রামনবমী ঘিরে সাম্প্রদায়িক আগুন, রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি ব্যর্থ?

তৃণমূল মুসলিমদের পক্ষে, বিজেপি হিন্দুদের পক্ষে, এমনভাবেই কি বিভাজন হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি?

তৃণমূল মুসলিমদের পক্ষে, বিজেপি হিন্দুদের পক্ষে, এমনভাবেই কি বিভাজন হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি?

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Mamata Banerjee

সাগরদিঘি উপনির্বাচনের ফল থেকে শিক্ষা নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেস রাজ্যে সংখ্যালঘুদের মধ্যে আরও বেশি করে প্রভাব বিস্তার করতে চাইছে। আর, ঠিক এই সময়েই রামনবমীকে ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় হিংসা ছড়িয়ে পড়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইছিলেন, লোকসভা নির্বাচনকে সামনে রেখে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার করতে। যার সূত্র ধরে বাংলার বঞ্চনার প্রতিবাদে তিনি ধরনায় বসেছেন।

Advertisment

মোদী সরকার বাংলার নেতাদের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে ব্যবহার করছে। এই সব অভিযোগকে তৃণমূল সুপ্রিমো সামনে রাখতে চাইছিলেন। কিন্তু, সব যেন ঘেঁটে ঘ করে দিয়েছে রামনবমীর হিংসা। কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তাঁর আন্দোলনের যাবতীয় প্রচারের আলো কেড়ে নিয়েছে সাম্প্রদায়িক হানাহানি। যাকে সামলাতে না-পারার জন্য এখন তাঁর সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলছেন বাংলার জনতা। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, আইন-শৃঙ্খলাজনিত ব্যর্থতার।

পরিস্থিতি দেখে, তৃণমূল সুপ্রিমো যাবতীয় দোষ চাপিয়েছেন বিজেপি তথা সংঘ পরিবারের ঘাড়ে। আর, বিজেপি নেতৃত্ব পালটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে 'পক্ষপাতমূলক হিন্দু বিরোধিতা'র অভিযোগ করেছেন। বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতারা যে গোটা ঘটনায় সতর্ক দৃষ্টি রাখছেন, তা-ও স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। কারণ, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে হিন্দু বিরোধিতার অভিযোগ ধেয়ে এসেছে কেন্দ্রের মোদী সরকারের একাধিক মন্ত্রীর থেকেও। যার ফলে রাজনৈতিক লড়াই বদলে গিয়েছে সাম্প্রদায়িক লড়াইয়ে।

পরিস্থিতি বেগতিক দেখে মমতা ব্যানার্জি যাবতীয় দোষ বিজেপির ঘাড়ে চাপিয়েছেন। মুসলিমদের বিরুদ্ধে চক্রান্ত করার অভিযোগে তিনি বিজেপিকে নিশানা করেছেন। তৃণমূল সুপ্রিমোর অভিযোগ, 'তারা (বিজেপি নেতৃত্ব) সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা করার জন্য রাজ্যের বাইরে থেকে গুন্ডা ভাড়া করেছে। কেউ তাদের মিছিল বন্ধ করেনি। কিন্তু, তলোয়ার আর বুলডোজার নিয়ে মিছিল করার অধিকার তাঁদের নেই। কীভাবে তারা হাওড়ায় এটা করার সাহস পেল? বিশেষ একটি সম্প্রদায়কে (মুসলিম) লক্ষ্য করে আক্রমণ করার জন্য মিছিলের রুটগুলো বদলানো হয়েছিল।'

Advertisment

আরও পড়ুন- ফের হিংসা ছড়াতে পারে বাংলায়, আশঙ্কায় দিনক্ষণ উল্লেখ করে সতর্ক করলেন মমতা

কিন্তু, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী যতই গন্ডগোল পাকানোর জন্য বিজেপিকে দোষ দিন, এতকিছু করেও তিনি তাঁর সরকারের ব্যর্থতা কিছুতেই ঢাকতে পারছেন না। কারণ, এটা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে যে রাজ্য প্রশাসন পর্যাপ্তভাবে প্রস্তুত না-থাকার জন্যই রাজ্যে রামনবমীকে ঘিরে হিংসা ছড়িয়েছে। বিশেষ করে হাওড়ায় তো বটেই। কারণ, গতবছর এই হাওড়াতেই রামনবমীকে ঘিরে সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ ছড়িয়েছিল। আর, তখন থেকে ওই অঞ্চলে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা ছিলই।

এবারের রামনবমীর একদিন আগে মুখ্যমন্ত্রী হুঁশিয়ারির সুরে বলেছিলেন যে রামনবমীর নামে কোনও ধরনের সাম্প্রদায়িক উসকানি বরদাস্ত করা হবে না। কিন্তু, দেখা গেল মুখ্যমন্ত্রী এতবড় কথা বলার পরও তাঁর রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় সেই রামনবমীতেই সাম্প্রদায়িক আগুন ধরল।

Mamata Banerjee bjp tmc