একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগ। সিবিআই-ইডির তৎপরতা এবং পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও অনুব্রত মণ্ডলের গ্রেফতারিতে চরম অস্বস্তিতে রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেস। আর আরও অস্বস্তি বেড়েছে যেখানেই শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা যাচ্ছেন, শুনতে হচ্ছে চোর অপবাদ। সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীরা তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীদের চোর, চোর বলে তোপ দাগছেন। যার জেরে বিরক্ত শাসকদল। চোর ইস্যুতে বিস্ফোরক মন্তব্যও করছেন তৃণমূলের নেতারা। কিন্তু এবার সবকিছুকে ছাপিয়ে গেলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। তাঁর মন্তব্যের জেরে কপালে চিন্তার ভাঁজ শাসকশিবিরে।
বরাবর স্বচ্ছ ভাবমূর্তির জন্য আলাদা ভাবে পরিচিত রাজ্যের মন্ত্রী শোভনদেব। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বহু পুরনো অনুগত সৈনিক। তৃণমূলের ক্লিনম্যানও বলা হয়ে থাকে তাঁকে। এহেন শোভনদেবই মেজাজ হারালেন। চোর ইস্যুতে হিংসার কথা উঠে এল স্বভাবসিদ্ধ শান্ত মন্ত্রীর গলায়। প্রকাশ্য কর্মিসভায় চোর বললে ঘুসি মারার কথা বলে বিতর্কে খড়দহের বিধায়ক।
কী বলেছেন শোভনদেব?
প্রসঙ্গত, আগামী ২৯ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে খড়দেহর বিলকান্দা অঞ্চলে একটি প্রস্তুতি কর্মিসভার আয়োজন করে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানে বক্তা ছিলেন মন্ত্রী শোভনদেব। কৃষিমন্ত্রী এদিন বলেন, "মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের গায়ে কোনও কালি নেই। কেউ যদি চোর চোর বলে, আমার গায়ে লাগে। আর তখন মনে হয় মুখটা দেখি আর একটা ঘুসি মারি। মুসি মেরে মুখ ভেঙে দিই। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চ্যালেঞ্জ করে কোনও লাভ নেই।"
আরও পড়ুন বিরোধী জোট না করেই মোদীকে হঠানো সম্ভব! উপায় বাতলালেন ডেরেক
উল্লেখ্য, একসময় বক্সার ছিলেন শোভনদেব। রাজনীতি ছাড়াও বক্সিং রিংয়ে দেখা যেত তাঁকে। তবে বক্সার হওয়ার সুবাদে মুষ্টি এখনও শক্তিশালী। তাই বলে বিরোধীদের ঘুসি মারার কথা আগে কখনও শোনা যায়নি আপাত 'ভদ্রলোক' শোভনদেবের গলায়। এ নিয়ে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরি তো সরাসরি চ্যালেঞ্জ করেছেন, "চুরি করলে লোকে চোর বলবেই, সাধু বলবে না। দেখি কেমন ঘুসি মারেন।" রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছেন, "নম্বর বাড়ানোর চেষ্টা করছেন নেত্রীর কাছে। সাধারণ মানুষকে আর বোকা ভাবা যাবে না। চোরকে চোরই বলবে লোকে। কতজনকে ঘুসি মারবেন?"