এই রাজ্যের পুলিশ তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাস হয়ে গেছে বলে বিরোধীরা অভিযোগ করে আসছেন। সেই অভিযোগের পক্ষেই এবার যেন সিলমোহর দিয়ে ফেললেন বর্ধমানের এক পুলিশ আধিকারিক। ইউনিফর্ম পরে ডিউটিরত অবস্থায় তৃণমূল কংগ্রেসের একটি কর্মসূচিতে সংবর্ধনা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে। যাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ উঠেছে তিনি হলেন বর্ধমান গোলাপবাগ ট্রাফিক পোস্টের ও.সি বিশ্বনাথ পাইন। এই সংক্রান্ত ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই জেলার রাজনীতিতে শোরগোল পড়ে গিয়েছে।
ঘটনা জানার পর পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তারাও নড়ে চড়ে বসেছেন। পূর্ব বর্ধমান জেলা পুলিশ সুপার কামনাশিষ সেন জানিয়েছেন, ’ওই ট্রাফিক ওসিকে ইতিমধ্যেই শো-কজ করা হয়েছে’। যদিও ট্রাফিক ওসি তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করেননি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস ও খাগড়াগড় যুব সংঘ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বর্ধমানের খাগড়াগড় এলাকায় মশারি বিতরণ কর্মসূচির আয়োজন করে। সেই কর্মসূচিতে বর্ধমানের তৃণমূল বিধায়ক খোকন দাস, জেলা যুব তৃণমূল কংগ্রেসের সভাপতি রাসবিহারী হালদার-সহ অন্যান্য দলীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া ভিডিওয় দাবি করা করা হয়েছে,ওই কর্মসূচিতেই ট্রাফিক ওসি বিশ্বনাথ পাইনকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। সংবর্ধনা নেওয়ার সময়ে বিশ্বনাথ পান পুলিশ ইউনিফর্মে ছিলেন বলেও
দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন ‘ঠিকমতো পড়াতে পারতেন না’, ভুয়ো শিক্ষিকা রিংকুর থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে খুশি পড়ুয়ারা
এদিকে এই ভিডিও ভাইরাল হতেই প্রতিবাদে সোচ্চার হয়েছে বিরোধীরা। বিজেপির জেলা সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র জানিয়েছেন,
“এই রাজ্যের পুলিশ মমতা পুলিশে পরিণত হয়ে গিয়েছে। পুলিশ এখন তৃণমূল কংগ্রেসের দলদাসে পরিণত হয়েছে। আর এই অভিযোগ যে অমূলক নয় সেটা বৃহস্পতিবার প্রমাণ করে দিয়েছেন বর্ধমানের ট্রাফিক ওসি।“ ওই পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া দাবি করেছেন বিজেপি নেতা মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র।
অন্যদিকে জেলা যুব কংগ্রেস সভাপতি গৌরব সমাদ্দারের বক্তব্য, এখন যেন এই রাজ্যে পুলিশের পোশাকের নিচে তৃণমূলর পতাকা রয়েছে। পুলিশের এমন কাজ নিয়মের বাইরে। তবুও পুলিশের কেউ সেইসব নিয়ম কানুনের কোনও তোয়াক্কাই এখন করছে না। যদিও জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস জানান, বৃহস্পতিবার একটা ক্লাবের কর্মসূচি। কোনও দলীয় কর্মসূচিতে সরকারি কোওন আধিকারিক যেতে পারেন না ঠিকই। তবে প্রকৃত কী ঘটনা ঘটেছে সেটা আমার কাছে এখনও পরিস্কার নয়। সবিস্তার খোঁজ নিয়ে দেখবেন বলে প্রসেনজিৎ দাস জানিয়েছেন।
আর পুলিশ আধিকারিক বিশ্বনাথ পাইনের এই বিষয়ে বক্তব্য, ওটা একটা ক্লাবের কর্মসূচি ছিল বলেই তিনি জানতেন। তিনি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ওখানে ছিলেন। সেইসময় তাঁকে অনুরোধ করা হলে সামান্য সময়ের জন্য তিনি সেখানে ছিলেন।