা হবে। নীতি আয়োগকে চিঠি লিখব, যাতে টিম পাঠিয়ে মাস্টার প্ল্য়ান তৈরি করে। বাঁধ নিয়ে স্থায়ী সমাধান করার চেষ্টা করা হবে''।
*অসংগঠিত ক্ষেত্রে সাহায্য় করা উচিত, এ নিয়ে সকলে ঐক্য়মত হয়েছেন।
*আমফানের ব্য়াপারে আরও টাকার প্রয়োজন বলে মতপ্রকাশ করেছেন সকলে, জানিয়েছেন মমতা।
* নন কোভিড রোগীদেরও যত্ন নেওয়ার কথা বলা হয়েছে বৈঠকে।
* মমতা বলেছেন, ''করোনা নিয়ে আরও যত্ন নেওয়ার কথা বলা হয়েছে''। বেসরকারি হাসপাতালের উদ্দেশে মমতা বলেছেন, ''এই সময় ব্য়বসা করার সময় নয়, মানবিকতার সময়''।
*যেখানে টেস্টিং ল্য়াব (করোনা পরীক্ষাগার) নেই, সেখানে তা করার জন্য় কেন্দ্রের কাছে অনুরোধ জানানো হবে বলে জানিয়েছেন মমতা।
* মাস্ক নিয়ে কথা হয়েছে, ৩ কোটি মাস্কের বরাত দেওয়া হয়েছে বলে জানালেন মমতা।
* মমতা বলেছেন, ''আমফানে অনেকে বঞ্চিত হয়েছেন ত্রাণ নিয়ে তাই কোনওরকম বঞ্চনা সরকার বরদাস্ত করবে না। দলবাজি প্রশ্রয় দেওয়ার জায়গা নেই। যাঁরা বঞ্চিত হয়েছেন, তাঁরা আবেদন জনাতে পারেন, ২১০০ আবেদনপত্র এসেছে আমার কাছে। কোনও গরিব মানুষকে বঞ্চনা করবেন না''।
* বিডিও অফিস ভাঙচুর করবেন না, ঠিক জায়গায় অভিযোগ জানান: মমতা
* 'পরিবহণ নিয়ে সমস্য়ার কথা সকলে বলেছেন, পরিবহণে যাঁরা আছেন, তাঁদের আর্জি জানাচ্ছি, ভাড়া বাড়াব না বলে বাস নামাব না, এটা করবেন না প্লিজ'।
* মমতা: লকডাউন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সবাই যে এ নিয়ে একমত তা নন। কেউ বলেছেন ১৫ দিন বাড়ান, কেউ বলেছেন আলাদা মতামত রয়েছে। লকডাউন আরও একটু বাড়াই। করোনা সংক্রমণ যাতে ছড়িয়ে না পড়ে সে ব্য়াপারে সতর্ক থাকতে হবে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
বাংলার অন্য়ান্য় গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়ুন নীচে
করোনায় মৃত তৃণমূল বিধায়ক
প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ। করোনায় আক্রান্ত হয়ে বিগত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে বাইপাসের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। বুধবার সকালে তাঁর মৃত্যু হয়।
*তমোনাশ ঘোষের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
*টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, ‘খুব খুব কষ্টের। তিনবারের বিধায়ক ও ১৯৯৮ সাল থেকে দলের কোষাধক্ষ পদের দায়িত্বে থাকা তমোনাশ ঘোষ আজ আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন। উনি ৩৫ বছরের বেশি সময়ে আমাদের সঙ্গে ছিলেন, মানুষ ও দলের সেবায় কাজ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডে তাঁর অবদান অতুলনীয়।’(বিস্তারিত পড়ুন-প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষ)
বাংলার অন্য়ান্য় গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়ুন নীচে
'একজন বিধায়ককে বাঁচানোরও ক্ষমতা নেই মমতা সরকারের', কটাক্ষ দিলীপের
প্রয়াত তৃণমূল বিধায়ক তমোনাশ ঘোষের প্রসঙ্গ টেনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বুধবার তীব্র কটাক্ষ করলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ। বঙ্গ বিজেপির দ্বিতীয় ভার্চুয়াল জনসভায় রাজ্য সরকারের মন্ত্রী-বিধায়করা লকডাউনের নিয়ম মানছে না বলেও অভিযোগ করেছেন দিলীপ ঘোষ। তাঁর কথায়, “উল্টে বিজেপি নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করছে পুলিশ।” এরপরই মেদিনীপুরের সাংসদের কটাক্ষ, “নিজের দলের মন্ত্রী, বিধায়কদের বাঁচাতে পারেন না। সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?”
*দিলীপবাবু বলেন, “রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার হাল কী! দুর্ভাগ্যবশত আজ সরকারি দলের একজন বিধায়ক মারা গিয়েছেন। তিনি একমাস ধরে হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন। এই সরকারের ক্ষমতা নেই একজন বিধায়ককে বাঁচিয়ে দেওয়ার। স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কোথায় পৌঁছে গিয়েছে! জলজ্যান্ত বিধায়কের প্রাণ গেল''।
* তিনি আরও বলেছেন, ''একজন মন্ত্রী অসুস্থ হয়েছিলেন। তবে তিনি ভেন্টিলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন, এটা সৌভাগ্যের কথা। প্রাক্তন বিধায়ক, তাঁর পরিবার এখন অসুস্থ। এই সরকারের কাছে চিকিৎসার ন্যূনতম ব্যবস্থা নেই। মন্ত্রী, বিধায়কদেরই বাঁচাতে পারছে না। তাহলে সাধরণ মানুষকে কোথায় যাবে?” (বিস্তারিত পডুন-‘নিজের দলের মন্ত্রী-বিধায়কদের বাঁচাতে পারে না, সাধারণ মানুষ কোথায় যাবে?’)
বাংলার অন্য়ান্য় গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়ুন নীচে
সরকারি নির্দেশ নেই, তবুও খাস কলকাতায় বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বাড়ল বেসরকারি বাস ভাড়া
সরকারি ঘোষণা ছাড়াই রীতিমত বিজ্ঞপ্তি দিয়ে কলকাতার ১৩টি রুটে বেসরকারি বাসের ভাড়া বৃদ্ধি করা হল। ওইসব রুটে বেসরকারি বাসে উঠলেই দিতে হবে ১০ টাকা। পরবর্তী ক্ষেত্রে ভাড়া ৫ টাকা করে বাড়ানো হয়েছে। ভাড়া বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি দেখে এদিন ক্ষোভে ফেটে পড়েন যাত্রীরা। কিন্তু, রাজ্যের নির্দেশ ছাড়া কি করে বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়তে পারে? আপাতত তা নিয়েই বিতর্ক দানা বেঁধেছে।
ভাড়া বৃদ্ধি প্রসঙ্গে ওয়েস্ট বেঙ্গল বাস-মিনি বাস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক প্রদীপ বসু জানিয়েছেন, '১৩টি রুটের বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়ানোর ক্ষেত্রে মালিক সংগঠনের কোনও ভূমিকা নেই। ওই সব রুটের বাসগুলি আমাদের সংগঠনভুক্তও নয়।'
* আনলক ওয়ানের শুরু থেকেই ভাড়া বৃদ্ধির দাবি করেছে বেসরকারি বাস মালিক সংগঠনগুলি।
* মালিকদের দাবি ছিল স্বাস্থ্যবিধি মেনে কম যাত্রী নিয়ে বাস চললে লোকসান হবে।
* যদিও রাজ্য সরকার বাস মালিক সংগঠনগুলির ভাড়া বৃদ্ধির দাবি মানেনি।
* তবে, ভাড়া নির্ধারণে সরকার রেগুলেটরি কমিটি গঠন করে দেয়।
* মালিক সংগঠনের তরফে কমিটির কাছে প্রস্তাবিত বর্ধিত বাড়ার তালিকা পেশ করা হয়েছে।
* কিন্তু, এখনও পর্যন্ত ভাড়া বৃদ্ধির বিষয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি।
কম যাত্রী ওঠায় এমনিতেই লাভের মুখ দেখা সম্ভব হচ্ছে না বলে দাবি বেসরকারি বাস মালিকদের। উপরোন্ত, গত দু'সপ্তাহের উপর রোজই নিয়ম করে বাড়ছে জ্বালানির দাম। লোকসানের জেরে বহু রুটের বাস ইতিমধ্যেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। অবিলম্বে ভাড়া বৃদ্ধি না করলে বেসরকারি বাস আর পথে নামানো সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন মালিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। ফলে যাত্রী হয়রানি বাড়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
বাংলার অন্য়ান্য় গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়ুন নীচে
উত্তরে ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করেছে আবহাওয়া দফতর। ২৪ থেকে ২৮ জুন পর্যন্ত ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি কর হয়েছে।
*দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, কালিম্পং, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ারে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে। মালদা, দুই দিনাজপুরেও ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস জারি করা হয়েছে।
*আলিপুর আবহাওয়া দফতর সূত্রে জানা যাচ্ছে, কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই ২৪ পরগনা, দুই মেদিনীপুর, দুই বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ, নদিয়া, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, ঝাড়গ্রামে হাল্কা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে।
বাংলার সব গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়ুন এই প্রতিবেদনে