কোথাও বিস্ফোরণ, তো কোথাও নিগ্রহে ছাত্র মৃত্যু। আবার, কোথাও অন্য কোনও ধরনের হিংসার অভিযোগ। রাজ্যে হিংসার বাড়বাড়ন্তে ক্ষুব্ধ আমজনতা। ঘটনাচক্রে দেখা যাচ্ছে, বিভিন্ন জায়গায় হিংসার কারণে বিভিন্ন জন দোষী। যাদের পরস্পরের মধ্যে আবার কোনও যোগাযোগই নেই। যার অর্থ, বিভিন্ন ব্যক্তি হিংসার উন্মত্ততার সঙ্গে জড়িত। রাজনৈতিক দলগুলো অবশ্য কেউ এর দায় নিতে নারাজ। বরং, পরস্পরের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলতেই ব্যস্ত। প্রশ্ন হল, তাহলে দায়ী কে? ট্রেনে-বাসে অনেক ক্ষিপ্ত যাত্রীই কোনও রাখঢাক না-করে বলে বসেন- 'আরে, এরা সব জানে! হাত মিলিয়ে বসে আছে।' পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
এমনিতে হিংস্র বন্যপ্রাণী কিংবা পশুদের মধ্যে বিদ্বেষ লেগেই থাকে। বনে-জঙ্গলে নিজেদের হানাহানির কারণে পরস্পর আঘাত পায়। কিন্তু, সেটা তো পশুদের স্বভাব। অজ্ঞানতার কারণে, স্বভাবের বশে তারা পরস্পরের সঙ্গে ঝগড়া করে। মারামারি করে আঘাত পায়। আবার, অনেক ক্ষেত্রে মারাও যায়। এই পরিস্থিতি কিন্তু নতুন নয়। অন্তত, তা বোঝা যায় চাণক্যের কথায়। চাণক্যের সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। কোটিল্য চাণক্য ছিলেন মৌর্য সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা চন্দ্রগুপ্ত মৌর্যের গুরু থেকে সবকিছুই। যিনি চন্দ্রগুপ্তকে প্রায় মাটির ধুলো থেকে তুলে এনে রাজ সিংহাসনে বসিয়েছিলেন। সেই মৌর্য সাম্রাজ্য দীর্ঘসময় ভারত শাসন করেছে।
আরও পড়ুন- দুর্নীতি ইস্যুতে বারবার আঙুল তুলছেন বিরোধীরা, কোন পথে মুখ বন্ধ করাতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী?
এই ধরনের পরিস্থিতির ক্ষেত্রে কী বলে গিয়েছেন চাণক্য? তিনি বলেছেন, 'বহুভিমূর্খ সংঘাতৈ রন্যোন্য পশুবৃত্তিভিঃ। প্রচ্ছাদ্যন্তে গুণা রাজ্ঞো মেঘৈরিব রবেঃ করাঃ।' যার অর্থ হল, সমাজে মূর্খের সংখ্যা বেশি থাকলে কোনও সমাজের উন্নতি হয় না। শুধু তাই নয়, অতি মূর্খের সমাজে কোনও গুণী ব্যক্তি থাকলে সেই গুণীর গুণও অনেক সময় চাপা পড়ে যায়। ঠিক যেমন মেঘ সূর্যকে ঢেকে দেয়, ঠিক সেই রকম। সেই জন্য বলা হয়, গুণী ব্যক্তির গুণ প্রকাশের জন্য উপযুক্ত পরিবেশের প্রয়োজন হয়। যেখানে সেই পরিবেশ থাকে না, অধিক মূর্খের প্রাধান্যই প্রবল হয়ে ওঠে। আর, সেখানেই বাড়ে হিংসা।