রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের মধ্যে সংঘাতের আবহে স্বাধীনতা দিবসের দিন রাজভবনে গেলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সূত্রের খবর, রাজ্যের সার্বিক প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি দুজনের কেউই। করোনা আবহে এবারে রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের আয়োজন ছিল একেবারে অন্যরকম। সকলের মুখে মাস্ক। নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান। বিজেপি কর্মী খুন হুগলির খানাকুলে। উত্তেজনা, আগুন, ভাঙচুর, পথ অবরোধ। এদিকে দুর্গাপুরে মাঠের দখলকে কেন্দ্র করে দু'পাড়ার মধ্যে সংঘর্ষ।
আমলাদের সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে মুখ্যমন্ত্রী
গত একবছর রাজ্য সরকার ও রাজ্যপালের মধ্যে অধিকাংশ সময় কেটেছে সংঘাতের আবহে। মন্তব্য পাল্টা মন্তব্য, অভিযোগ পাল্টা জবাব। এসবই দেখতে অভ্যস্ত রাজ্যবাসী। স্বাধীনতা দিবসের দিনও সেই ধারা অব্যাহত থাকল। পাশাপাশি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকরের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিন রাজভবনে সচিবদের নিয়ে হঠাৎ হাজির হয়ে যান মুখ্যমন্ত্রী। বেশ কিছুক্ষণ আড্ডার মুডে কাটান রাজ্যপালের সঙ্গে। সূত্রের খবর, রাজ্যের সার্বিক প্রশাসনিক পরিস্থিতি নিয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। তবে এ বিষয়ে মুখ খোলেননি দুজনের কেউই।
স্বাধীনতা দিবসেও রাজ্যকে খোঁচা মারতে ছাড়েননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনকর। তিনি বলেছেন, "হিংসামুক্ত ভোট করে নজির তৈরি করুক রাজ্য।" এর বিরোধিতা করে প্রতিক্রিয়া দিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। তিনি বলেছেন, "উনি বোধহয় বিজেপি শাসিত রাজ্যের কথা বলছেন।" তার মধ্যে রেড রোডে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানের পর সোজা রাজভবনে যান মুখ্যমন্ত্রী।
স্বাধীনতা দিবসের দিন বিকেলে রাজভবনে রাজ্যপালের চা চক্রের অনুষ্ঠানে বিশিষ্টরা আমন্ত্রিত থাকেন। প্রথা অনুযায়ী এই চা চক্রের আসর হয়ে আসছে। সাধারণত সেই অনুষ্ঠানে হাজির থাকেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। এদিন রেড রোড থেকে সচিবদের সঙ্গে নিয়ে রাজভবনে পৌঁছান মুখ্যমন্ত্রী। সেখানে বেশ কিছুক্ষণ সময় কাটান। রাজভবন থেকে বেরিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "রাজভবনে বিকেলে একটা চা চক্রের অনুষ্ঠান হয়। বিকেলে আসতে পারব না। আমার সঙ্গে মুখ্যসচিব রাজীবা সিনহা, স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা, ডিজি বীরেন্দ্র ছিলেন। পাঁচজন মিলে আড্ডা মেরে গেলাম। স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছাও জানালাম।"
আজ রাজ্যের অন্যান্য খবরগুলি পড়ুন নীচে
রেড রোডে ২৫ করোনা যোদ্ধাকে সম্মান রাজ্যের
সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানের মাধ্যমে রেড রোডে পালিত হল স্বাধীনতা দিবস। পতাকা উত্তোলন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। করোনা আবহে এবারে আয়োজন ছিল একেবারে অন্যরকম। হাজির সকলের মুখে মাস্ক। নির্দিষ্ট দূরত্বে অবস্থান। এদিন রেড রোডে চিকিৎসক, পুলিশ সহ ২৫ জন করোনা যোদ্ধাকে সম্মান জানানো হয়। বিভিন্ন সরকারি দফতরের কয়েকটি ট্যাবলো প্রদর্শিত হয়েছে। এদিন নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও পুলিশ স্মারকেও শ্রদ্ধা জানান মুখ্যমন্ত্রী। বিভিন্ন জেলায় প্রশাসনিক স্তরেও কোভিড যোদ্ধাদের সম্মান জানানো হয়েছে।
আজ রাজ্যের অন্যান্য খবরগুলি পড়ুন নীচে
হুগলির খানাকুলে 'খুন' বিজেপি কর্মী, উত্তেজনা
জাতীয় পতাকা তোলাকে কেন্দ্র করে হুগলির খানাকুলে তৃণমূল ও বিজেপি সংঘর্ষে মৃত্যু হল বিজেপি কর্মীর। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূলের আক্রমণে খুন হয়েছেন খানাকুলের ২৪৬ নম্বর বুথের কার্যকর্তা সুদর্শন প্রামানিক। এই ঘটনায় মন্ডল সাধারণ সম্পাদক স্মরজিৎ সামন্ত গুরুতর জখম হয়েছেন। যদিও অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। এই ঘটনায় খানাকুলে উত্তজেনা ছড়িয়েছে। এলাকায় বিশাল পুলিশ বাহিনী টহল দিচ্ছে। বেশ কয়েকজনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনার পর উত্তেজিত জনতা বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে। পথ অবরোধ করেছে বিজেপি কর্মী-সমর্থকরা। ঘটনাস্থলে গিয়েছেন বিজেপির দুই সাংসদ সৌমিত্র খাঁ ও জ্যোতির্ময় সিংহ মাহাত।
প্রতিবেদনটি বিস্তারিত পড়ুন- বিজেপি কর্মী ‘খুন’, রবিবার খানাকুল বনধের ডাক
আজ রাজ্যের অন্যান্য খবরগুলি পড়ুন নীচে
দুর্গাপুরে মাঠের দখল নিয়ে সংঘর্ষ, জখম ২০
খেলার মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে রণক্ষেত্রের চেহারা নিল দুর্গাপুরের নডিহা। কার দখলে থাকবে মাঠ পশ্চিম বর্ধমানের নডিহা না বাঁকুড়ার মানার বাসিন্দাদের, মূলত এই নিয়েই বিবাদ দুই গ্রামের বাসিন্দাদের মধ্যে। স্বাধীনতা দিবসে মাঠের দখল নিয়ে দুই গ্রামের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ বেধে যায়। জখম হয় দুই গ্রামের প্রায় ২০ জন। ঘটনাস্থলে ছুটে যায় বড়জোড়া থানার পুলিশ। আপাতত মাঠে খেলাধুলা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুলিশ-প্রশাসন।
বড়জোড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য বিজয় রায় বলেন, "সকাল আটটা সাড়ে আটটার সময় তরবারি, লাঠি নিয়ে মাঠ দখল করতে এসেছিল নডিহার লোক। এটা বাঁকুড়ার মাঠ। ওরা মহিলা, বাচ্চাদেরও মারধর করেছে। আমাদের মাঠ ফেরত চাই।" মাঠের দখল ছাড়তে নারাজ নডিহার বাসিন্দারাও। নডিহার বাসিন্দা রাজ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, "আমারা এই মাঠে দীর্ঘকাল ধরে খেলে আসছি। কাল পুলিশ এসে বলে যায় দুপক্ষ কেউ খেলবে না। আজ সকালে এসে দেখি ওরা মাঠে খেলছে। কেন খলছে জিজ্ঞেস করতেই মারতে শুরু করে আমাদের লোকজনকে। আমাদের অনেকে জখম হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।"
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন