Advertisment

নিখোঁজ মা মৃত ভেবে মাটির পুতুল দাহ ছেলেদের, আজব-কাণ্ডে শোরগোল

স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন ওই মহিলা। হঠাৎই একদিন বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
woman missing for near about 15 years, three son arranged funeral by thought their missing mother was died

মাকে মৃত ভেবে মাটির পুতুলের 'সৎকার' তিন ছেলের। ছবি- সন্দীপ সরকার।

দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে নিখোঁজ মা। মাকে মৃত ভেবে মাটির পুতুল বানিয়ে মায়ের 'সৎকার' করলেন তিন ছেলে। এমনই এক বিরল ঘটনা শিলিগুড়ির অদূরে রাঙাপানিতে। ধর্মীয় রীতি মেনে সেই মাটির পুচুল দাহ দাহ করা হল স্থানীয় কালারাম শ্মশানে। সৎকারের ১৩ দিনের মাথায় মায়ের শ্রাদ্ধের কাজও করবেন বলে জানালেন পরিবারের সদস্যরা। ছেলেদের বিশ্বাস তাঁদের মা জীবিত নেই, তাই তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় গ্রামবাসীদের পরামর্শ মেনে এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন ছেলেরা।

Advertisment

শিলিগুড়ির কাছে রাঙাপানি কালারাম জোতের স্টেশন লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন সাবিত্রী দেবী চৌধুরী। স্বামী মারা যাওয়ার পর থেকেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন ওই মহিলা। আজ থেকে ১৫ বছর আগে হঠাৎই একদিন বাড়ি ছেড়ে চলে যান তিনি। তিনি যখন নিখোঁজ হন তখনই তাঁর আনুমানিক বয়স ছিল ৭০।

দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে সাবিত্রীদেবীর খোঁজ না মেলায় গ্রামবাসীদের পরামর্শ মতো মায়ের পুতুল বানিয়ে সৎকার করার পরিকল্পনা করেন তাঁর তিন সন্তান। বিশ্বনাথ চৌধুরী, রঘুনাথ চৌধুরী ও সুজিত চৌধুরীরা গ্রামের পুরোহিতের বিধান মেনে মায়ের সৎকার করেন।

পুরোহিতের পরামর্শ মেনেই পরিবারের সদস্যরা মানব দেহের আকারের একটি মাটির পুতুল তৈরি করেন। সেই পুতুলকে ফুল দিয়ে সাজিয়ে হরিনাম ধ্বনি দিতে দিতে নিয়ে যাওয়া হয় কালারাম শ্মশানঘাটে। সেই পুতুলের শেষ যাত্রায় সামিল হন গ্রামবাসীরাও। শ্মশানে নিয়ে গিয়ে হিন্দু সনাতন ধর্মের রীতিনীতি মেনে সৎকার করা হয় পুতুলরূপী মায়ের।

এই প্রসঙ্গে সাবিত্রী দেবী চৌধুরীর ছেলে বিশ্বনাথ চৌধুরী ও রঘুনাথ চৌধুরী জানান, তাঁদের বাবার মৃত্যুর পর মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলে হঠাৎই একদিন নিখোঁজ হয়ে যান মা। ১৫ বছর ধরে খোঁজ নেই তাঁদের মায়ের। বহু খোঁজাখুঁজির পরও মায়ের সন্ধান মেলেনি মায়ের। শেষমেশ গ্রামবাসীদের পরামর্শে একটি পুতুলকেই মায়ের মতো সাজিয়ে শ্মশানঘাটে সৎকার করা হল। তিন ছেলেই বিশ্বাস যে তাঁদের মা আর জীবিত নেই। এক ছেলে বললেন, ''সৎকারের ফলে নিখোঁজ মায়ের আত্মা মুক্তি পেল।''

ছেলেরা জানিয়েছেন সৎকারের ১৩ দিনের মাথায় মায়ের আত্মার শান্তি কামনায় শ্রাদ্ধ-শান্তির কাজও তাঁরা করবেন। এদিকে
বিরল এই ঘটনায় এলাকায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হতেই শ্মশানঘাটে ভিড় জমান অনেকে। এলাকাবাসীদের অনেকেরই বিশ্বাস, 'পুতুলের সৎকার করলে নিখোঁজ মায়ের আত্মার মুক্তি মিলবে'।

siliguri West Bengal Funeral
Advertisment