চলন্ত ট্রেন থেকে যুবককে ধাক্কা মেরে ফেলে দিয়েছিল সহযাত্রী। গত শনিবার হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের কামরায় ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখে শিউরে উঠেছিলেন নেটিজেনরা। এবার সেই ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে গ্রেফতার করল পুলিশ। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, অভিযুক্ত নিজে একজন পুলিশ কনস্টেবল। নিজে আইনের রক্ষক হয়ে এমন গর্হিত অপরাধ কী ভাবে করতে পারলেন তা নিয়ে চিন্তিত কলকাতা পুলিশ।
জানা গিয়েছে, রামপুরহাট থানার পুলিশ ঘটনার পরের দিন নাসির শেখ নামে একজনকে গ্রেফতার করে। তাঁকে জেরা করেই কলকাতা পুলিশের কনস্টেবল মন্টু মণ্ডলের খোঁজ পায় পুলিশ। মঙ্গলবার মির্জা গালিব স্ট্রিটের কাছ থেকে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। একটি গেস্ট হাউসে আত্মগোপন করেছিলেন তিনি। সেখান থেকে তাঁকে রামপুরহাটে নিয়ে গিয়ে আদালতে তোলা হয়। বিচারক অভিযুক্তকে ১৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার চলন্ত হাওড়া-মালদা ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের কামরা থেকে মন্টু মণ্ডল সজল শেখ নামে এক যুবককে ধাক্কা মেরে ফেলে দেন। গোটা ঘটনার ভিডিও করে এক যাত্রী সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করেন। তার পর সেটি ভাইরাল হয়ে যায়। ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান সজল। ভি়ডিওটি করেছিলেন একজন মূক-বধিয় যুবক। তাঁর ভিডিওর সূত্র ধরে রেললাইনের ধার থেকে আহত যুবককে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করে রেল পুলিশ। তিনি এখন রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, জখম যুবকের নাম সজল শেখ। বাড়ি বীরভূমের রামপুরহাট পুরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের সুন্দিপুর এলাকায়। তিনি শনিবার রাতে আপ ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের একটি কোচে সাঁইথিয়া স্টেশন থেকে উঠেছিলেন। তিনি যে বেঁচে আছেন, এখনও সেটা বিশ্বাস করতে পারছেন না সজল।
আরও পড়ুন বচসার জেরে চলন্ত ট্রেন থেকে ধাক্কা সহযাত্রীর, বীরভূমে গুরুতর জখম যুবক ভর্তি হাসপাতালে
জখম ওই যুবক জানিয়েছেন, ‘সাঁইথিয়া থেকে ওঠার পর মল্লারপুর স্টেশনে নেমেছিলাম। সেখানে মদ্যপান করে ফের ট্রেনে উঠি। এনিয়ে কোচে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে আমার বচসা হয়। তার মধ্যে একজন যাত্রী আমাকে মারধর করে। আমিও পালটা ওই যাত্রীকে মারার জন্য পকেট থেকে ব্লেড বের করি। তখন ওই যাত্রী আমাকে চলন্ত ট্রেন থেকে খোলা দরজা দিয়ে ফেলে দেয়। যখন জ্ঞান ফিরল দেখি রেললাইনে পড়ে আছি। নিজে ওঠার ক্ষমতা ছিল না। পরে রেল পুলিশ আমাকে তুলে নিয়ে গিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেছে।’