রাজ্য জুড়ে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে সরগরম কিছু নির্দিষ্ট পদের সরকারি কর্মীরা। যা নিয়ে আলোচনায় মুখর বিভিন্ন রাজনৈতিক মহল। এবার রাস্তায় নামলেন রাজ্যের ইউনাইটেড অক্সিলিয়ারি নার্সরা। শুক্রবার থেকে কলকাতায় রাণি রাসমণি রোডে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করলেন তাঁরা। এদিকে বেতন বৃদ্ধির দাবিতে প্রাথমিক শিক্ষকরা ১৪ দিন ধরে আমরণ অনশন চালায়। শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রীর ঘোষণার একদিনের মধ্যেই বেতন বাড়নোর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করল প্রাথমিক শিক্ষা দফতর। এই বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী,শিক্ষকদের গ্রেড পে ২৬০০ টাকা থেকে বেড়ে হল ৩৬০০ টাকা। ঠিক এদিনই বেতন বৈষম্য মেটাতে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি জমা দিতে চলেছে পশ্চিমবঙ্গ ইউনাইটেড অক্সিলিয়ারি নার্সেস এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশন।
রানি রাসমণী রোডে জমায়েত, ছবি: শশী ঘোষ
কেন্দ্রীয় সরকারের জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের অধীনে পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলার সাব সেন্টারে সেকেন্ড এএনএম(আর) পদে এঁরা কর্মরত। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সোমা সাহা বলেন, "আমরা পশ্চিমবঙ্গ নার্সিং কাউন্সিল স্বীকৃত প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেট প্রাপ্ত। গ্রাম বাংলার সর্বনিম্ন স্তরে স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের ভূমিকা অনস্বীকার্য। কিন্তু তাতেও আমাদের বেতন বৃদ্ধি করা হয়নি। দশ বছরে আমাদের বেতন বাড়ানো হয়েছে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা। আমারা ন্যায্য বেতন বৃদ্ধির দাবি জানাচ্ছি।"
ছবি: শশী ঘোষ
এদিন রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে এসে রাজা সুবোধ মল্লিক স্কোয়ারে জমায়েত হন প্রায় কুড়ি হাজার নার্স। সেখান থেকেই মিছিল করে রাণী রাসমণি রোডে গিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন তাঁরা।
ছবি: শশী ঘোষ
ছবি: শশী ঘোষ
সংগঠনের সম্পাদক রুনা খাতুন বলেন, "পশ্চিমবঙ্গের বেশ কিছু সাব সেন্টারে ফার্স্ট এএনএম-এর অনুপস্থিতিতে একজন সেকেন্ড এএনএম কর্মী বছরের পর বছর সমস্ত দায়িত্বভার দক্ষতার সঙ্গে পালন করে চলেছেন। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আমরা কন্ট্রাক্টচুয়াল হবার কারণে আমাদের নেই কোনও বেতন বৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট নিয়ম, মেডিক্যাল লিভ, চাইল্ড কেয়ার লিভ, এমন কি চাকরির নিরাপত্তাটুকু থেকেও আমরা বঞ্চিত। সমকাজে সমমজুরী নীতি লঙ্ঘন করে পারিশ্রমিক হিসাবে আমাদের হাতে যা গুঁজে দেওয়া হয় তাতে আজকের বাজার দরের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলা অলীক কল্পনা মাত্র।"
অনশনের চৌদ্দ দিনের মাথায় প্রাথমিক শিক্ষকদের বেতন বৃদ্ধির বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা করা হয়। বৃহস্পতিবার নজরুল মঞ্চে জরুরি বৈঠকে অতিথি অধ্যাপকদের বিবেচনার কথা মুখ্যমন্ত্রী ভাবছেন বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দেন। এবার এই সেকেন্ড এএনএম (আর)-দের বেতন বৃদ্ধির লাগাতার অবস্থান কতদিন চলে, আদৌ তাঁদের দাবি মানা হয় কিনা, সেটাই দেখার।