scorecardresearch

চরম লক্ষ্যে মমতার কৌশলী চাল, পঞ্চায়েতের আগেই হোঁচট বিরোধীদের

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক ভাবে আসন কমে যাওয়ার পরও সংখ্যালঘুদের প্রতি সরাসারি ভরসা রেখেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বারে বারে মা-বোনেদের সমর্থন চেয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী।

asset increasing case tmc supreme court
তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

দলিতদের ভোট ব্যাংক টার্গেট করেই এরাজ্যে গত লোকসভা ও বিধানসভা নির্বাচনে লড়াইয়ে নেমেছিল বিজেপি। দলিতদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মধ্যাহ্ন ভোজন সেরেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ থেক দলের সর্বভারতীয় সভাপতি জগৎপ্রকাশ নাড্ডা। ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে ব্যাপক ভাবে আসন কমে যাওয়ার পরও সংখ্যালঘুদের প্রতি সরাসারি ভরসা রেখেছিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বারে বারে মা-বোনেদের সমর্থন চেয়েছিলেন তৃণমূলনেত্রী। এমনকী তখন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন প্রতি মাসে মহিলাদের ৫০০টাকা করে হাতখরচ দেবে রাজ্য সরকার। ক্ষমতায় এসে লক্ষ্মীর ভান্ডার প্রকল্প চালুও করে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে গ্রামীণ জনসংযোগ বাড়াতে এবার কর্মসূচি নিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেসের মহিলা শাখা।

২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে জয় পেলেও ১ বছরের মধ্যেই বগটুই গণহত্যা, হাঁসখালি গণধর্ষণ, আমতায় আনিসের মৃত্যুতে রাজ্য তোলপাড় হয়েছে। তারওপর প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এসএসসিতে দুর্নীতির অভিযোগে গ্রেফতার, পলাশীপাড়ার তৃণমূল বিধায়ক মানিক ভট্টাচার্য হাজতে, শিক্ষাদফতরের একাধিক আধিকারিক জেলে, গরুপাচার কাণ্ডে বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মন্ডল গ্রেফতার। এমন নানা ইস্যুতে পঞ্চায়েত ভোটের আগে বিরোধীরা চেপে ধরেছে রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল কংগ্রেসকে। রাজনৈতিক মহলের মতে, দুর্নীতি ইস্যুতে তৃণমূলের মহিলা নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলনামূলক অনেকটাই কম। যদিও নারদা কাণ্ডে জড়িয়েছিলেন দুই সাংসদ কাকলি ঘোষদস্তিদার ও অপরূপা পোদ্দার। এছাড়াও মহিলা তৃণমূলে একাধিক নেতৃত্ব রয়েছেন, আছেন মন্ত্রীসভার সদস্য। এই মহিলা ব্রিগেডকে এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে কাজে লাগাতে চাইছে মমতাশিবির।

২০২৩ পঞ্চায়েত নির্বাচনের পরের বছরই লোকসভা নির্বাচন। ২০১৮ পঞ্চায়েত নির্বাচনে প্রার্থী-মনোনয়ন জমা দেওয়া থেকে ভোটের দিন সন্ত্রাস তথা জোড়-জবরদস্তির অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। রাজনৈতিক মহলের মতে, তারই ‘ফল’ মিলেছিল ২০১৯ লোকসভা ভোটে। বিজেপি এরাজ্যে একলাফে ২ থেকে ১৮টি আসনে জয় পেয়েছিল। তৃণমূল ২২টি আসনেই আটকে গিয়েছিল। রাজনৈতিক মহলের মতে, এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে তেমন পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক থাকতে চাইছে ঘাসফুল শিবির। দলের সাংগঠনিক বৈঠকে তা নিয়ে বার্তাও দিয়েছেন সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ‘চলো গ্রামে যাই’, নভেম্বর থেকে এই কর্মসূচির মাধ্যমে পঞ্চায়েতের ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপন করতে চাইছে মহিলা তৃণমূল কংগ্রেস।

এক মাস ধরে এই কর্মসূচি চলবে। নেতৃত্বে থাকবেন পশ্চিমবঙ্গ মহিলা তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য সভানেত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার। বুথ স্তর পর্যন্ত ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের সুবিধা-অসুবিধার কথা শুনবেন। রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়নের কথা বলবেন। একইসঙ্গে মহিলা সমর্থকরা যাতে রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত হন সে বিষয়েও উদ্যোগী হবেন মন্ত্রী শশী পাঁজা, সাংসদ মালা রায়রা। রাজনৈতিক মহলের মতে, বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই কর্মসূচির মাধ্যমে মহিলা ভোটারদের বড় অংশের মন জয় করতে চাইছে তৃণমূল কংগ্রেস। পাশাপাশি ২০১৮-এর পঞ্চায়েতে ভোটের ক্ষতে মলম লাগাতে তৎপর তৃণমূল। কারণ, পরের বছরই লোকসভা নির্বাচন। এই পথেই বিরোধীদের তোলা দুর্নীতি বা সন্ত্রাসের ইস্যুও ভোতা করতে চাইছে তৃণমূল।

Stay updated with the latest news headlines and all the latest Westbengal news download Indian Express Bengali App.

Web Title: Why did mamtar banerjees tmc choose women cholo grame jai for panchayat campaign506760