কুলগ্রামে জঙ্গিদের গুলিতে নিহত বাংলার পাঁচ শ্রমিক। তারপর থেকেই আতঙ্কে দিন কাটছে কাশ্মীরে কর্মরত বাংলার শ্রমিকদের। উৎকণ্ঠায় তাদের পরিবারও। আগেই এনিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার ইকো পার্কে এক অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী জানান, উপত্যকায় কর্মরত ১৩১ জন শ্রমিককে ফিরিয়ে আনা হচ্ছে রাজ্যে। রাজ্য সরকারের উদ্যোগেই হচ্ছে এই কাজ।
সাংবাদিকদের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'প্রশাসন খোঁজ খবর নিয়েছে। এখনও পর্যন্ত জানা গিয়েছে এরাজ্যের মুর্শিদাবাদ, মালদা ও দিনাজপুর থেকে ১৩১ জন মানুষ কাজ করতে বর্তমানে কাশ্মীরে রয়েছেন। তাদের রাজ্য সরকারের উদ্যোগে ফিরিয়ে আনা হবে।' ইতিমধ্যেই সরকারের দুই আমলা কাশ্মীরে পৌঁছে গিয়েছেন। ট্রেনে করে ওই শ্রমিকদের ফিরিয়ে আনা হবে। এছাড়া, এই প্রক্রিয়া মসৃণ করতে রাজ্য থেকে কাশ্মীরে পুলিশ পাঠানোর কথা বিবেচনা করছে নবান্ন। ১৩১ জনের বাইরেও এরাজ্যের কোনও শ্রমিক সেখান থেকে বাংলায় ফিরতে চাইলে তাদেরও নিয়ে আসা হবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দক্ষিণ কাশ্মীরের কুলগামে পাঁচজন বাঙালি শ্রমিককে গুলি করে হত্যা করে জঙ্গিরা। আপেল বাগানে এরা শ্রমিকের কাজ করতেন। কুলগামের কাতরাসু গ্রামে যে ভাড়া বাড়িতে থাকতেন মুর্শিদাবাদের এই শ্রমিকরা সেখানে হানা দেয় সশস্ত্র জঙ্গিরা। এরপর তাদের বাড়ি থেকে বের করে জঙ্গির দল। প্রায় ২০০ মিটার দূরে গিয়ে শ্রমিকদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি চালায় জঙ্গিরা। ঘটনাস্থলেই মৃত্য হয় পাঁচ জনের।
এরপরই কেন্দ্রের উপর দোষ চাপিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, 'এটা পূর্ব পরিকল্পিত হামলা। ইউরোপীয় প্রতিনিধি দল যখন কাশ্মীরে গেল, তখনই এই ধরনের হামলা হয় কীভাবে?' এছাড়াও জম্মু-কাশ্মীরের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মনে করিয়ে দিয়েছিলেন, 'কাশ্মীরের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব কেন্দ্রের।'
কাশ্মীর জঙ্গিহানায় নিহত সাগরদিঘির বাহালনগর গ্রামের পাঁচ শ্রমিকের বাড়িতে গিয়ে সমবেদনা জানান মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী। নিহতদের পরিবারের হাতে পাঁচ লক্ষ টাকা করে সহায়তাও করা হয়।