বর্ষসেরা সুপার কিড হুগলির গর্বিতা, ছোট মেয়ের কাহিনীতে গর্ব হবে। বয়স মাত্র এক বছর ন’মাস! আর এই বয়সেই আধো, আধো গলায় বলে দিতে পারে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। শুধু তাই নয়, যে কোন দেশের নাম হোক, অথবা হোক ফল, ফুলের নাম…! সবটাই তার ঠোঁটের ডগায়। কুর্নিশ আদায় করেছে ছোট গর্বিতার এই প্রতিভা।
ইতিমধ্যেই জিতে নিয়েছে বর্ষসেরা ‘সুপার কিড’ খেতাব, ছোট্ট এইটুকু বয়সে গর্বিতার বুদ্ধিদীপ্ত মস্তিষ্ক অবাক করেছে সকলকেই। একইসঙ্গে বর্ষসেরা গারলিশ লুক- এ প্রথম হয়েছে ছোট্ট গর্বিতা চক্রবর্তী। পরিবার থেকে পড়শি সর্বত্রই প্রশংসার ঝড়। গৌরব ও পায়েল-এর একমাত্র কন্যা গর্বিতা। বয়স এখনও দুই বছরও পেরোয়নি। মাত্র দেড় বছর বয়সে জাতীয় স্তরের সুপার কিড প্রতিযোগিতায় সব থেকে বেশি বুদ্ধিধারী বাচ্চার খেতাব পেয়েছে। বর্ষসেরা সুপার কিডের তকমা পেয়ে উচ্ছ্বসিত গর্বিতা বাবা-মা। হুগলির এই ‘বিস্ময় শিশুকন্যা’কে ঘিরে এখন রীতিমত শোরগোল পড়ে গিয়েছে গোটা এলাকা জুড়ে।
গর্বিতার বাবা গৌরব পেশায় অভিনেতা, মা গৃহবধূ। ছোট মেয়ের এমন প্রতিভা রীতিমত অবাক করেছে তাদেরও। গর্বিতার মা পায়েল দেবী বলেন, ‘মাত্র ৬ মাস বয়স থেকেই যখন ওকে নিয়ে পার্কে যেতাম তখনই দেখতাম ও যা শুনছে বা দেখছে বাড়িতে এসে তাই নকল করার চেষ্টা করছে। এমনকী দিদিভাইয়ের কান্নার স্টাইলও হুবহু নকল করেছে আদরের গর্বিতা। সেই থেকে ওর স্মৃতিশক্তির দিকে লক্ষ্য রাখা শুরু করি। বয়স কিছুটা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেই ও একবার শুনেই ফল, ফুল, পশু-পাখি, নেতা-মন্ত্রীদের নাম মুখস্থ বলে দিতে পারে’।
বর্ষসেরা সুপার কিডের খ্যাতিতে আনন্দে আত্মহারা পায়েলদেবী। তিনি আরও বলেন, ‘এখনকার অনেক মা-বাবাই তাঁদের সন্তানদের ওপর অনেক কিছুই চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, অনেক ক্ষেত্রে যা বাচ্চাদের স্বাভাবিক প্রতিভা ও বিকাশকে নানাভাবে ব্যাহত করতে পারে।বাচ্চাদের তাদের মত করে বড় হতে দিন, ওদের ইচ্ছা আগ্রহের দিকে বাড়তি নজর রাখুন, কারণ প্রতিটি বাচ্চা’ই কিছু কিছু প্রতিভা নিয়েই জন্মায় বাবা-মায়ের কাজ সেই প্রতিভা যাতে বিকশিত হয় সেই দিকটা নিশ্চিত করা।" তিনি বলেন, "আমি চাই, আমার মেয়ে বড় হয়ে ওর নিজের পছন্দের বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করুন, স্বাভাবিক ছন্দেই বেড়ে উঠুক ও! গর্বিতা যেন মানুষের মত মানুষ হয়ে উঠতে পারে এটা ঈশ্বরের কাছে আমার প্রার্থনা’।
মেয়ের এই সাফল্যে গর্বিতার বাবা গৌরব চক্রবর্তী বলেন, ‘অনলাইনে ইন্ডিয়ান সুপার কিড প্রতিযোগিতায় মেয়ের নাম দেন। তারপর কলকাতায় প্রতিযোগিতার অংশগ্রহণ করে ছোট গর্বিতা।ওই প্রতিযোগিতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বাচ্চারা এসেছিল। সেখানে তার হাঁটা, চলা, হাসি, এই সবকিছুর উপর চলে নিবিড় পরীক্ষা। একইসঙ্গে বাচ্চাদের বেশ কিছু প্রশ্নও জিজ্ঞেস করা হয়। এর মধ্যে যেমন রয়েছে একাধিক নেতা মন্ত্রীর নাম তেমন রয়েছে দৈনন্দিন ব্যবহারের নানান জিনিস থেকে ফল, ফুল। পশু পাখির নামও। সব প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিয়ে সেরার সেরা শিরোপা ছিনিয়ে নেয় আদরের গর্বিতা’। আগামীদিনেও মেয়ের সাফল্য কামনা করেছেন গৌরব।