'দর্জাল' স্ত্রী সকলের সামনেই শাশুড়ি ও অল্প বয়সী ননদকে মারধর করার পাশাপাশি তান্ডব চালাচ্ছিল। আর এই ঘটনার প্রতিবাদ করেছিলেন স্বামী । সেই প্রতিবাদী স্বামীকে গায়ে গরম জল ঢেলে পুরুষাঙ্গ কামড়ে জখম করার অভিযোগ উঠলো স্ত্রীর বিরুদ্ধে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে পুরাতন মালদা থানার যাত্রাডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের মেহেরপুর এলাকায় ।
এই ঘটনার পর পাড়া-প্রতিবেশীদের সাহায্যে শরীরের পোড়া অংশ নিয়েই তড়িঘড়ি থানায় ছুটে যান আহত স্বামী । স্ত্রীর বিরুদ্ধে পুরুষ নির্যাতন, শ্বশুরবাড়িতে হামলা এবং মারধর করে খুনের চেষ্টা অভিযোগ দায়ের করেছেন আক্রান্ত স্বামী । যদিও পরে আহতকে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করানো হয় পুরাতন মালদার মৌলপুর গ্রামীণ হাসপাতালে। যদিও শ্বশুরবাড়ির বিরুদ্ধে পাল্টা নির্যাতন চালানোর অভিযোগ তুলেছে ওই গৃহবধূ নাজিমা খাতুন। পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, আহত যুবকের নাম সাদ্দাম হোসেন (৩১) । তিনি পেশায় ক্ষুদ্র হাট ব্যবসায়ী । তার বাড়ি মেহেরপুর গ্রামে। আট বছর আগে কালিয়াচক থানার শ্মশানি এলাকার বাসিন্দা নাজিমা খাতুনকে সম্বন্ধ করে বিয়ে করে সাদ্দাম । তাদের এক নাবালক পুত্র সন্তান রয়েছে। গত কয়েক মাস ধরেই আচমকায় শ্বশুর বাড়ির লোকেদের ওপর নানাভাবে নির্যাতন হয়রানি চালাচ্ছে নাজিমা বলে অভিযোগ। কয়েক দিন ধরে শাশুড়ি নয়ন বানুকে মারধর করছিল পুত্রবধূ নাজিমা। শুধু তাই নয়, বাড়ি থেকে টেনে হিঁচড়ে শাশুড়িকে বের করে দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে ওই গৃহবধুর বিরুদ্ধে। আর তারপরে এদিন সকালে এমন ঘটনার প্রতিবাদ করাতে সাদ্দামের ওপর চড়াও হয় স্ত্রী নাজিমা।
আক্রান্ত সাদ্দাম হোসেন বলেন, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে আমাকে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকতে হয়। বাড়িতে বৃদ্ধা মা এবং একটা ছোট বোন রয়েছে। আমার বাবা বহুদিন আগে মারা গিয়েছেন।এখন স্ত্রী বোন আর মাকে মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। এদিন সকালে আমার বৃদ্ধা মাকে লাঠি পেটা করছিল নাজিমা। তখনই প্রতিবাদ করি। সেই সময় গরম জল আমার পেটে বুকে ঢেলে দেয়। তাতে জ্বলে যায় শরীরের একটা অংশ। পাশাপাশি পুরুষাঙ্গ কামড়ে হাত দিয়ে টেনে ছিঁড়ে নেওয়ার চেষ্টা চালাই স্ত্রী নাজিমা। আমার চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে স্ত্রীর তান্ডব থামায়। এরপরই গ্রামবাসীদের সহযোগিতা নিয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।
যদিও গ্রামবাসীদের একাংশ জানিয়েছেন , ওই মহিলার কয়েক বছর ধরেই তার শ্বশুরবাড়ির লোকেদের বিরুদ্ধে এরকমই আচরণ করে আসছে। সাদ্দাম অত্যন্ত ভালো ছেলে। ব্যবসার কাজ নিয়ে বেশিরভাগ সময় বাইরে থাকে। কিন্তু ওই মহিলা আলাদা থাকতে চাইছে। সেটাই সাদ্দাম মেনে নিতে পারে নি। আর তারপরেই ঘটনাটি ঘটেছে।
এদিকে নিজের বিরুদ্ধে ওঠা সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে গৃহবধূ নাজিমা খাতুন। তার বক্তব্য, সংসারের খরচ ঠিকমতো দেয় না। এনিয়েই এদিন কথা কাটাকাটি হয়েছিল। তবে যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা সঠিক নয়। বরঞ্চ শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই তাকে মারধর করেছে।
পুরাতন মালদা থানার পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে।