পশ্চিমবঙ্গে পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দাখিলের চতুর্থ দিনে, দক্ষিণ ২৪ পরগণার ভাঙড়ে বোমা হামলায় বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। কলকাতা হাইকোর্ট এই পরিস্থিতিতে রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছে। কারণ, রাজ্য প্রশাসন পুলিশের সংখ্যা অপর্যাপ্ত বলে জানিয়েছে। সব দিক বিবেচনা করে হাইকোর্ট, রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে (এসইসি) মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানোর বিষয়টি বিবেচনা করতে বলেছে। এই সময়সীমা আপাতত ১৫ জুন শেষ হওয়ার কথা।
মঙ্গলবার যে দুটি বিষয় নিয়ে হাইকোর্ট কমিশনকে নির্দেশ দিয়েছে, তার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন এবং মনোনয়নপত্র দাখিলের সময়সীমা বৃদ্ধি, দুটি দাবিই হাইকোর্টে আলাদাভাবে জানিয়েছিলেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরী। রাজ্য নির্বাচন কমিশন পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণার পরদিন, দু'জনেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।
কমিশন ঘোষণা করেছে, ৯ থেকে ১৫ জুনের মধ্যে মনোনয়ন দাখিল করা হবে। মাঝখানে আবার দু'দিনের ছুটি। সেই হিসেবে দলগুলো মনোনয়ন দাখিলের জন্য সময় পেয়েছে মাত্র ৫ দিন। ৮ জুলাই হবে ভোটগ্রহণ। গণনা হবে ১১ জুলাই। শুভেন্দু অধিকারী এবং অধীর চৌধুরী, দুই নেতাই এসব কথা মাথায় রেখে আদালতে জরুরি শুনানি চেয়েছিলেন। মঙ্গলবার নির্দেশ দিল আদালত।
শুভেন্দু অধিকারী ও অধীর চৌধুরী তাঁদের আবেদনে তুলে ধরেন, ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে ঠিক কীভাবে রাজনৈতিক হানাহানি হয়েছে, সেই তথ্য। তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করেন যে পশ্চিমবঙ্গে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনেও ব্যাপক হানাহানি হবে। বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন দাখিল করতে দেওয়া হবে না। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ২০১৮ সালের নির্বাচনে। আবেদনে কমিশনের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেছেন দুই নেতাই। সব মিলিয়ে পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে কেন্দ্রীয় তাঁরা আদালতের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ চেয়েছিলেন।
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত নির্বাচনে চলছে ধারাবাহিক রাজনৈতিক হিংসা, কারণটা কী?
মঙ্গলবার আদালতের নির্দেশ বুঝিয়ে দিল, রাজ্যে কংগ্রেস এবং বিজেপির প্রধান নেতৃত্ব একসুরে অভিযোগ তোলায় সেই আবেদন আদালত কান পেতে শুনেছে। যা ভবিষ্যতে রাজ্যের বিরোধী দলগুলোর কাছে আদালতের একটা বড় বার্তা হয়ে রইল।