রাতভর ধরপাকড়ে যাদবপুর কাণ্ডে আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই নিয়ে ধৃতের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৯। গ্রেফতারের পরে ধৃতদের জেরা করেছে পুলিশ। তাতেই সামনে এসেছে চাঞ্চল্যকর তথ্য। পুলিশ ধৃতদের থেকে জানতে পেরেছে যে, গত বুধবার ঘটনার আগে বাংলা বিভাগের নবাগত ছাত্রটিকে চা খাইয়ে সিনিয়রদের ঘরে নিয়ে যান ধৃত সৌরভ চৌধুরী৷ সেখানেই উপস্থিত ছিলেন এই ধৃত মহম্মদ আরিফ সহ অন্যান্যরা৷ ওই ঘরেই প্রায় ঘন্টা ৩-য়েক ছিলেন প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়া৷
তদন্তকারীরা মনে করছেন, ওই তিন ঘণ্টা ছাত্রটির উপরে মানসিক অত্যাচার চলে। যার জেরে ছাত্রটি ঘর থেকে পড়িমড়ি করে বেরিয়ে যায় এবং কোনও ভাবে উপরের তলা থেকে পড়ে যায়৷ আর তাতেই প্রচণ্ড আঘাত পেয়ে রক্তপাত হতে থাকে তাঁর। পরে হাসপাতালে মৃত্যু হয়। তবে গোটা বিষয়টিই এখনও তদন্ত সাপেক্ষ৷ নানা বিষয় পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷
সূত্রের খবর, ধৃত কাশ্মীরি পড়ুয়া মহম্মদ আরিফ দাবি করেছিলেন যে, ঘটনার দিন প্রথম বর্ষের ওই পড়ুয়াকে তিনি বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু তাঁর হাত ছাড়িয়েই সে ঝাঁপ মারে হস্টেল থেকে। সেই সময় ছাত্রটি রীতিমতো ঘামে ভিজে ছিল৷ তার ফলে আরিফের হাত পিছলে গিয়েছিল। কিন্তু, ঘর্মাক্ত ছিল ওই ছাত্র? তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।
জেরায় এও পুলিশ জানতে পেরেছে যে, ঘটনার পর অভিযুক্তেরা হস্টেলের রক্ষীকে মূল দরজা বন্ধ রেখে, ছোট দরজা খুলে দিতে বলে৷ তারপরে একটি অটো ও একটি ট্যাক্সি ডাকা হয়৷ ট্যাক্সিটি আগে পৌঁছায়। সেই ট্যাক্সি করেই রক্তাক্ত মবাগত ছাত্রটিকে হাসপাতালে গিয়েছিলেন মহম্মদ আরিফ, সৌরভ-রা।
এসের মধ্যেই সোশাল মিডিয়ায় ফাঁস হওয়া একটি কথোপকথন ঘিরেও জোর চর্চা। সেই কথোপকথন অনুযায়ী, নবাগত ছাত্রটি নীচে পড়ে যাওয়ার পরেও অন্তত ১৫-২০ মিনিট সে সেইভাবেই সেখানে ছিল৷ এর মধ্যেই বসেছিল রাজনৈতিক সংগঠন 'কালেক্টিভের' জেনারেল বডি মিটিং৷ অভিযোগ, সেই মিটিংয়েই ছাত্র নেতা অরিত্র মজুমদার ওরফে 'আলু' গোটা বিষয়ের তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেন। বন্ধ করে দিতে বলেন হস্টেলের মূল গেট৷ উপস্থিত সকলকে নির্দেশ দেন, তাঁরা যাতে হস্টেলের কোনও কথা বাইরের কাউকে না বলে, হস্টেলের সমস্যা হস্টেলেই মেটাতে হবে৷ আর যদি পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করে তাহলে কী বলা হবে সেই বয়ানও জিবি মিটিং-য়ে বাতলানো হয়েছিল।