দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় আমফানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় পরিস্থিতি। করোনা আক্রান্ত নন, এমন রোগীদের ভর্তি না নিলে হাসপাতালগুলির বিরুদ্ধে কড়া ব্য়বস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিল স্বাস্থ্য় দফতর। এদিকে, বৌবাজার এলাকার ধস কবলিত অঞ্চল ছেড়ে ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে এগিয়ে গেল মেশিন টিবিএম ‘উর্বী’। অন্য়দিকে, টুইটার-ফেসবুকে বিজেপি নেতানেত্রীদের প্রচারের বিরুদ্ধে এবার পাল্টা সুর চড়ানোর কৌশল নিল ঘাসফুল শিবির। বাংলার এমনই সব খবর পড়ে নিন এক এক করে...
ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা
হতদরিদ্র মানুষ একটা ত্রিপল চেয়ে পায়নি। বর্ষায় মাথা ঢাকার কোনও ব্যবস্থা নেই। অথচ পঞ্চায়েতের সদস্যরা নিজে শুধু নন, আত্মীয়-স্বজনের নামেও ত্রাণের হাজার হাজার টাকা পকেটস্থ করছেন, এমন অভিযোগেই তোলপাড় দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকা। এর ফলে রীতিমতো ফুঁসছেন আমফানে ক্ষতিগ্রস্তরা। জেলা পরিষদের সভাধিপতি সামিমা শেখ জানিয়েছেন, একই পরিবারের সকলের নাম ত্রাণের তালিকায়, তা মানা যায় না। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
*নন্দকুমারের পঞ্চায়েত সদস্য় কানধরে ওঠবস করেছেন। বিডিও-র উপস্থিতিতে ঘটছে এই ঘটনা। তারপরের দিন হাওয়া খারাপ বুঝে নন্দকুমার গ্রাম পঞ্চায়েতের জগন্নাথের চক ও মহম্মদনগরের দুই পঞ্চায়েত সদস্য পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে। ওই দিন রাতে স্থানীয় গ্রামবাসীরা তাঁদের আটকে রাখে।
*জানা যাচ্ছে, দক্ষিণ ২৪ পরগনায় একের পর এক পঞ্চায়েতে ত্রাণ নিয়ে দলবাজি চরমে উঠেছে। ফলে পঞ্চায়েতে বিক্ষোভ ক্রমশ দানা বাঁধছে। সাগর, রায়দীঘি, কাকদ্বীপ, নামখানা, পাথরপ্রতিমা, ফ্রেজারগঞ্জ-সহ প্রায় সর্বত্রই আমফানের ত্রাণ নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে।
*নিজেকে হেরো প্রার্থী বলে ঘোষণা করা সিপিএমের কান্তি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “গরিব মানুষ একটা ত্রিপলও পেল না। বৃষ্টির সময় থাকবে কোথায়? এদিকে হাজার হাজার ত্রাণের টাকা আত্মসাৎ হয়ে যাচ্ছে। আমরাও ত্রাণের দাবিতে শান্তিপূর্ণ অবস্থান-বিক্ষোভ করেছি।” (বিস্তারিত পড়ুন-ত্রাণ দুর্নীতির অভিযোগে তোলপাড় দক্ষিণ ২৪ পরগনা, ক্ষোভের আগুনে ফুঁসছে ক্ষতিগ্রস্তরা)
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন
বাংলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবর নীচে পড়ুন
নন-কোভিড রোগীদের ভর্তি না নিলে কড়া ব্যবস্থা, হাসপাতালগুলিকে সতর্ক করল স্বাস্থ্য দফতর
করোনার জেরে ধাক্কা খাচ্ছে স্বাভাবিক চিকিৎসা। করোনা আক্রান্ত নন, অথচ অসুস্থ এমন রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি নেওয়ার বিষয়ে কোভিড আবহেই অশান্ত হচ্ছে হাসপাতালের ডাক্তার-ইন্টার্ন এবং রোগীর পরিবার। সেই প্রেক্ষাপটেই এবার স্বাস্থ্য দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয় যে সরকারি এবং বেসরকারি যেকোনও হাসপাতাল করোনা নেই, এমন রোগীকে ভর্তি না নিলে তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেবে রাজ্য সরকার।
এমনকী বিশেষভাবে সর্তক করা হয়েছে রাজ্যের বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও। সাফ জানান হয়েছে ভর্তির বিষয়ে তাদের বিরুদ্ধে রোগীর পরিবারের তরফে অভিযোগ আসলে হাসপাতালের লাইসেন্সও বাতিল করা হতে পারে। এছাড়াও প্রয়োজনীয় শাস্তিও গ্রহণ করা হতে পারে।
স্বাস্থ্য দফতর জানায়, "ওয়েস্ট বেঙ্গল ক্লিনিকাল এস্ট্যাবলিশমেন্ট অ্যাক্ট, ২০১৭ অনুযায়ী বেসরকারী হাসপাতাল কর্তৃক ভর্তি ও পরিষেবা অস্বীকার করার ঘটনা ঘটেছে এবং রোগীরা ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে, যা অপরাধ।"
বাংলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবর নীচে পড়ুন
বৌবাজার পার করল 'উর্বী'
কাজ সামান্য এগোলেই ধসে পড়ছিল বৌবাজারে বাড়িগুলি, কাজেই স্থগিত ছিল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ। গত শুক্রবার থেকে মাটির নীচে ফের শুরু হয় মেট্রোর কাজ। বৌবাজার এলাকার ধস কবলিত অঞ্চল ছেড়ে ধীরে ধীরে পূর্ব দিকে এগিয়ে গেল মেশিন টিবিএম ‘উর্বী’। কিন্তু পশ্চিমমুখী মেশিন এখনও সেভাবে এগোতে পারেনি বলে জানা যাচ্ছে।
*শিয়ালদার দিকে এগিয়ে গিয়েছে পূর্বমুখী মেট্রোর সুড়ঙ্গ। আগামী চার থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে বি বি গাঙ্গুলি স্ট্রিটের নীচে পৌঁছানোর চেষ্টা করছে উর্বী।
*এখন খানিক স্বস্তিতে কাজ এগোনো যাবে বলে জানাচ্ছেন ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
*বৌবাজারের মাটির নীচে সমস্যায় জর্জরিত অঞ্চল ছেড়ে এগিয়েছে মেশিন। উল্লেখ্য, মেট্রোর কাজের জন্য গত বছর ৩১ জুলাই সন্ধ্যায় বিকট শব্দের সঙ্গে বৌবাজারে ধস নামে। তার পরেই স্থগিত রাখা হয় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ।
বাংলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবর নীচে পড়ুন
বিজেপির পথেই বিজেপিকে মোকাবিলা, অনলাইন যোদ্ধাই বড় ভরসা ঘাসফুলের
টুইটার-ফেসবুকে বিজেপি নেতানেত্রীদের প্রচারের বিরুদ্ধে এবার পাল্টা সুর চড়াতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঘাসফুল শিবির। শুধুমাত্র বিজেপিকে আক্রমণ করেই সীমাবদ্ধ থাকতে চাইছে না মমতার দল। নির্বাচনের আবহে অনলাইন দুনিয়ায় ‘বাংলার যুবশক্ত’-কে বিশেষভাবে কাজে লাগাতে চাইছে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুব বিগ্রেড।
*সূত্রের খবর, রাজ্যের লক্ষ লক্ষ তরুণদের মানসিকতা বুঝে এবং ভবিষ্যতের জন্য নতুন নেতার খোঁজ চালাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জুনের ১১ তারিখ এই অনলাইন প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করে ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই প্ল্যাটফর্মে যারা রেজিস্টার করবেন, তাঁরা যুব যোদ্ধার পদ পাবেন। রাজনৈতিক আদর্শে উদ্বুদ্ধ যুব সম্প্রদায়ের কাছে সরাসরি পৌঁছে যাওয়ার জন্যই এই প্ল্যাটফর্ম। এরপর রাজ্য-জেলা-ফিল্ড এই তিনটি কমিটি গঠন করা হবে এঁদের সকলকে নিয়ে। তৃণমূল যুব কংগ্রেসের ২ হাজার ৮০০ সদস্য থাকবেন এই উদ্যোগকে বাস্তবায়িত করতে। সমাজের দুঃসময়ে এলাকাবাসীর পাশে দাঁড়িয়ে সাহায্যর হাত বাড়িয়ে দেবেন এই যুব যোদ্ধারা।”
*তৃণমূল যুব কংগ্রেসের এক নেতা বলেন, “বিজেপির সোশাল মিডিয়ার মাধ্যমে প্রচারের সঙ্গে লড়াই করতেই আমরা রাজ্যের যুব সম্প্রদায়কে নিয়ে শক্তপোক্ত নেটওয়ার্ক তৈরি করছি। এক মাস পর পর ভার্চুয়াল বৈঠকও হবে এক লক্ষ যুব যোদ্ধাদের সঙ্গে। কীভাবে কাজ করবেন তাঁরা, বাংলার মানুষকে সাহায্য করতে কী কী দায়িত্ব নিতে হবে তাঁদের, সেগুলিও বলে দেওয়া হবে।” (বিস্তারিত পড়ুন, এখানে)
বাংলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবর নীচে পড়ুন
একুশের লড়াইয়ে জোটের পথে বাম-কংগ্রেস
২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে জোটের লক্ষ্যে মহড়া শুরু করে দিল কংগ্রেস ও বামফ্রন্ট। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে তারা ২৯ জুন রাজ্যব্যাপী মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে পথে নামছে। অন্যান্য বিজেপি ও তৃণমূল বিরোধী রাজনৈতিক শক্তিকেও জোটে যোগ দেওয়ার আবেদন করছে বাম-কংগ্রেস। তবে এখনই কোনও স্টিয়ারিং কমিটি হচ্ছে না। বুধবার দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব দীর্ঘ বৈঠক করে একাধিক বিষয়ে সহমত পোষণ করেছে।
