Advertisment

পাঁশকুড়ায় জমি রক্ষার প্রতিবাদে স্থানীয়রা, স্মৃতিতে নন্দীগ্রাম

প্রায় ৩০ বিঘা কৃষিজমি ধ্বংস করে বেশি লাভের আশায় বহিরাগত কিছু মানুষ এলাকার কিছু মাতব্বরের মদতে কৃষকদের অমতে মাছ চাষের ঝিল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে অভিযোগ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

উত্তেজিত চাপদার বাসিন্দারা

নন্দীগ্রাম। নামটা শুনলেই মনে পড়ে যায় জমি রক্ষা আন্দোলনের কথা। নন্দীগ্রামের পর সেই জেলার অর্থাৎ পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়ায় ফের মাথা চাড়া দিচ্ছে জমিরক্ষা আন্দোলন। এবং এই আন্দোলনের জেরে রীতিমত উত্তপ্ত পাঁশকুড়া থানার বৃন্দাবনচক পঞ্চায়েতের চাপদা গ্রাম। প্রায় ৩০ বিঘা কৃষিজমি ধ্বংস করে বেশি লাভের আশায় বহিরাগত কিছু মানুষ এলাকার কিছু মাতব্বরের মদতে কৃষকদের অমতে মাছ চাষের ঝিল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন বলে অভিযোগ। যার বিরুদ্ধে বেশ কিছুদিন ধরে সংগঠিত হচ্ছিলেন এলাকার কৃষকরা।

Advertisment

এরই মধ্যে এই কৃষক আন্দোলনের নেতা স্থানীয় চাপদা ঝিল বিরোধী কৃষক সংগ্রাম কমিটির সভাপতি অশোক নায়েকের হোসিয়ারি কারখানায় মঙ্গলবার রাতে আগুন লাগার পর আরও উত্তাল হয়ে ওঠে এলাকা। সংগঠিত কৃষক, মহিলারা মিছিল করে হামলা চালান ঝিল মালিকদের অস্থায়ী তাঁবুতে।পরে খবর পেয়ে পুলিশ এসে সামাল দেয় পরিস্থিতি। পাঁশকুড়া থানার ওসি অজিত কুমার ঝা বলেন, "একটি হোসিয়ারী কারখানায় আগুন লাগার ঘটনাকে ঘিরে চাপদা এলাকায় উত্তেজনা ছিল। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। আমরা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছি।"

publive-image প্রতিবাদ মিছিল

ভাই সুকুমার নায়কের থেকে দু'বছর ধরে কারখানা লিজে নিয়েছিলেন অশোকবাবু। এই ঘটনায় ঝিল মালিকদের বিরুদ্ধে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ জমা করেছেন সুকুমার নায়েক। এই ঘটনা যে দুর্ঘটনা নয়, তা জানাতে সুকুমার তাঁর অভিযোগপত্রে পুলিশকে জানিয়েছেন, পৌষ সংক্রান্তি উপলক্ষে সোমবার থেকে বন্ধ ছিল কারখানা। তাই বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা ছিল পুরো কারখানায়। কোনও দুর্ঘটনা নয়, কারখানা আক্রোশেই পুড়েছে বলে দাবি তাঁর। দাদা অশোকের ঝিল বিরোধী আন্দোলনের জন্যই ঝিল মালিকেরা এই কান্ড ঘটিয়েছেন বলে মনে করেন তিনি।

আরও পড়ুন: মেলা নয়, শিল্প চাই: পথে নামলেন বোলপুরের কৃষকরা

স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকার কিছু মাতব্বর কয়েকজন মাছ চাষির সঙ্গে পরামর্শ করে প্রায় ৩০ বিঘা কৃষিজমিতে ঝিল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছেন। কিন্তু পরিকল্পনা নেওয়ার আগে বিষয়টি নিয়ে এলাকার চাষিদের কোনও মতামত নেওয়া হয়নি। দো-ফসলা ওই জমিতে ধান ও ফুলের চাষ হয়, যার মাধ্যমে প্রচুর চাষি জীবিকা নির্বাহ করেন। কৃষি জমির প্রায় ৩০ বিঘা এলাকা জুড়ে মাছ চাষের ঝিল তৈরির যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, তা অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি কিছুদিন আগে স্থানীয় বিডিও-র কাছে জানিয়েছিলেন চাষিরা। আবেদনের সঙ্গে ৪৮ জন চাষি তাঁদের জমির দাগ নম্বর জমা দিয়েছিলেন বিডিওর টেবিলে। সে আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন অশোকবাবু।

ওদিকে কারখানায় আগুন লাগানোর অভিযোগ গায়ে মাখতে নারাজ ঝিল মালিকরা। অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি তাঁদের। বিশ্বনাথ বর্মণ নামের এক ঝিল মালিক বলেন, "আমাদের খামোকা দোষারোপ করা হচ্ছে। জমি মালিকের অনিচ্ছায় আমরা কীভাবে ঝিল কাটতে পারি? আগুন লাগানোর ঘটনা সঙ্গে কোনোভাবেই আমরা জড়িত নই।" ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রতিনিয়ত দফায় দফায় বিক্ষোভ আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন এলাকাবাসী। যদিও স্থানীয় প্রশাসন বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে বলে জানিয়েছে।

Advertisment