এ যেন চার মনের রাজযোটক। শাস্ত্রজ্ঞানীরা মনে করেন কেবলমাত্র রাশির মিল হলেই যে সেই বিবাহ রাজযোটক,তা নয়। এই ক্ষেত্রে পাত্র ও পাত্রী দু’জনেরই মানসিক মিলনকেই প্রথম প্রাধান্য দেওয়া হয়। আর ঠিক যেন সেই মনের মিলকেই প্রাধান্য দিয়ে সাতপাক ঘুরে যমজ দুই বোন মালা দিলেন দুই যমজ ভাইয়ের গলায়। ছাদনাতলায় এই দুই নব দম্পতির আট হাত এক করালেন পুরোহিত। নজিরবিহীন এমন বিবাহের সাক্ষী ছিলেন পূর্ব বর্ধমানের ভাতারের কুড়মুন গ্রামের বাসিন্দারা। সোশ্যাল মিডিয়ায় এই বিয়ের ছবি দেখে মুগ্ধ নেটিজেনরা। তাঁরা সবাই এই দুই নবদম্পতিকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
কুড়মুনের যমজ ভাইয়েদের বিয়ের কার্ডেও অভিনবত্ব ধরা পড়ছে। কার্ডে দেওয়া বর্ণনা অনুযায়ী পাত্ররা হলেন লব পাকড়ে ও কুশ পাকড়ে। আর পাত্রীরা হলেন যমজ দুই কন্যা অর্পিতা সাঁতরা ও পারমিতা সাঁতরা। তাঁদের বাড়ি ভাতারের সোতখালি গ্রামে। গত রবিবার লব সিঁদুর পরিয়েছেন অর্পিতার সিঁথিতে। আর কুশ পারমিতার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়েছেন। মঙ্গলবার হয় তাঁদের বউভাতের অনুষ্ঠান। এই বিয়ে প্রেম ভালবাসা করে নয় বলেই বিয়েতে আমন্ত্রিত থাকা অতিথিদের কথায় জানা গিয়েছে। কিন্তু তা না হয় হল। তবে যমজ দুই ভাইয়ের জন্য যমজ পাত্রীকেই খুঁজে বের করা সম্ভব হল কী ভাবে?
এই প্রসঙ্গে পাত্রপক্ষের বক্তব্য ,এটাকেই হয়তো রাজযোটক বলে। ঘটক মহাশয়ের দৌলতেই নাকি এমন অসাধ্য সাধন সম্ভব হয়েছে বলে দাবি করেছেন বিয়ে বাড়িতে আমন্ত্রিত এক স্থানীয় বাসিন্দা। আর পরিবার সদস্যদের কথায় দুই যমজ বোন অর্পিতা ও পারমিতা ছোট থেকেই এক সঙ্গে থাকা পছন্দ করে। তাঁরা একে অপরকে ছাড়তে রাজি নয়। তা দেখে তাঁদের অভিভাবকরা ভেবে রেখেছিলেন,বিয়ে দিলে একই বাড়ির পাত্রদের সঙ্গেই দুই মেয়ের বিয়ে দেবেন। ভাগ্য সহায় থাকায় পাত্রীদের অভিভাবকদের ভাবনাই সার্থক রূপ পেল।
আরও পড়ুন সরকারি প্রকল্পে বাড়ি পাইয়ে দেওয়ার টোপ, আঙুলের ছাপে সাফ অ্যাকাউন্ট, ধৃত ২
শুধু এক বাড়ির ছেলে নয়,কাকতালীয় ভাবে পাত্ররাও যমজ। অনেকে মজা করে বলছেন,বিবাহিত জীবনে কে কার বউ তা চিনতে অসুবিধা হবে না তো! তা নিয়ে অবশ্য কেউই ভাবিত নয়। সেটা বোঝার বিশেষ ব্যবস্থাও নাকি দম্পতিরা সেরে রেখেছেন। বিয়ে বাড়িতে আমন্ত্রিত অতিথিরা সকলেই মনে করছেন বিধির বিধানেই হয়তো এই অসামান্য রাজযোটকের সমাপতন সম্ভব হল ।