*২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনে বামফ্রন্ট ও কংগ্রেসের মধ্যে নির্বাচনী জোট হয়েছিল। যদিও ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে সেই জোট ভেস্তে যায়।
*রাজনীতির কারবারিদের মতে, ভোটের ফলাফল দেখে দুই দলের শীর্ষ নেতৃত্ব উপলব্ধি করেছে, একসঙ্গে লড়াই না করলে অস্তিত্ব সংকট দেখা দিতে পারে।
* ফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু বলেন, “তৃণমূল ও বিজেপিকে সরাতে আমরা যৌথ আন্দোলন করব। দেশের মানুষের শত্রু বিজেপি। আর বাংলার শত্রু বিজেপি ও তৃণমূল কংগ্রেস। তৃণমূল আর বিজেপিকে জনবিচ্ছিন্ন করতে আমাদের সবরকমের কর্মসূচি এক সঙ্গে করতে হবে। এ বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আগামী ২৯ জুন পেট্রোল ও ডিজেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে যৌথ কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।”
*প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন,”আমাদের চলার পথ এক। আমাদের ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় চলার জায়গা নেই। নাটক-নভেল করতে চাই না। আন্তরিক ভাবে বামফ্রণ্ট ও কংগ্রেস মিলে সহযোগী দলগুলির সঙ্গে তৃণমূল ও বিজেপির বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তুলতে চাই।” (বিস্তারিত পড়ুন- বিজেপি-তৃণমূলকে চ্যালেঞ্জ, ২০২১-এ জোট গড়তে একসঙ্গে পথে বাম-কংগ্রেস)
বাংলার অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ খবর নীচে পড়ুন
মেয়েকে শ্লীলতাহানি থেকে বাঁচাতে গিয়ে মৃত্যু মায়ের, গ্রেফতার তৃণমূল নেতা
চোখের সামনে মেয়ের শ্লীলতাহানি দেখতে পারেননি মা। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়েই খুন হতে হল হাওড়ার বাগনানের ওই মহিলাকে। এই ঘটনায় বুধবার তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
অভিযুক্ত স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য কুশ বেরা। পুলিশ জানিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের এই নেতার বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হয়েছে। এই ঘটনার প্রতিবাদে বাগনানের খাদিনান মোড়ের কাছে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করে তৃণমূল নেতার অবিলম্বে গ্রেফতারি নিয়ে তুমুল বিক্ষোভ দেখান সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় এবং সৌমিত্র খাঁ। এর পরই অভিযুক্ত নেতাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ঠিক কী ঘটেছিল?
সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে বাড়ির ছাদে বসেছিলেন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। অভিযোগ, বেশি রাতে বাড়ির পাশের গাছ বেয়ে ছাদে উঠে আসে কুশ বেরা ও আরও একজন। তাঁরা ওই তরুণীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে। প্রাণ ও সম্ভ্রম বাঁচাতে চিৎকার শুরু করেন তরুণী। মেয়ের চিৎকারে দ্রুত ছাদে উঠে আসেন তাঁর মা। অভিযোগ তখনই ওই দুষ্কৃতীরা মাকে ধাক্কা মেরে ঘটনাস্থল থেকে ছুটে পালায়। বেসামাল হয়ে ছাদ থেকে পড়ে যান মা। মাথায় একাধিকও আঘাতও লাগে তাঁর।
পুলিশ জানায় ঘটনার পর তাঁকে প্রথমে স্থানীয় একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরবর্তীতে তাঁকে উলুবেরিয়া হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে তাঁর। বুধবার সকালেই তাঁর মৃত্যু হয়।
এর পরই কুশ বেরার বিরুদ্ধে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। সেই প্রতিবাদে এসে নিজেদের সমর্থন জানান লকেট-সৌমিত্র খাঁ। Read the full story in English
বাংলার সব গুরুত্বপূর্ণ খবর পড়ুন এই প্রতিবেদনে