সকাল ও বিকেলে লোকাল ট্রেন চালানোর জন্য রেলকে ইতিমধ্যেই প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকার। কোভিড বিধি মেনেই লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরুর বিষয়ে আগ্রহী নবান্ন। মুখ্যসচিবের নজরে 'মেট্রো মডেল'। কোন পদ্ধতিতে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু করা যেতে পারে তা খতিয়ে দেখতেই আজ বিকেলে নবান্নে রাজ্য প্রশাসন ও পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন পূর্ব রেলের আধিকারিকরা।
নিউ নর্মালে কলকাতা ও শহরতলির লোকাল ট্রেন চালানোর দাবি বাড়ছিল। ইতি-উতি বিক্ষোভও দেখাচ্ছিলেন যাত্রীরা। কিন্তু, গত শুক্র ও শনিবার তা চরম আকার ধারণ করে। রেলকর্মীদের জন্য নির্দিষ্ট স্পেশাল স্টাফ ট্রেনে নিত্য যাত্রীরা উঠতে চাওয়ায় ব্যাপক গোলমাল হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আরপিএফ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ। এতেই বেশ কয়েকজন যাত্রী আহত হন। এই ঘটনার কয়েক ঘন্টা পরই রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী পূর্ব রেলের জেনারেল ম্যানেজার সুনীত শর্মাকে চিঠি দেন। তাতেই সকাল-বিকেলে লোকাল ট্রেন চালু করতে চেয়ে রেলের সঙ্গে আলোচনায় বসার আগ্রহ প্রকাশ করে রাজ্য। সেই প্রস্তাবে সাড়া দিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।
জানা গিয়েছে এ দিনের বৈঠকে রাজ্যের তরফে থাকবেন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী ও জিডি (আইন-শৃঙ্খলা), কলকাতার নগরপালল সহ অন্যান্য আধিকারিকরা। রেলের তরফে থাকার কথা রয়েছে পূর্ব রেলের অতিরিক্ত জেনারেল ম্যানেজার, প্রিন্সিপাল চিফ অপারেশন ম্যানেজার ও চিফ সিরিওরিটি কমিশনারের। করোনা আবহে ভিড় নিয়ন্ত্রণে রেখে কী ভাবে লোকাল ট্রেন পরিষেবা শুরু করা যায়, তার উপায় নির্ধারণই সোমবারের বৈঠকের মূল ইস্যু। ভিড় এড়াতে মেট্রোর মতো ভার্চুয়াস ব্যবস্থাপনা লাগু করা যায়কিনা তাও খতিয়ে দেখা হতে পারে।
রাজ্যের তরফে রেলকে দেওয়া চিঠিতে শনিবার হাওড়ায় আরপিএফ-র ভূমিকার নিন্দা করা হয়। রেলকে জানানো হয় যে, এর আগে মেট্রো পরিষেবা যথেষ্ট সতর্কতা ও দক্ষতার সঙ্গে চালু করতে সক্ষম হয়েছে রাজ্য। এবার রেলের সম্মতি মিললে বিশেষ কয়েক জোড়া ট্রেনও ভালো ভাবেই চলতে পারবে এ রাজ্যে। তাতে জনসাধারণেরও অনেক সুবিধা হবে।
উল্লেখ্য, নিউ নর্মালে পরিষেবা শুরুর বিষয়ে আগেই রাজ্যকে চিঠি দিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিল রেল। কিন্তু, আনলক পর্বে ট্রেন চালানোয় সায় ছিল না রাজ্য সরকারের। ফলে, রেল রাজ্যের জবাব পায়নি। লোকাল ট্রেন চালুর বিষয়টিও আর এগোয়নি।
লোকাল ট্রেন পরিষেবা চালু নিয়ে রাজ্যের ভূমিকার সমালোচনায় মুখর বিরোধী দলগুলো। রবিবার বিজেপি রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেছেন, 'বাস, মেট্রো, ট্রাম, অটো, টোটো চললে সংক্রমণ ছড়াবে না। আর ট্রেন চললেই ছড়াবে? কেন্দ্রীয় সরকার লোকাল ট্রেন চালাতে চেয়ে বারবার চিঠি দিলেও তখন ওদের কানে জল ঢোকেনি। মানুষ যখন ট্রেন চালানোর দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাচ্ছে। পুলিশকে লাঠি চালাতে হচ্ছে তখন ওদের ট্রেন চালানোর কথা মনে পড়েছে।' সরব হয়েছে বাম-কংগ্রেসও।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন