গরু পাচার মামলায় সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার হয়েছেন অনুব্রত মণ্ডল। এর দিন তিনেকের মাথায় 'কেষ্ট'র গ্রেফতারি নিয়ে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী। বেহালার ম্যানটনে স্বাধীনতা দিবসের এক অনুষ্ঠানে বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতির গ্রেফতার নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কেন অনুব্রতকে গ্রেফতার করা হল তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রতিহিংসার রাজনীতির অভিযোগে তুলোধনা করেছেন বিজেপিকে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, 'পরশু কেষ্টকে গ্রেফতার করা হল, কী করেছিল ও? ইলেকশনে তো ওকে ঘরবন্দি করে রাখা হয়েছিল। একটা ইলেকশনেও ওকে বেরতে দেয়নি। কিন্তু কেষ্টকে আটকালে কী হবে? ছেলেটা গত দু'বছর খুব কষ্ট পেয়েছে। ওর স্ত্রী, তার আগে মা মারা গেছে। আমি ওকে এমপি, এমএলএ হতে বললেও ও বলত হব না। রাজ্যসভায় যেতে বললেও যায়নি। ওদের এজেন্সিতে কিছু লোককে টাকা দিয়ে পোষে। তারা প্রথম থেকে শুধু বদনাম করে। পরে কিন্তু জিরো, কেসে কিছুই হল না। জেনে রাখুন ২০২৪-এ বিজেপি আর জিতবে না। তাই বলি দুর্বল হবেন না, এদের বিচার জনগণের আদালতে হবে। এক কেষ্টকে ধরলে লক্ষ কেষ্টরা রাস্তায় তৈরি হবে।'
আরও পড়ুন- ‘আমার বাড়িতে গেলে রাস্তায় নামবেন তো?’ কর্মীদের ইঙ্গিতপূর্ণ প্রশ্ন মমতার
অর্থাৎ, গরু পাচারের অভিযোগে অনুব্রত মণ্ডল গ্রেফতার হলেও প্রিয় 'কেষ্টর' প্রতি মমতার আশীবার্দের হাত যে সরেনি সেটা স্পষ্ট হল।
দলের প্রতি বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রতর আনুগত্যের কথাও এ দিন তুলে ধরেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, 'ওর বউ ক্যানসারে মারা গিয়েছে। প্রতিদিন ও কলকাতা আর বোলপুর করত। এমনকী গতবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময় ওর বউ যখন হাসপাতালে ভর্তি, অপারেশন হচ্ছে, তখন আমাকে একদিন কেষ্ট বলল, দিদি জানো তো তোমার বউমা বলছে আমাকে দেখতে হবে না, যাও দলের কাজ কর।'
১১ অগাস্ট গ্রেফতার করে হয়েছিল অনুব্রত মণ্ডলকে। সাত সকালে বোলপুরে কেষ্ট মণ্ডলের বাড়িতে পৌঁছে যায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা দল। প্রায় কয়েক ঘন্টার তল্লাশির পর গ্রেফতার করা হয় বীরভূম জেলা তৃণমূল সভাপতিকে। যা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। বলেন, 'যখন তখন তাণ্ডবে সিবিআই, ইডি লোকের বাড়ি ঢুকে পড়ছে। তাণ্ডব করছে। কেষ্টর বাড়িতে ঢুকেও তাণ্ডব করেছে।'
আরও পড়ুন- বিরোধীদের ‘সেটিং’ তত্ত্বের বিরুদ্ধে গর্জে উঠলেন মমতা, কী ব্যাখ্যা দিলেন মোদী-সাক্ষাতের?
তবে একইসঙ্গে তৃণমূল নেত্রীর ঘোষণা, 'সত্যি যদি কেউ অন্যায় করে তবে এজেন্সি তাকে গ্রেফতার করুক। তাতে আমার কোনও সমস্যা নেই। '
অনুব্রতর গ্রেফতারির প্রতিবাদ এবং সিবিআই-ইডি-র নিরপেক্ষাতার দাবিতে, গত দু’দিন তৃণমূলের ছাত্র-যুবরা রাজ্যব্যাপী পথে নেমেছিল। এ দিন সেই আন্দোলনের ধারায় গতি যোগ করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। বলেন, '১৬ অগস্ট খেলা হবে দিবস। ওইদিন থেকে খেলা শুরু হবে। মিছিল মিটিং, প্রতিবাদ প্রতিরোধ শুরু হবে। ব্লকে ব্লকে খেলতে খেলতে মিছিল করুন। বিজেপি দেখলেই বলবেন, সবচেয়ে বড় চোর কে! বিজেপি সিপিএম কংগ্রেস ভাই ভাই। বাংলায় এদের ঠাঁই নাই।'