আজ মহালয়া। পিতৃপক্ষের অবসান, দেবীপক্ষের সূচনা। চারিদিকে শুধুই পুজো পুজো গন্ধ। শেষ মুহূর্তের জোরদার প্রস্তুতি চলছে মণ্ডপে মণ্ডপে। কলকাতার দুর্গাপুজো এবারই বিদেশের শিল্পীরা শিল্পভাবনা ফুটিয়ে তুলছেন। শহরবাসীকে উৎসবের আনন্দে মাতোয়ারা করে তুলতে তাই নেই কোন খামতি। চলছে শেষ বেলার প্রস্তুতি। সকলের মনেই শুধু একটাই প্রশ্ন পুজোর ক’টা দিন বৃষ্টিতে ভিজবে না তো শহর? এই ক’দিনের আনন্দ চেটেপুটে উপভোগ করতে কোন খামতি রাখতে চাইছে না আপামোর বাঙালি। কিন্তু মহালয়ার সকালে পুজোর ওয়েদার আপডেট নিয়ে কী জানাচ্ছে হাওয়া অফিস?
গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিক থেকে চলতি অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত দক্ষিণবঙ্গের জেলায়-জেলায় তুমুল বৃষ্টির জেরে উদ্বেগ চরমে উঠেছিল। ব্যারাজগুলি জল ছাড়তে শুরু করায় প্লাবন পরিস্থিতির আশঙ্কা বাড়ছিল। যদিও নিম্নচাপ সরে যাওয়ায় সেই চিন্তা কেটেছে। গত কয়েকদিন ধরেই দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে পরিস্কার আকাশ, রোদ ঝলমলে আবহাওয়া। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস বলছে, দক্ষিণবঙ্গে আপাতত বৃষ্টির জোরালো সম্ভাবনা নেই। কিছু কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে আংশিক বৃষ্টি হতে পারে। তবে পুজোর ঠিক আগে আগে দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে তাপমাত্রা খানিকটা কমতে পারে।
তিলোত্তমা মহানগরীর সর্বত্র পুজোর ভরপুর মেজাজ। পুজোর আগের শেষ উইকেন্ড দোরগোড়ায়। তার আগের দিনেও বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে মহানগরীতে। তবে আর্দ্রতাজনতি অস্বস্তি কাবু পড়বে। তবে সেই পরিস্থিতিও স্থায়ী হবে না বলেই মনে করছেন আবহাওয়াবিদরা।
ইতিমধ্যেই গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ ও হিমালয় সংলগ্ন পার্বত্য বঙ্গের একাংশ থেকে বিদায় নিয়েছে বর্ষা। স্বাভাবিকভাবেই এই খবরে পুজোর আগে অনেকটাই স্বস্তিতে রাজ্যবাসী। কিন্তু বর্ষা বিদায় নিলেও সমস্যা বাড়াতে পারে নিন্মচাপ। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, ১৭ থেকে ২০ অক্টোবর অর্থাৎ ষষ্ঠী পর্যন্ত রাজ্যের দক্ষিণবঙ্গের সমস্ত জেলার আকাশ থাকতে চলেছে আংশিক মেঘলা। সপ্তমী এবং অষ্টমীতে সেভাবে বৃষ্টি বিপত্তির কারণ হয়ে দাঁড়াবে না। কিন্তু নবমী ও দশমীতে আকাশের মুখ ভার হতে পারেই বলেই খবর। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হতে পারে রাজ্যের একাধিক জেলায়।
আজ মহালয়ার সকাল থেকেই রৌদ্রজ্বল থাকবে আকাশ। বৃষ্টিপাতের তেমন কোন সম্ভাবনা নেই। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় বেশ খানিকটা শুষ্ক থাকবে তিলোত্তমা। শুক্রবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি, যা স্বাভাবিকের থেকে এক ডিগ্রি বেশি এবং কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা থাকতে পারে ২৭.৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের থেকে তিনি ডিগ্রি বেশি। এদিন বাতাসে আপেক্ষিক আদ্রতার পরিমাণ ছিল সর্বাধিক ৯৪ শতাংশ এবং সর্বনিম্ন ৩৭ শতাংশ।
এবছর উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে শুরু থকে সহায় ছিলেন বরুণদেব। ঢেলে বৃষ্টি হয়েছে উত্তরবঙ্গের প্রায় সব জেলায়। টানা বৃষ্টির জেরে উত্তরবঙ্গের নদীগুলির জলস্তর বেড়ে একটা সময় বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা বাড়ছিল। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস বলছে, উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে এবার ধীরে ধীরে বৃষ্টির পরিমাণ আরও কমে যাবে। যদিও উত্তরবঙ্গের দুই পার্বত্য জেলা দার্জিলিং, কালিম্পঙের পাশাপাশি অন্য জেলাগুলিতে বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।