কেন্দ্রের দাবি বাংলায় ১০০ দিনের কাজে দুর্নীতি হয়েছে। পাল্টা রাজ্যের দাবি, প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়েই এ রাজ্যের টাকা আটকে দিয়েছে দিল্লির বিজেপি সরকার। 'বঞ্চিত'দের হকের পাওয়ার দাবিতে উত্তাল বাংলা। দিল্লি থেকে কলকাতায় ধরনায় বসেছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়রা। ধরনা তুললেও বিরাট হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছেন তিনি। শেষে মঙ্গলবার তৃণমূলের দাবিদাওয়া মোদী সরকারের কাছে পৌঁছে দিয়েছেন খোদ রাজ্যপাল। এসব তো গেল রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দিক, কিন্তু ১০০ দিনের বকেয়া সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে উচ্চ আদালতে কী বলল নবান্ন?
১০০ দিনের কাজের বকেয়া নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি হিরণ্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে দুটি জনস্বার্থ মামলা হয়েছে। একটি করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। যার বিষয়বস্তু- ১০০ দিনের কাজে বাংলায় দুর্নীতির অভিযোগ। অন্যটি করেছিল পশ্চিমবঙ্গ ক্ষেত মজদুর সমিতি। দ্বিতীয় মামলার বিষয়- বঞ্চিতদের পাওনার দাবি। মঙ্গলবার দু'টি মামলারই শুনানি হয়।
আদালতে কী বলেছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল?
রাজ্যের তরফে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে সওয়াল করেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (এজি) সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়। ১০০ দিনের কাজে অনুয়ম নিয়ে এজি বলেছেন, 'রাজ্য ভুল করে না এটা আমি বলব না। কিছু ভুল হতে পারে। শুধু পশ্চিমবঙ্গ নয়, অনেক রাজ্যের ক্ষেত্রেই হয়। কিন্তু প্রশ্ন হল, রাজ্য যে অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট পাঠিয়েছিল, তার কী হল? তাদের টেবিলে গত এক বছর ধরে কেন পড়ে ছিল রাজ্যের রিপোর্ট?' পাশাপাশি এজির বলেছেন, 'রাজ্য কোনও প্রতিদ্বন্দ্বিতা চায় না। এটি একটি জনস্বার্থ মামলা। আমরা চাই রাজ্যের আসল উপভোক্তারা প্রকল্পের সুবিধা পান।'
কেন্দ্রের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলের কী বক্তব্য?
কেন্দ্রের তরফে অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল (এএসজি) অশোককুমার চক্রবর্তী আদালতে বলেছেন 'গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের তদন্তের বিস্তারিত রিপোর্ট বলছে, ১০০ দিনের কাজ নিয়ে ব্যাপক অনিয়ম করা হয়েছে। এই প্রকল্পে ৫৪ হাজার কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। অথচ কোনও অডিট রিপোর্ট দেওয়া হয়নি।'
আরও পড়ুন- রাজ্যপালে ‘কৃতজ্ঞ’ অভিষেক! কিন্তু ‘বঞ্চিত’রা টাকা পাবেন কবে?
মমতা সরকারের অভিযোগ, গত একবছরে রাজ্যের অ্যাকশন টেকেন রিপোর্টে পদক্ষেপ হয়নি। কেন এই বিলম্ব? জবাবে এএসজি জানান, সদুত্তোরের জন্য গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক সময় চায়।
আরও পড়ুন- সৌজন্যের রাজনীতিতে চরম বিতর্ক, মমতার উপহারে বড় প্রশ্ন!
আগামী সোমবার (১৬ অক্টোবর) মামলার পরবর্তী শুনানি। রাজ্যের পাঠানো অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট নিয়ে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে? সেদিন গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকে হলফনামা দজিয়ে জানাবে গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক।