Burdwan-East BJP Candidate Asim Sarkar: ভারতের স্বাধীনতার ৭৭ টা বছর অতিক্রান্ত হতে বসেছে। এরই মধ্যে ঘটাকরে 'আজাদী কা অমৃত মহোৎসব' পালিত হয়েছে। কিন্তু এত দিনেও হয়নি দেশের আইনসভায় প্রবেশের জন্যে শিক্ষাগত যোগ্যতার মাপকাঠি নির্ধারণ। তবুও বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকে 'ক্লাস ফোর পাস' বলে দাগিয়ে দিয়ে কতই না কটাক্ষ করা চলছে। তবে ফোর পাশ ডিগ্রিধারী অসীম অবশ্য এতে দমে যাননি। বরং তিনি বিপক্ষ তৃণমূল কংগ্রেস দলের ডাক্তার প্রার্থীর সঙ্গে টক্কর জারি রাখতে ইংরেজিতে নানা কথা বলে তাঁর ফোর পাশ ডিগ্রির মাহাত্মের কথাই তুলে ধরছেন। এমনকী লালুপ্রসাদ যাদবের ক্লাস ফোর উত্তীর্ণ স্ত্রী রাবড়ি দেবীর বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার কথাও তৃণমূলের নেতাদের স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন।
বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে এবারও ঘাস ফুল ফোটাতে মরিয়া তৃণমূল শিবির। তাই জোড়া-ফুল শিবির এবার এই আসনে প্রার্থী করেছে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক শর্মিলা সরকারকে প্রার্থী করেছে। রাজনীতিতে শর্মিলা একেবারে নতুন মুখ। তাঁর স্বচ্ছ ভাবমূর্তিও রয়েছে। তাই তাঁকে দেশের আইনসভায় পাঠাতে তৃণমূলের নেতা, মন্ত্রীও বিধায়ক সকলেই ভোটের ময়দানে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। প্রার্থীকে নিয়ে প্রচারও চলছে জোরকদমে। তবে ভোট যুদ্ধ তো আর এক তরফা হয় না। ফলে তৃণমূল প্রার্থী শর্মিলাকে লড়তে হবে সিপিএম ও বিজেপি প্রার্থীর বিরুদ্ধে। তবে অন্যান লোকসভা আসনের মত বঙ্গের এই আসনেও তৃণমূল তাদের মূল প্রতিপক্ষ হিসাবে বিজেপি প্রার্থীকেই চিহ্নিত করেছে ।
সিপিআইএম বর্ধমান পূর্ব লোকসভা আসনে প্রার্থী করেছে শ্রমজীবী পরিবার থেকে রাজনীতির আঙ্গিনায় উঠে আসা নীরব খাঁ'কে। তিনি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। অপরদিকে বিজেপি তাদের হরিণঘটারর বিধায়ক ও কবিয়াল অসীম সরকারকে এই আসনে প্রার্থী করেছে। কাজেই ইভিএমের লড়াইটা এখানে ত্রিমুখী।তবে তৃণমূল এখানে সিপিএমের ব্যাপারে একটু 'নরম' আর বিজেপির ব্যাপারে 'অতি গরম'। সেই জাঁতাকলে পড়ে বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার এখন কার্যত জোড়া সমালোচনায় বিদ্ধ হচ্ছেন।
ভরা ভোটের বাজারে অসীম সরকারকে তাঁর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে প্রতিনিয়ত বিঁধছে তৃণমূল ও সিপিএম। শুধু মঞ্চ থেকে নয়, সংবাদ মাধ্যমের কাছেও বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকে 'ফোর পাশ' বলে কটাক্ষ করেছেন তৃণমূলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। তার পর থেকে বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকারকে নিয়ে কটাক্ষের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন বর্ধমান পূর্ব লোকসভা এলাকার তৃণমূলের নেতারা। এমনকী সিপিএমের প্রার্থী ও নেতারও বিজেপি প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে মুখর। এখানেই বিষয়টি থামেনি। এখন আবার বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি প্রার্থীর 'ফোর পাস' শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে পোস্টার পড়া শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন- TET 2014: আসল ওএমআর শিট না পেলে ২০১৪-র প্রাথমিকের টেট বাতিল! হুঁশিয়ারি বিচারপতি মান্থার
বিজেপি প্রার্থী অসীম সরকার অবশ্য তাঁর ফোর পাস শিক্ষাগত যোগ্যতার কথা অস্বীকার করেননি। উল্টে ভারতীয় রাজনীতিতে যে 'ক্লাস ফোর পাসে'রও মাহাত্ম্য রয়েছে তার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি বিহারের রাষ্ট্রীয় জনতা দলের (RJD) বলিষ্ঠ নেতা লালুপ্রসাদ যাদবের স্ত্রী রাবড়ি দেবীকে শিখণ্ডী করেন। তিনি বলেন, 'ফোর পাস রাবড়ি দেবী তো বিহারের মুখ্যমন্ত্রী হয়েছিলেন। বিহারে ফোর পাস প্রচুর মন্ত্রীও রয়েছেন। যাঁরা আমার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে কটাক্ষ করছেন তারা এসব জানে? আসলে যাঁরা আমার সমালোচনা করছে তাঁরা ভারতের সংবিধানটাও মনে হয় পড়েননি।'
এর পাশাপাশি ইংরেজিতে কথা বলে এবং তাঁর লেখা ইংরেজি গানের কলি শুনিয়ে অসীম বলেন, 'হ্যাঁ , আমি ফোর পাস সার্টিফিকেট দিয়েই বিধায়ক হয়েছি। তবে এটাও সবার জানা দরকার যে একজন কবি হতে গেলে শুধুমাত্র আক্ষরিক বিদ্যা থাকলেই হয় না। এর জন্যে আমাকে মাস্টার ডিগ্রি কোর্সের ফিলোজফি ছাড়াও গীতা,মহাভারত,বেদ পুরাণ,কুরান, ত্রিপিটক সবই পড়তে হয়েছে। আর এসব পড়া আছে বলেই আমি বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যেমন যেতে পেরেছি, তেমনই ভারতের আইনসভায় যাওয়ার যোগ্য হিসাবেও নিজেকে তৈরি করেছি।'