বামনগোলা: স্ত্রীকে হারিয়ে শোকে মুহ্যমান স্বামী, তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর

বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেহাল রাস্তা মেরামতির জন্য প্রশাসনকে দীর্ঘদিন বলেও কোন কাজ হয়নি। ফলে রোগীদের কাঠের তক্তা করে অথবা খাটিয়াতে চাপিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে হয়।

বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেহাল রাস্তা মেরামতির জন্য প্রশাসনকে দীর্ঘদিন বলেও কোন কাজ হয়নি। ফলে রোগীদের কাঠের তক্তা করে অথবা খাটিয়াতে চাপিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে হয়।

IE Bangla Web Desk & Rajit Das
New Update
what did the husband say after losing his wife after bamangola incident political tension is on , বামনগোলা: স্ত্রীকে হারিয়ে কাতর অবস্থা স্বামীর, তুঙ্গে রাজনৈতিক চাপানউতোর

এই খাটিয়া করেই তরণীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

বেশি ভাড়া দিয়েও জোটেনি অ্যাম্বুলান্স। ফলে বেহাল রাস্তা দিয়ে খাটিয়া করেই তরুণীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল হাসপাতালে। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। প্রাণ গিয়েছে বছর চব্বিশের মামনি রায়ের। স্ত্রীর করুণ পরিণতির কথা শুনেই কাতর অবস্থা মামনির স্বামী কার্তিকের। কিছু না বললেও মাতৃবিয়োগের কথা হয়তো বুঝতে পেরেছে মামনির ২ বছরের ছেলে। কেঁদেই চলেছে সে। এসবের মধ্যেও কিন্তু বিরাম নেই রাজনৈতিক চাপানউতোরের। এই পরিস্থিতির জন্য একে অপরকে দুষছে তৃণমূল ও বিজেপি।

Advertisment

স্ত্রী বিয়োগে মৃত মামনির স্বামী যেন ঘোরের মধ্যে রয়েছেন। কার্তিক রায় বলেন, 'যখন আমার অসুস্থ স্ত্রীকে খাটিয়া করে মুদিপুকুর গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়, তখন কর্তব্যরত চিকিৎসকরা বলেছিলেন সময় থাকতে থাকতে ঘন্টাখানেক আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া গেলে রোগীকে বাঁচানো যেত। এই শুনে আমি আরও ভেঙে পড়ি। শুধুমাত্র বেহাল রাস্তার জন্যই আমার স্ত্রীর প্রাণ গেল, এর জন্য দায়ী প্রশাসন।'

আরও পড়ুন- ‘রাস্তার নয়, ভাগ্যের কারণেই মৃত্যু’, বামনগোলার তরুণীর মর্মান্তিক পরিণতিতে মন্তব্য মমতার মন্ত্রীর

বামনগোলা কলোনী থেকে মালডাঙা গ্রাম পর্যন্ত প্রায় ৫ কিলোমিটার রাস্তা। ১০০ বছর ধরে খারাপ। মাটির রাস্তা খানাখন্দে ভর্তি। বর্ষা হলে মানুষ গ্রামে বন্দি হয় পড়েন। রাস্তা নেই আর সেই কারণে এদিন জ্বর আক্রান্ত মামনি রায়(২৪)কে খাটিয়া করে দীর্ঘ ৩ কিলোমিটার মাটির রাস্তা দিয়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন মামনি।

Advertisment

এরপর শোরগোল পড়ে যায়। বিক্ষোভকারী গ্রামবাসীদের অভিযোগ, বেহাল রাস্তা মেরামতির জন্য প্রশাসনকে দীর্ঘদিন বলেও কোন কাজ হয়নি। ফলে রোগীদের কাঠের তক্তা করে অথবা খাটিয়াতে চাপিয়ে হাসপাতালে পৌঁছতে হয়। এদিন এই ঘটনার পর বেহাল রাস্তা সারাইয়ের দাবিতে বহুক্ষণ পথ অবরোধ করেছিলেন গ্রামবাসীরা। এই অবরোধের জেরে মালদা নালাগোলা রাজ্য সড়কের ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন বামনগোলা ব্লকের বিডিও রাজু কুন্ডু। তিনি জানান, রাস্তা তৈরীর প্রক্রিয়া চলছে।

আরও পড়ুন- গা শিউরে ওঠার মতো ছবি খাস বাংলায়! খাটিয়ায় চাপিয়ে হাসপাতালে রোগিনী, মর্মান্তিক মৃত্যু!

এই মৃত্যু নিয়ে কিন্তু রাজনীতির বিরাম নেই। উত্তর মালদার বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, 'এই সরকার কাটমানি টাকা তুলতে ব্যস্ত। যে সরকারি টাকা এসেছে তার সম্পূর্ণ লুঠপাট করে খেয়েছে। এর আগে প্রশাসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল রাস্তা করবে। আসলে বর্তমান সরকার মানুষের পাশে নয়, চোর ডাকাতের পাশে রয়েছে। এই সরকারের নেতারা গোরু, কয়লা পাচার করতে ব্যস্ত। চাকরি চুরি করতে ব্যস্ত। এসব ছেড়ে কখন আর রাস্তা করবে? আমরা মানুষের পাশে আছি, প্রশাসনকে অবিলম্বে এখানে রাস্তা করতে হবে, না হলে আমরা গ্রামবাসীদের নিয়ে লাগাতার আন্দোলন চালিয়ে যাব।'

জেলা তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সী বলেন, 'ওই এলাকার বিধায়ক এবং সাংসদ বিজেপির। এতদিন তাঁরা কি করছিলেন? তাঁরাও তো পারতেন রাস্তা করতে। তাঁরা নোংরা রাজনীতি করতে ব্যস্ত। তারা করুক না করুক, রাজ্য সরকার এবং জেলা পরিষদ এই রাস্তা করে দেবে। আমরা মানুষের পাশে রয়েছি। এই পরিবারের প্রতি আমাদের দলের সম্পূর্ণ সহমর্মিতা আছে।'

Maldah Malda Deadbody