Advertisment

বিবেক কুমারকে কেন সরতে হল স্বাস্থ্য দফতর থেকে?

এ রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব চরমে। এমন পরিস্থতিতে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
mamata, মমতা

অলঙ্করণ- অভিজিৎ বিশ্বাস

পশ্চিমবঙ্গে স্বাস্থ্যসচিবের পদ থেকে সরানো হল বিবেক কুমারকে। তাঁর স্থলাভিষিক্ত হচ্ছেন নারায়ণ স্বরূপ নিগম। দেশ তথা রাজ্যজুড়ে করোনা সংকটের মধ্যেই মমতা সরকারের এমন সিদ্ধান্ত। এ রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্ব চরমে। এমন পরিস্থতিতে রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। এবং বিবেক কুমারকে সরানোর পিছনে উঠে আসছে দু'টি সম্ভাব্য কারণের কথা।

Advertisment

কেন সরতে হল বিবেক কুমারকে?

শীর্ষ আমলাদের বিভিন্ন দফতরে রদবদল প্রশাসনিক মহলে ঘটেই থাকে। তবু, বিবেক কুমারকে সরানোর পিছনে দু'টি কারণের কথা উঠে আসছে। প্রথমত, এ রাজ্যে করোনা চিকিৎসা পরিকাঠামোকে কেন্দ্র করে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এই নিয়ে বাংলাকে একাধিক কেন্দ্রীয় প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয়। এর মধ্যেই গত ৩০ এপ্রিল করোনা পরিসংখ্যান নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রককে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের তরফে যে চিঠি পাঠানো হয়েছিল তাতে তথ্যগত গরমিল প্রকাশ্যে আসে। দেখা যায়, রাজ্যের করোনা আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্য়া যা কেন্দ্রকে রিপোর্ট করা হচ্ছে, তা রাজ্যের বুলেটিনে প্রকাশ করা হচ্ছে না। এই গরমিল কেন? মুখ্যসচিবের কাছে তা চিঠি লিখে জানতে চান বাংলায় আসা আন্তঃমন্ত্রক কেন্দ্রীয় দলের প্রধান অপূর্ব চন্দ্র। উল্লেখ্য, এর পর দু'দিন রাজ্য সরকার করোনা পরিসংখ্যানের কোনও রিপোর্ট প্রকাশ করেনি।

গোটা বিষয়টিতে স্বাস্থ্য দফতরের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তথ্য গোপনের অভিযোগ ওঠে মমতা সরকারের বিরুদ্ধে। রাজ্যের বিরুদ্ধে তথ্য গোপনের অভিযোগে সোচ্চার হন রাজ্যপাল জগদীপ ধরকড়ও। করোনা পরিসংখ্যান প্রকাশে স্বচ্ছতার দাবি জানান তিনি। এই গরমিলের দায় গিয়ে পড়ে রাজ্যের স্বাস্থ্যসচিব বিবেক কুমারের উপর। যদিওগোটা বিষয়টি ধামাচাপা দিতে গিয়ে 'ত্রুটিপূর্ণ রিপোর্টিং সিস্টেম’কেই ঢাল করেন মুখ্যসচিব রাজীব সিনহা। 'ত্রুটিপূর্ণ রিপোর্টিং সিস্টেম’র জন্যই তথ্য এবং পরিসংখ্যান নথিভুক্ত হয়নি বলে জানান তিনি। সম্পূর্ণ বিষয়টি 'অনিচ্ছাকৃত' বলেও ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন মুখ্যসচিব।

আরও পড়ুন- করোনা সংক্রমণের ভয়, সংঘর্ষের আবহ মালদা-হুগলিতে, আটক ৪২

দ্বিতীয়ত, করোনা চিকিৎসায় সুরক্ষা সরঞ্জাম নিয়ে চিকিৎসক,নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ বাড়ছিল বলে জানা যায়। প্রয়োজনীয় পিপিই, মাস্ক পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ জানাচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু, সুরাহা অধরাই থেকে যায়। সুরক্ষা সরঞ্জাম না মেলায় কলকাতা সহ রাজ্যের বেশ কয়েকটি হাসপাতালের নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীরা বিক্ষোভও দেখান। এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে না পারার জন্যও কাঠগড়ায় তোলা হয় স্বাস্থ্য দফতরকে। প্রশাসনির ব্যর্থতার অভিযোগ ওঠে তৃণমূল পরিচালিত রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে।

এইসব কারণে বিরক্ত হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এরপরই মঙ্গলবারের এই রদবদলের সিদ্ধান্ত।

বিবেক কুমারকে স্বাস্থ্য দফতরের সচিবের পদ থেকে সরিয়ে পরিবেশ দফতরের প্রধান সচিব করা হল। এতদিন পরিবেশ দফতরের সচিব পদের দায়িত্বে থাকা প্রভাত কুমার মিশ্রকে পাঠানো হল পরিবহণ দফতরের প্রধান সচিব করে। পরিবহণ দফতরের সচিব নারায়ণ প্রসাদ নিগমকে স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিবের দায়িত্ব দেওয়া হল।

উল্লেখ্য, শুধু বিবেক কুমারই নন, করোনা সংকটের শুরুতেই সরতে হয়েছিল এ রাজ্যের প্রাক্তন খাদ্যসচিব মনোজ আগরওয়ালকেও। রাজ্যব্যাপী গণবন্টন ব্যবস্থায় অনিয়মের অভিযোগের জেরেই তাঁকে সরতে হয়েছিল বলে প্রশাসনিক মহলে গুঞ্জণ।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Mamata Banerjee
Advertisment