শিলিগুড়ির সপ্তমবারের ম্যাঙ্গো ফেস্টিভ্যালে প্রদর্শিত হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে দামী আম ‘মিয়াজাকি’। বিশ্বের বাজারে মহার্ঘ্য এই আমের দাম কেজি প্রতি প্রায় ২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা। অ্যাসোসিয়েশন ফর কনজারভেশন অ্যান্ড ট্যুরিজম (এসিটি) এবং মডেল কেয়ারটেকার সেন্টার অ্যান্ড স্কুল (এমসিসিএস)-এর যৌথ উদ্যোগে গত ৯ জুন থেকে শিলিগুড়ির একটি মলে এই অভিনব আম উৎসব শুরু হয়েছে।
এই আম উৎসবে ২৬২টিরও বেশি জাতের আম প্রদর্শিত হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের ৯ জেলার ৫৫ জন আম চাষি এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন। প্রদর্শনীতে আলফোনসো, ল্যাংড়া, আম্রপালি, সূর্যপুরী, রানিপাসন্দ, লক্ষ্মণভোগ, ফজলি, বিরা, সিন্দু, হিমসাগর, কোহিতুর এবং অন্যান্য আমের প্রদর্শন চলছে।
শিলিগুড়ির এক আমপ্রেমী স্যান্ডি আচার্য জানান, একসঙ্গে এত জাতের আম দেখার সুযোগ পেয়ে তিনি অভিভূত। তিনি আরও জানান, এই উৎসবে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম ‘মিয়াজাকি’ দেখতে পেয়েছেন। তাঁর কথায়, 'বাংলার কৃষকরা তাঁদের বাগানে এই আম চাষ করছেন। এটা জেনে খুব ভালো লাগল।'
আরও পড়ুন- মুরগি ভেবে ছোট্ট ছানার প্রতিপালন, বড় হতেই তার রূপ দেখে চক্ষু চড়কগাছ!
বীরভূমের লাভপুরে মিয়াজাকি আমের চাষ করেছেন শওকত হুসেন। এই আমচাষি জানিয়েছেন, প্রথমবারের মতো এই উত্সবে অংশ নিয়েছেন তিনি। ওই আমচাষি বলেন, 'বাংলাদেশ থেকে চারা এনেছিলাম। পরে সেই চারা বীরভূমের লাভপুরে আমার বাগানে রোপণ করেছিলাম। বাগানে এই আমের দারুণ ফলন হয়েছে। বহু জায়গা থেকে ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। এটি রাজ্যের যে কোনও অংশেই চাষ করা যেতে পারে। এই আমের চাষ কৃষকদের অর্থনৈতিক অবস্থা পরিবর্তন করতে পারে।'
শিলিগুড়িতে এই আম উৎসবের অন্যতম কর্ণধার রাজ বসু জানান, তাঁরা ২৬২টিরও বেশি জাতের আম প্রদর্শনীতে এনেছেন। যার মধ্যে মিয়াজাকি উৎসবের প্রধান আকর্ষণ। তাঁর কথায়, “মানুষজন ওই আমের চারপাশে ভিড় করছেন। উৎসবের মাধ্যমে পর্যটনেরও প্রসার ঘটাতে চাই আমরা। অ্যাসোসিয়েশন ইউনেস্কোর কাছে বাংলাদেশ-দার্জিলিং হিমালয়ান রেলওয়ের (ডিএইচআর) করিডরকে শীঘ্রই আম হেরিটেজ করিডোর বা ইনটুঞ্জেবল কালচারাল হেরিটেজ হিসেবে ঘোষণা করার জন্য ইউনেস্কোর কাছে আবেদন করেছি আমরা।'
আরও পড়ুন- সোমবার থেকেই সাংঘাতিক ঘটনার আশঙ্কা দিলীপের! মারাত্মক ইঙ্গিতে কাঁপুনি ধরালেন বিজেপি নেতা
উল্লেখ্য, ১৯৪০ সালে ক্যালিফোর্নিয়ায় মিয়াজাকি আমের উৎপাদন শুরু হয়েছিল। পরে এটিকে জাপানের মিয়াজাকি শহরে আনা হয় এবং এইভাবে এর নাম হয় মিয়াজাকি আম। সম্প্রতি ভারতীয় কৃষকরা তাঁদের বেশিরভাগই বাংলার চাষিরা তাঁদের বাগানে এই জাতের আম চাষ শুরু করেছেন। এই আম ‘লাল সূর্য’ এবং বাংলায় ‘সুরজা ডিম’ (লাল ডিম) নামেও পরিচিত। এই আমের পুষ্টিগুণ, স্বাদ, রঙ অতি জনপ্রিয়।