Advertisment

সাগরে হ্যাম রেডিও'র যুগান্তকারী উদ্যোগ, মুহূর্তেই হারিয়ে যাওয়া মানুষের ছবি ফুটে উঠবে স্ক্রিনে

হারিয়ে যাওয়া মানুষজনদের নিয়মিত বাড়ি পাঠাচ্ছে হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব।

author-image
Sayan Sarkar
New Update
ham radio, sagar

যুগান্তকারী উদ্যোগ হ্যাম রেডিও'র।

নাম, পরিচয়, কিছুই জানা ছিল না ভরতি ছিলেন বাংলার হাসপাতালে। অবশেষে হ্যাম রেডিওর সাহায্যে ভিন রাজ্যে বাড়িতে ফিরলেন প্রৌঢ়। এমন অসংখ্যা ঘটনা সংবাদ শিরোনামে জায়গা করে নেয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগ হোক বা বড় কোন ইভেন্ট হ্যাম রেডিওর বিকল্প নেই। হ্যাম রেডিও ওয়াকিটকির মতো এক বিশেষ ওয়্যারলেস ব্যবস্থা। জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগের জন্য এই রেডিও কোনও বিশেষ এলাকাতেই কাজ করে। হ্যাম রেডিওর ফ্রিকোয়েন্সি সুনির্দিষ্ট। তবে এর বিশেষ সুবিধা হল এর মাধ্যমে পৃথিবীজুড়েই অন্য সব লাইসেন্সধারীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়।

Advertisment

হাম রেডিও বা অ্যামেচার রেডিও এমন এক প্রযুক্তি যা ব্যবহার করা হয় বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয় কিংবা আপৎকালীন পরিস্থিতির মোকাবেলা করতে। মূলত বন্যা বা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতি যেখানে সমস্ত নেটওয়ার্কিং সিস্টেম বন্ধ হয়ে যায় সেখানেই কাজে আসে এই হ্যাম রেডিও। এবার গঙ্গাসাগরে রেকর্ড ভিড়ে নয়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে হ্যাম রেডিও। মুহূর্তেই স্বজনদের তাদের পরিবারের কাছে ফেরাতে বিরাট উদ্যোগ হাতে নিয়েছে হ্যাম রেডিও।

প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যেই সতর্ক করা হয়েছে চলতি বছর গঙ্গাসাগর মেলায় রেকর্ড ভিড় হতে চলেছে। পরিসংখ্যান বলছে এ' বছর দূর্গা পূজো থেকে কালীপূজো সবেতেই মাত্রা অতিরিক্ত ভিড় চোখে পড়ে পুজো প্যান্ডেল গুলিতে। সেকথা মাথায় রেখেই অভিনব এই ধারণা নিয়ে এসেছে ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সদস্যরা। শুধু রাজ্য নয়, ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে সামাজিক ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলিতে ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতন। সেই আশঙ্কা থেকেই গঙ্গাসাগর মেলায় রেকর্ড সংখ্যক মানুষ ভিড় জমাবেন বলেই ধারণা প্রশাসনের।

এ প্রসঙ্গে হ্যাম রেডিও ক্লাবের সম্পাদক অম্বরিশ নাগ বিশ্বাস বলেন, 'মেলা মানেই একদিকে যেমন ভিড়। তেমনই ভিড়ে হারিয়ে যাওয়ার ঘটনাও বাড়ছে দিনে দিনে। পাশাপাশি মেলায় প্রবল ঠাণ্ডায় অসুস্থ হয়ে পড়ার মত ঘটনাও ঘটছে। এসবের মাঝেই গত ৩০ বছরের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে হারানো মানুষকে আরও দ্রুত তার পরিবারের কাছে পৌঁছে দিতে myham.in পোর্টালের মাধ্যমে দ্রুততার সঙ্গে তুলে ধরা হবে মেলায় হারিয়ে যাওয়া বা অসুস্থ মানুষের ছবি'।

এখন প্রশ্ন এই ধরণের উদ্যোগ কী কাজে আসবে? সেপ্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ সাগরে ভিড় জমান। অনেকেরই ভাষা ঠিক বুঝে উঠতে পারেনা সাগরে কর্মরত পুলিশ কর্মচারী অথবা এনজিওর স্বেচ্ছাসেবকরা। তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরের অ্যানাউন্সমেন্টের সেই মাইক এগিয়ে দেওয়া হয় পূণ্যার্থির হাতে। অনেক ক্ষেত্রে হারিয়ে যাওয়া মানুষ প্রায়ই ঘোষক হয়ে ওঠেন। তাঁর সেই কন্ঠস্বর কী আদৈও পৌঁছালো স্বজনদের কাছে? এমন অনেক প্রশ্নের ভিড়ে ৩০ বছর আগে পথ চলা শুরু হ্যাম রেডিওর। ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সদস্যদের তৎপরতায় অনেকে স্বজনহারা মানুষজন ফিরে গিয়েছেন পরিবারের কাছে। এছাড়াও অসুস্থ হয়ে পড়া পূণ্যার্থিরা, যারা নিজের নামটুকু বলতে পারছেন না। যে সব ক্ষেত্রে অসহায়ের ঠিকানা খুঁজতে কালঘাম ছোটে প্রশাসনের ঠিক তেমন মানুষদের ছবি পাওয়া যাবে দ্রুততার সঙ্গে এই ওয়েবসাইটে' ।

পোর্টালটি তৈরি করেছেন ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাবের সদস্যরাই। ক্লাবের এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাশাসক সুমিত গুপ্ত সহ সকলেই। হারিয়ে যাওয়া মানুষজনদের নিয়মিত বাড়ি পাঠাচ্ছে হ্যাম রেডিওর ওয়েস্ট বেঙ্গল রেডিও ক্লাব। এবার এই পোর্টালের মাধ্যমে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রদেশ থেকে আসা বিভিন্ন ভাষাভাষীর মানুষের পরিবারের লোকেরা তার পরিবারের লোক সাগরে পড়ে আছে কিনা জানতে পারবেন l

Ham Radio
Advertisment