মানবদেহে এক ফুট লম্বা গোলাকার কৃমি! যার দরুন দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ। অবশেষে তার অবসান। মঙ্গলবার রোগীর পিত্তনালি থেকে বের করা হল এক ফুট লম্বা কৃমি। জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে জটিল এই অস্ত্রোপচার হয়।
গলব্লাডারে স্টোন। সঙ্গে কমন বাইল ডাক্টে স্টোন। এবং তার থেকে জন্ডিস। এই রোগের কথা আকছার শোনা যায়। কিন্তু তাই বলে বাইল ডাক্টে কৃমি আটকে ঘন ঘন জন্ডিস, এমন উদাহরণ অত্যন্ত বিরল। জলপাইগুড়ি হরিজন বস্তির বাসিন্দা দুখরিয়া বাশফোড় বিগত কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন রোগে অসুস্থ ছিলেন। মাস কয়েক আগে পেটে ব্যথা ও জন্ডিস নিয়ে জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের বিশিষ্ট সার্জেন ডাক্তার সৌমেন মণ্ডলের কাছে আসেন দুখরিয়া। এরপর তাঁকে ভর্তি করে নেওয়া হয় হাসপাতালে।
আরও পড়ুন: জুতা আবিষ্কার! নারী সুরক্ষার্থে ইলেকট্রিক শক দেবে তিনশ টাকার সেফটি সু
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের ডঃ মণ্ডল ও ডঃ শর্মিলা গুপ্তর নেতৃত্বাধীন চিকিৎসকদের দল অস্ত্রোপচার করে দুখরিয়া বাশফোড়ের পিত্তনালি থেকে বের করেন এক ফুট লম্বা গোলাকার এক কৃমি।
এক ফুট লম্বা গোলাকার কৃমি
জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের চিকিৎসক ডাক্তার শর্মিলা গুপ্ত জানান, "এই অপারেশন খুবই জটিল। রোগীর শ্বাসকষ্ট সহ বিভিন্ন উপসর্গ থাকায় আমাদের কাছে অপারেশন বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। স্পাইনাল অ্যানাসথেসিয়া প্রয়োগ করে অপারেশন করা হয়েছে।" এছাড়াও তিনি জানান, "খুব জটিল রোগের অপারেশন না থাকলে সাধারণত এই হাসপাতাল থেকে রোগীদের রেফার করা হয় না।"
আরও পড়ুন: বাবা-মায়ের সঙ্গে গেলেই রেস্তোরাঁয় ২০% ছাড়!
চিকিৎসক ডাঃ মণ্ডলের কথায়, "গোল কৃমি থাকে খাদ্যনালিতে। কোনওভাবে সেটি দুখরিয়ার পিত্তনালিতে ঢুকে গিয়েছিল। যার ফলে তাঁর জন্ডিস এবং পিত্তনালিতে সংক্রমণ হচ্ছিল। লাগাতার চিকিৎসা চালিয়ে প্রথমে তাঁর সংক্রমণ কমানো হয়। এদিন জটিল অস্ত্রোপচার (কোলসিসটেকটমির সঙ্গে কমন বাইল ডাক্ট এক্সপ্লোরেশন) হলো। এই ধরণের ঘটনা খুবই বিরল।"
আপাতত সুস্থই রয়েছেন দুখরিয়া বাশফোড়। তাঁর মেয়ে পিঙ্কি বাশফোড় বলেন, "মা দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত ছিলেন। গলব্লাডারে স্টোন ছিল। আর্থিক কারণে বেসরকারি হাসপাতালে অপারেশন করানো সম্ভব ছিল না। আজ অপারেশন হয়েছে। মা ভাল আছেন। আমরা খুবই খুশি।"