ফ্ল্যাট বিক্রির নামে কোটি কোটি টাকার অভিযোগ তৃণমূলের তারকা সাংসদ নুসরত জাহানের বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই তাঁকে তলব করেছে ইডি। আগামী সপ্তাহেই সাংসদকে সিজিও কমপ্লেক্সে হাজিরার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। একই নির্দেশ, সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের 'অন্যতম ডিরেক্টর' রাকেশ সিং-কেও। শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ থেকে আবাস দুর্নীতির মধ্যেই তৃণমূল সাংসদরে বিরুদ্ধে ফ্ল্যাট প্রতারণার অভিযোগের বিষয়টি বঙ্গ রাজনীতিতে শোরগোল ফেলে দেয়। মুখ খুলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও শুভেন্দু অধিকারীও।
শঙ্কুদেব পাণ্ডার সামনে আনা নুসরতের বিরুদ্ধে অভিযোগ নিয়ে প্রতিক্রিয়া দিয়েছিলেন খোদ নুসরতও। কলকাতা প্রেস ক্লাবে বসে নিজেকে 'নির্দোষ' বলে দাবি করেছিলেন। যদিও নুসরত ও সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের 'অন্যতম ডিরেক্টর' রাকেশ সিংয়ের বয়ান ঘিরে একাধিক প্রশ্ন উঠছে। সেই সব খতিয়ে দেখতেই কেন্দ্রীয় এজেন্সির নজরে তৃণমূল সাংসদ তথা অভিনেত্রী নুসরত জাহান।
নুসরতের বিরুদ্ধে কী অভিযোগ?
বিজেপি নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা সংবাদ মাধ্যমে দাবি করেছিলেন যে, কো-অপারেটিভ সিস্টেমের মাধ্যমে ফ্ল্যাট কেনার জন্য সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি কোম্পানিকে প্রায় চারশো ব্যক্তি ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার করে টাকা দিয়েছিলেন। দাবি করা হয়েছিলো যে, ওই সময় এই কোম্পানির একজন অন্যতম ডিরেক্টর ছিলেন বর্তমান তৃণমূল সাংসদ নুসরত জাহান। প্রতারিতদের বলা হয়েছিল, পরবর্তী চার বছরের মধ্যে তাদের হাজার বর্গফুটের একটি করে ফ্ল্যাট তৈরি করে দেওয়া হবে। তবে, ২০১৮ সালের পরেও ফ্ল্যাট আর মেলেনি। এমনকী জমা করা অর্থও ফেরত পাননি। এরপর থানায় গিয়ে লাভ হয়নি। আদালতে মামলা হলেও শমন পেয়ে হাজিরা দেননি নুসরত। পরে, শঙ্কুদেব পণ্ডার সঙ্গে ইডির দফতরে গিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন প্রতারিতরা।
শঙ্কুদেবের দাবি, প্রতারণার অর্থেই দক্ষিণ কলকাতায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট কিনেছিলেন নুসরত জাহান।
কী দাবি নুসরতের?
নুসরতের দাবি, ওই সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে নিজের ফ্ল্যাট কিনেছিলেন। সেই ঋণ সুদ-সহ ফিরিয়েও দিয়েছেন। কোনও দুর্নীতির সঙ্গে তিনি যুক্ত নন। তিনি বলেন, 'যে সংস্থার সঙ্গে যুক্ত ছিলাম, তাদের থেকেই ১ কোটি ১৬ লক্ষ ৩০ হাজার ২৮৫ টাকার ঋণ নিয়েছিলাম। সেই টাকায় বাড়ি কিনেছি। ২০১৭ সালের ৬ মে সুদ-সহ ১ কোটি ৪০ লক্ষ ৭১ হাজার ৯৯৫ টাকা ফেরত দিয়েছি কোম্পানিকে। ব্যাঙ্কের নথিও আমার কাছে আছে। ৩০০ শতাংশ চ্যালেঞ্জ করতে পারি যে, আমি দুর্নীতিতে যুক্ত নই। আমি এক পয়সা নিলেও এখানে আসতাম না।'
কী বলেছিলেন সেভেন সেন্স ইনফ্রাস্ট্রাকচারের 'অন্যতম ডিরেক্টর' রাকেশ সিং?
রাকেশ সিং আবার দাবি করেন, তাঁদের সংস্থা নুসরতকে কোনও ঋণ দেয়নি। নুসরত টাকা তুলেছিলেন। উল্টে রাকেশ সিং বলেছিলেন, 'আমরা কোথায় ঋণ দিলাম? আমরা তো প্রপার্টিতে পেমেন্ট করেছি। উনি তো অন্য একটি সংস্থা থেকে ঋণ নিয়েছিলেন।'
প্রশ্ন যে, একজন কোম্পানির ডিরেক্টের এভাবে কী কোনও কোম্পানি থেকে ঋণ নিতে পারেন? নিয়ম প্রশ্ন উঠছে। এদিকে নুসরতের দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন রাকেশ। ফলে বিভ্রান্তি বিস্তর। সেদিকেই নজর ইডির।