জোড়া-ফুল প্রতীকেই ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কাঁথি কেন্দ্র থেকে জিতেছিলেন শিশির অধিকারী। তারপর অতিক্রান্ত তিন বছর। রাজ্য রাজনীতিতেও বড় বদল ঘটেছে। পরিবর্তন কাঁথির অধিকারী পরিবারেরও। শান্তিকুঞ্জের বাসিন্দা শুভেন্দু ও সৌমেন্দু অধিকারী এখন তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে। আর, তাঁদের বাবা তথা প্রবীণ সাংসদ শিশির অধিকারী একুশের ভোটে প্রধানমন্ত্রীর মঞ্চে গিয়েছিলেন। তাঁর সাংসদ পদ খারিজের দাবি তুলে স্পিকারকে চিঠি দিয়েছেন সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। সাংসদ সৌমেন্দু অধিকারীর সরাসরি পদ্ম-যোগ না থাকলেও দলের কর্মসূচিতে তিনি শেষ কবে হাজির ছিলেন তা সকলে ভুলতে বসেছেন। এই অবস্থায় শিশির অধিকারী কোন প্রার্থীকে ভোট দেবেন তা নিয়ে জোর জল্পনা ছিল।
শেষ পর্যন্ত শিশির ও দিব্যেন্দু উভয়ই দিল্লিতে গিয়ে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন। তারপরই শিশিরবাবু তাঁর দলত্যাগ, রাষ্ট্রপতি ভোট, উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রার্থী নিয়ে সবকিছু খোলসা করেছেন।
কী বলেছেন শিশির অধিকারী?
তাঁর বিরুদ্ধে দলবদলের জল্পনা উড়িয়ে দিয়েছেন শিশির অধিকারী। বলেছেন, 'আমার পরিবার নিয়ে নানা জল্পনা। কিন্তু, আমি তৃণমূলে ছিলাম, আছি, থাকব। দ্রৌপদী মুর্মু ভাল প্রার্থী। কিন্তু আমি তো নেত্রীর নির্দেশ মত দলের প্রার্থীকেই ভোট দিয়েছি।'
তৃণমূলের প্রায় সব সাংসদ বিধানসভায় গিয়ে ভোট দিয়েছেন। কেন তিনি ও তাঁর ছোট ছেলে দিব্যেন্দু সংসদে ভোট দিলেন? শিশির অধিকারীর জবাব, 'আমাকে দলের কেউ কোথায় গিয়ে ভোট দিতে হবে বলেনি। যোগাযোগও করেনি। ওরা আমাকে দল থেকে বার করার চেষ্টা করছে। কিন্তু, আমি দলীয় নির্দেশ মেনেই চলা লোক।'
উপরাষ্ট্রপতি ভোটে বাংলার প্রাক্তন রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়কে প্রার্থী করেছে এনডিএ। তৃণমূলের কী অবস্থান হবে? স্পষ্ট করেনি রাজ্যের শাসক দল। তবে, তৃণমূলের সাংসদ হলেও ধনকড়কেই সেরা প্রার্থী বলে দাবি করেছেন শিশির অধিকারী। তাঁর কথায়, 'জগদীপ ধনকড় রাজ্যপাল হিসাবে সবচেয়ে ভাল। সুদক্ষ প্রশাসক। আমাদের দলের সঙ্গে অবশ্য ওঁর খেঁচাখেঁচি ছিল।' তাহলে কী এনডিএ প্রার্থীকেই উপরাষ্ট্রপতি ভোটে সমর্থন করবেন তিনি? কাঁথির তৃণমূল সাসংদ বলেছেন, 'দল যাঁকে বলবে তাঁকেই দেব।'
তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের অবশ্য দাবি, 'উনি ও দিব্যেন্দু অধিকারী বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছেন। আসলে সাংসদ পদ বাঁচাতে এখন কৌশলী কথা বলছেন। এটা সকলেই বোঝেন। বিজেপির মঞ্চে গিয়ে এখন বলছেন তৃণমূলের নির্দেশ মতো ভোট দিয়েছি। আমরা ধরেই নিয়েছি ওনারা দ্রৌপদী মুর্মুকেই ভোট দিয়েছেন।'