মমতা মন্ত্রিসভায় নতুন আট মন্ত্রী বুধবার বিকেলে রাজভবনে শপথ নেন। বিধানসভার অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়, বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসু ছাড়াও সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ছিলেন রাজ্যের বিরোদী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। কিন্তু, যাননি তিনি। কেন আমন্ত্রণ সত্ত্বেও শপথ অনুষ্ঠান এড়ালেন তিনি? তা নিয়েই মুখ খুলেছেন শুভেন্দু অধিকারী।
কী বলেছেন শুভেন্দু?
শপথ অনুষ্ঠানের সময় বিধানসভায় ছিলেন বিরোধী দলনেতা। তাঁর সঙ্গেই দেখা যায় বেশ কয়েকজন বিজেপি বিধায়ককে। রাজভবনের বাইরে দাঁড়িয়ে তাঁর শপথ অনুষ্ঠানে না যাওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করেন নন্দীগ্রামের বিধায়ক।
শুভেন্দু অধিকারী বলেছেন, 'আগে কোনও কিছুতেই আমাকে ডাকা হত না। তবে গত কয়েকদিন ডাকছে। এর জন্য ধন্যবাদ। যেতেই পারতাম, কিন্তু নির্দিষ্ট কারণে সেটা পারলাম না।' এরপরই কারণ ব্যাখ্যা করেছেন তিনি। বিরোধী দলনেতার কথায়, 'মন্ত্রিসভায় নতুন মন্ত্রীদের তলিকা দেখছিলাম। সেখানে এমন দু'জনের নাম রয়েছে যাঁরা বিজেপিকে ভোট দেওয়া সনাতনী হিন্দুদের উপর ভোট পরবর্তী হিংসায় সরাসরি জড়িত। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের গুন্ডাতালিকাতেও তাঁদের নাম রয়েছে। এঁরা হলেন উদয়ন গুহ ও পার্থ ভৌমিক। শপথ অনুষ্ঠানে গেলে ওই দুই মন্ত্রীকে নিয়ে কিছু বলতে পারতাম না, উল্টে ওঁদের শুভেচ্ছা জানিয়েছে নমস্কার করতে হল। এতে কোচবিহার ও উত্তর ২৪ পরগা জেলার সনাতনীরা খুব আঘাত পেতেন। তাই যায়নি।'
গত বছর বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর (২রা মে) বাংলায় হিংসা ছড়িয়ে পড়েছিল বলে অভিযোগ বিরোদী দলগুলির। প্রাণ যায় বেশ কয়েকজন বিজেপি কর্মী, সমর্থকের। পাল্টা গেরুয়া দলের বিরুদ্ধে হিংসার অভিযোগ তোলে তৃণমূলও। ভোট পরবর্তী হিংসায় রাজ্যজুড়ে শোরগোল পড়ে যায়। খতিয়ে দেখতে এসেছিল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন। সেই রিপোর্ট কলকাতা হাই কোর্টে জমা দিয়েছিল কমিশন। কমিশনের ওই রিপোর্টে ‘কুখ্যাত দুষ্কৃতী’ বা ‘গুণ্ডা’র তালিকায় নাম ছিল রাজ্যের শাসকদলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীর। এঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য়, মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক, বিধায়ক খোকন দাস, বিধায়ক উদয়ন গুহ এবং কাউন্সিলর জীবন সাহার।
যদিও কমিশনের রিপোর্টকে 'রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত' বলে দাবি করেছিল রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল।