নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় যত দলের নেতা-কর্মী গ্রেফতার হচ্ছেন, ততই দুর্নীতি থেকে নিজেদের সরাচ্ছে তৃণমূল। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়, তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের দুটি ফ্ল্যাট থেকে কোটি কোটি নগদ টাকা, হিরে ও সোনার গয়না উদ্ধার হওয়ার ৬ দিনের মাথায় প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে দল থেকে সাসপেন্ড করে তৃণমূল। মন্ত্রিসভা থেকেও অপসারিত হন। মঙ্গলবার ফের পার্থকে নিয়ে মুখ খুললেন ফিরহাদ। রাজ্যের মন্ত্রীর মন্তব্য ঘিরে শোরগোল।
নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে বরাবরই দলীয় বার্তাই তুলে ধরেছেন ফিরহাদ। একবারও পার্থ-মানিকের পাশে দাঁড়াননি। এদিন জেল হেফাজত শেষে পার্থ-অর্পিতা এবং মানিকদের ফের আদালতে পেশ করবে ইডি। এঁদের মধ্যে পার্থ-অর্পিতাকে ভার্চুয়ালি পেশ করা হবে। আর এদিনই পার্থকে নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য করলেন ফিরহাদ। তিনি বলেন, "টাকার বিনিময়ে চাকরি, আমাদের সবার কাছে লজ্জার। এই পার্থদাকে আমি চিনতাম না। এই পার্থদা আমার কাছে নতুন। স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি কেউ টাকা নিয়ে চাকরি দেবে। কারও অধিকার হরণ করে চাকরি দেওয়া অন্যায়, পাপ।"
তৃণমূল পার্থকে সাসপেন্ড করলেও পার্থ বরাবর দাবি করেছেন তিনি তৃণমূলেই আছেন। এ প্রসঙ্গে ফিরহাদকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "দলে কে থাকবেন আর কে থাকবেন না, তা ঠিক করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বিষয়ে দলে আর কোনও পৃথক আলোচনা হয়নি। কাউকে বিশ্বাস করাটা ভুল নয়। কাউকে বিশ্বাস করাটা অন্যায় নয়। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন। ঠকেছেন। আমাদের এত বড় সংগঠন বিশ্বাসের উপরেই চলে। আমরা সবাই আজীবন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ছিলাম। তিনি নিজে কোনও অন্যায় করতে পারেননি এবং কোনও অন্যায়কে প্রশ্রয়ও দেন না। চাঁদের গায়ে কলঙ্ক থাকতে পারে কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে কোনও আঁচড় নেই, কলঙ্ক নেই।"
আরও পড়ুন শান্তনুর ফোন যেন সোনার খনি! বিস্ফোরক সব নাম রয়েছে, আদালতে বোমা ফাটালেন ED-র আইনজীবী
এদিকে এদিন চেতলায় নিজের পাড়ায় ৮২ নম্বর ওয়ার্ডের একটি স্কুলে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে যান মন্ত্রী। তখন তাঁকে রাজ্যের শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়। পড়ুয়াদের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন করা হলে ফিরহাদ বলেন, "আমি জানি না ঠিক কী হয়েছে! সত্যি সত্যি যদি টাকা নিয়ে চাকরি হয় তাহলে এটা আমাদের কাছে লজ্জার।"
পার্থ এবং কুন্তলদের গ্রেফতারি নিয়ে ফিরহাদ বলেন, "যতক্ষণ না অভিযোগ প্রমাণিত হচ্ছে ততক্ষণ এই বিষয়ে কিছু বলা উচিত নয়। সংবাদমাধ্যমের তদন্ত এক জিনিস। আর আদালতে চার্জশিট দিয়ে দোষ প্রমাণিত হওয়া অন্য বিষয়। যতদিন না দোষ প্রমাণিত হচ্ছে, ততদিন বিষয়টি বিচারাধীন বলাই ভাল।"