West Bengal’s Role in India’s Independence: ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলন আর পশ্চিমবঙ্গের নাম মিলেমিশে আছে। এই আন্দোলনে পশ্চিমবঙ্গই ছিল কেন্দ্রস্থল। যার কারণে বাধ্য হয়ে ব্রিটিশরা কলকাতা থেকে দেশের রাজধানী দিল্লিতে সরিয়ে নিতে বাধ্য হয়েছিল।
ভারতের স্বাধীনতায় পশ্চিমবঙ্গের ভূমিকা
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে পশ্চিমবঙ্গের ভূমিকা অপরিসীম। বিংশ শতকের গোড়ার দিকে, বাংলা ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল ছিল। পাশাপাশি বাঙালি নবজাগরণের বা রেনেসাঁর কেন্দ্রস্থলও হয়ে উঠেছিল। এই বিংশ শতাব্দীতেই স্বদেশী আন্দোলনের প্রেক্ষিতে বাংলায় বিপ্লবী জাতীয়তাবাদ এক শক্তিশালী রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে পশ্চিমবঙ্গের অতি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা
সন্ন্যাসী বিদ্রোহ
১৭৬৩ থেকে ১৮০০ সাল পর্যন্ত আমরা বাংলায় সন্ন্যাসী বিদ্রোহ প্রত্যক্ষ করেছি। এটি মূলত একটি কৃষক বিদ্রোহ ছিল। এই বিদ্রোহ ঢাকা (বর্তমানে বাংলাদেশের রাজধানী) থেকে শুরু হয়েছিল এবং বিহার পর্যন্ত ছড়িয়েছিল। বিদ্রোহীদের সংখ্যা বেড়ে হয়েছিল ৫০ হাজার। বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এই বিদ্রোহের আদর্শেই লিখেছিলেন জাতীয়তাবাদী 'আনন্দমঠ' উপন্যাস এবং সেই উপন্যাসের 'বন্দে মাতরম' কবিতাটি।
নীল বিদ্রোহ
নীলকরদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কৃষক এবং লাঠিয়ালদের সহায়তায় এই বিদ্রোহ বাংলা তথা জাতীয় রাজনীতিতে মারাত্মক প্রভাব ফেলেছিল। 'নীল দর্পণ' নাটক এবং গদ্য ও কবিতায় এই বিদ্রোহের কথা উঠে এসেছে। এই বিদ্রোহ বাংলার রাজনৈতিক চেতনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিল। পরবর্তীতে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামকেও এই বিদ্রোহ প্রভাবিত করেছিল।
অনুশীলন সমিতি এবং যুগান্তর সমিতি
ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের যুগে অনুশীলন সমিতি এবং যুগান্তর সমিতি গড়ে ওঠে। যারা, আন্দোলনকারীদের সহিংস আন্দোলনের পথে চালিত করেছিল। আন্দোলনকারীদের অস্ত্র জোগান দিত। তাদের অস্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দিত। এই সমিতিদের হাত ধরেই ক্ষুদিরাম বসু থেকে চট্টগ্রামের সূর্য সেন, বাঘাযতীন থেকে নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু পর্যন্ত গোটা দেশে বিপ্লবীরা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন। চালিত হয়েছিলেন। যা কার্যত ছিল ধারাবাহিক সশস্ত্র লড়াই।
আরও পড়ুন- আচমকা ক্ষুদ্রঋণের জন্ম দিলেন কেন? পিছনে বিরাট গল্প, ইউনুসের কাহিনি শুনলে অবাক হবেন
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে পশ্চিমবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব
মঙ্গল পাণ্ডে- ১৮৫৭ সালের সিপাহি বিদ্রোহের সূচনা হয়েছিল মঙ্গল পাণ্ডের মাধ্যমেই।
বাঘা যতীন- বিপ্লবীদের অস্ত্র প্রশিক্ষণ দিতেন, বিপ্লবীদের অস্ত্র জোগাতেন।
বিনয়, বাদল, দীনেশ- অস্ত্র হাতে রাইটার্স বিল্ডিং আক্রমণ করেছিলেন।
সূর্য সেন- সশস্ত্র বাহিনী তৈরি করে চট্টগ্রামে ইংরেজদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিলেন।
চিত্তরঞ্জন দাস- বাংলার অসহযোগ আন্দোলনের নেতা এবং স্বরাজ পার্টির প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।
রাসবিহারী বসু- গোটা দেশে এবং বিদেশ থেকে ভারতীয় সশস্ত্র আন্দোলন পরিচালনা করতেন।
ভারতের জাতীয় সেনাবাহিনী গড়ে তুলেছিলেন।
সুভাষচন্দ্র বসু- দুবার ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের সভাপতি হন। রাসবিহারী বসুর হাত থেকে ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলেন।