'পথের কাঁটা দূর করিতে চান…'। মনে আছে শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ব্যোমকেশ বক্সীর বিখ্যাত গল্প 'পথের কাঁটা'? বিজ্ঞাপন দিয়ে খুনি পথের কাঁটা নিমেষে সরানোর বন্দোবস্ত করত! সেইরকমই গল্পের মতো বাস্তবেও দেখা মিলল ভাড়াটে খুনির। রীতিমত নিজের ছবি, ফোন নম্বর দিয়ে মানুষ মারার জন্য ‘সুপারি কিলিং’-এর বিজ্ঞাপন। ভিজিটিং কার্ড ছাপিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করে চলছে প্রচার।
Advertisment
ঘটনার খবর জানতে পেরেই ক্যানিংয়ের ধর্মতলা গ্রামে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে মোরসেলিম মোল্লা ওরফে বুলেটকে গ্রেফতার করেছে ক্যানিং থানার পুলিশ। ধৃতের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালিয়ে একটি দেশি বন্দুক ও দু রাউন্ড গুলিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধৃতকে মঙ্গলবার আলিপুর আদালতে তোলা হলে বিচারক সাত দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, বিগত দু তিন ধরেই এলাকার বিভিন্ন সুত্র মারফৎ এই ভিজিটিং কার্ডের খবর মিলছিল। পাশাপাশি সোমবার ক্যানিংয়ের ধর্মতলা এলাকা সহ আশপাশের বেশ কয়েকটি জায়গায় এ সম্পর্কে পোস্টার ও পড়ে। বিষয়টি জানতে পেরেই ক্যানিং থানার বিশেষ তদন্তকারী দল সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জিত চক্রবর্তীর নেতৃত্বে সোমবার দুপুরে হানা দেয় ধর্মতলা গ্রামে। সেখানে তল্লাশি চালিয়ে অভিযুক্ত যুবককে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এর আগেও বেআইনি অস্ত্র পাচারের অভিযোগে গত বছর আগস্ট মাসে গ্রেফতার হয়েছিল এই মোরসেলিম। একবছর আগে ক্যানিংয়ের গোপালপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় পঞ্চায়েত সদস্য সহ তিনজনের খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত রফিকুল সর্দারের ভাগ্নে এই যুবক। ঐ খুনের ঘটনার তদন্তে নেমেও ক্যানিং থানার পুলিশ এই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছিল, কিন্তু সেই সময় নাবালক হওয়ার কারনে জামিন পেয়ে যায় মোরসেলিম।
স্থানীয়দের দাবি, জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর থেকেই কার্যত এলাকার মানুষকে মাঝে মধ্যেই ভয় দেখাতো এই অভিযুক্ত। গত কয়েকদিন ধরে মানুষ খুন করার জন্য সুপারি নেওয়ার বিজ্ঞাপন দিতে শুরু করে সে। পুলিশি জেরায় নিজের অভিযোগ শিকার করেছে অভিযুক্ত। ধৃতের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি ভিজিটিং কার্ডও উদ্ধার হয়েছে।