অন্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গে করোনা পরীক্ষা অনেকটাই কম হচ্ছে বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠছে। একই সঙ্গে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর চাইছে কোভিড-১৯ পরীক্ষা আরও বেশি করা হোক। এ মুহূর্তে সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১৩টি কেন্দ্রে পরীক্ষার উদ্য়োগ নেওয়া হচ্ছে। এখন রাজ্য়ে আইসিএমআর-এর অনুমতি রয়েছে সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে আট কেন্দ্রে। রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, শীঘ্রই মালদা ও মুর্শিদাবাদে করোনা পরীক্ষা শুরু হবে। আর সে জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে ওই দুই জেলার দুই মেডিক্যাল কলেজ। উল্লেখ্য, রাজ্যের এই দুই জেলায় পরিযায়ী শ্রমিকের আধিক্য অন্য জেলাগুলির তুলনায় অনেক বেশি।
এদিকে, করোনা পরীক্ষা করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠছে রাজনৈতিক মহল এবং চিকিৎসকদের একাংশ থেকে। তাঁদের দাবি, লকডাউন পরিস্থিতিতে একমাত্র ব্য়াপক টেস্টিং করলেই করোনা লড়াইতে রাজ্য় সুবিধাজনক অবস্থায় থাকতে পারে। বৃহস্পতিবার সরকারি বুলেটিনের তথ্য় অনুযায়ী রাজ্য়ে মোট ৩,৮১১ জনের কোভিড-১৯ টেস্ট করা হয়েছে। সূত্রের খবর, এই অবস্থায় রাজ্য়ে আরও টেস্টিং সেন্টারের অনুমতি দিতে চলেছে আইসিএমআর। স্বাস্থ্য় ভবন সূত্রে খবর, মালদা ও মুর্শিদাবাদেও চলতি সপ্তাহে কোভিড-১৯ পরীক্ষা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রথমে বাংলায় একমাত্র নাইসেড-এর করোনা পরীক্ষা করার অনুমতি ছিল। এরপর দ্বিতীয় পরীক্ষা কেন্দ্র হিসাবে অনুমতি পায় এসএসকেএম। পরবর্তীতে স্কুল অব ট্রপিক্য়াল মেডিসিন, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে করোনা পরীক্ষা শুরু হয়। আগেই বেসরকারি হাসপাতাল হিসাবে অ্যাপোলো ও টাটা মেডিক্যাল সেন্টারকে অনুমতি দিয়েছিল আইসিএমআর। স্বাস্থ্য ভবন জানিয়েছিল, রাজ্যের আরও কিছু বেসরকারি সংস্থা করোনা পরীক্ষার জন্য অনুমতি চেয়েছে। এবার সেই আবেদনের মধ্যে থেকে ডা. লাল প্য়াথল্য়াব অনুমতি পেয়েছে করোনা পরীক্ষার জন্য়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, আরও তিনটে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কোভিড-১৯ পরীক্ষার অনুমতি চেয়েছে আইসিএমআর-এর কাছে। আমরি (সল্টলেক), সুরক্ষা ডায়গনস্টিক ও পিয়ারলেস হাসপাতাল ওই তালিকায় রয়েছে বলে জানা গিয়েছে।
লকডাউন শুরু হওয়ার আগে এ রাজ্যে হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক বাড়ি ফিরে এসেছেন। মালদা ও মুর্শিদাবাদ জেলায় ব্যাপক সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিকের বাস। কোয়ারেন্টাইনে থাকলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই শ্রমিকদের করোনা পরীক্ষা করা হয়নি। তাই সংশয় থেকেই যাচ্ছে। এঁদের নিয়ে বেশ চিন্তায় রয়েছে রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর। এ বিষয়ে স্বাস্থ্য দফতর ও রাজ্য প্রশাসনের মধ্যে বৈঠকও হয়েছে। জানা গিয়েছে, এই দুই জেলার দুটি মেডিক্যাল কলেজেই করোনা পরীক্ষা করার উদ্য়োগ নেওয়া হয়েছে।
কেন্দ্রীয় সংস্থা নাইসেড, এসএসকেএম, স্কুল অব ট্রপিক্যাল মেডিসিন, মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ এবং উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ, এই পাঁচ সরকারি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও রাজ্যে তটি বেসরকারি সংস্থায় করোনা পরীক্ষা করতে পারে। এছাড়া আরও তিনটে বেসরকারি ও দুটো সরকারি ক্ষেত্রে অনুমোদন মিললে সেক্ষেত্রে রাজ্যে মোট ১৩ কেন্দ্রে করোনা পরীক্ষা হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।