১২, ১৪ ও ২১ ডিসেম্বর। এই তিন তারিখ জানিয়ে ‘ডিসেম্বর তত্ত্ব’ নিয়ে রাজ্য রাজনীতিতে হুসুস্থূল ফেলেছিলেন বিরোধী দলনেতা। একে একে এই তিন দিনই কাবার। কোনও ধামাকাই হল হয়নি। উল্টে, দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে তাঁকে ধমকও শুনতে হয়েছে বলে সূত্রের খবর। ফলে এবার ডিসেম্বর তত্ত্ব নিয়ে সুর নরম শুভেন্দু অধিকারীর। তাও আবার নিজের গড় কাঁথি জনসভাতেই। এদিন ডিসেম্বর তত্ত্বের ব্যাখ্যা দেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক। কিন্তু, তা তেমন কড়া মানের নয়। যদিও ডিসেম্বর হুঙ্কারের বদলে শুভেন্দুর মুখে এদিন শোনা গিয়েছে 'বুলডোজার' হুংকার।
Advertisment
কী বলেছেন শুভেন্দু?
বুধবার কাঁথির রেল মাঠে সভা করেন শুভেন্দু অধিকারী। দুর্নীতি ইস্যুতে আগাগোড়াই তাঁর নিশানায় ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী, তৃণমূল ও তৃণমূল সরকারের প্রসঙ্গ। চাকরিতে দুর্নীতির অভিযোগ করে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, 'আমরা চাই ঘুসমুক্ত কর্ম সংস্থান। রাজ্যে যেভাবে চাকরি বিক্রি হয়েছে। যেভাবে পার্থ-অপার বাড়িতে টাকার পাওয়া গেছে। এই সমস্থ কিছুর মুক্তি চাই।' আবাস দুর্নীতি নিয়েও মুখ খোলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর আশ্বাস, বলেন, 'পঞ্চায়েত ভোটে বিজেপি প্রার্থীদের জেতালে লোকসভার আগেই গরিব মানুষ আবাস যোজনার অর্থ পেয়ে যাবেন।'
বিরোধী দলনেতার বক্তব্য, 'রাজনৈতিক প্রভাব মুক্ত পুলিশ করতে গেলে আমাদের গণ আন্দোলনের তীব্রতা বাড়াতে হবে। পুলিশ ছাড়া তোলামূলের আর কিছু নেই।'
এসবের পরই বিরোধী দলনেতা ডিসেম্বর তত্ত্বের উল্লেখ করেন। বলেন, 'আমি তিনটি উল্লেখযোগ্য দিনের কথা ডিসেম্বরে বলেছিলাম। তবে আমি কখনোই বলিনি সরকার বদলে দেব। আপনারা কী চান? এমএলএ ভেঙে সরকার বদলে যাক? নাকি ভোটে জিতে বিজেপি আসুক। আমরা ভোটে জিতে বিজেপিকে ক্ষমতায় আনব। ভোটে জিতে বিজেপি এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসবে। রাষ্ট্রবাদী সরকার হবে। ডাবল ইঞ্জিন সরকার হবে। উত্তর প্রদেশের মতো পশ্চিমবঙ্গেও বুলডোজার চলবে।'
উল্লেখ্য, গত ১২ তারিখ ডিসেম্বর তত্ত্বের প্রথম দিনেই অবশ্য ভোল বদলেছিলেন শুভেন্দু অধিকারী। সামনে এনেছিলেন ‘জানুয়ারি’ তত্ত্ব। বলছিন, '১৩ জানুয়ারির মধ্যে বড় ডাকাত ধরা পড়বে। এই তারিখটা আর ১৪ ফেব্রুয়ারি হবে না।' যা নিয়ে টিপ্পনি কাটতে ছাড়েনি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল। শুভেন্দুর হুঁশিয়ারিকে 'ফাঁকা আওয়াজ' বলে সোচ্চার হয় জোড়-ফুল ব্রিগেড।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, বারে বারে হুঙ্কার দিয়ে শুভেন্দু অধিকারী একদিকে যেমন তৃণমূলকে চাপে রাখার চেষ্টা করেছেন, তেমনই পদ্ম শিবিরকেও একসূত্রে গাঁথায় উদ্যোগী। তাই 'ডিসেম্বর' তত্ত্ব লঘু করে এবার তাঁর নজর 'জানুয়ারি' তত্ত্ব ও বুলডোজারের দিকে।