রাজ্যের পর্যটন মানচিত্রে পূর্ব মেদনীপুর জেলার নাম ওপরের দিকেই থাকে। এজেলাতেই রয়েছে সমুদ্রনগরী দিঘা। যার টানে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তো বটেই ভিনরাজ্য থেকেও বছরভর পর্যটকের দল ভিড় জমায় দিঘায়। এছাড়াও এজেলায় রয়েছে মন্দারমণি, শঙ্করপুরের মতো নজরকাড়া ট্যুরিস্ট স্পট। তবে এগুলি ছাড়াও এই পূর্ব মেদিনীপুরেই রয়েছে আরও এক চিত্তাকর্ষক পর্যটন কেন্দ্র। ঝটিকা সফরে বেড়িয়ে আসতে পারেন অনিন্দ্যসুন্দর সেই প্রান্ত থেকে। একবার গেলেই মন বাঁধা পড়ে যাবে এপ্রান্তে।
রাজ্যের অন্যতম বড় ফুল চাষের জায়গা পূর্ব মেদিনীপুরের পাঁশকুড়া। এই পাঁশকুড়ার ক্ষীরাই এলাকায় বিঘে-বিঘে জমিজুড়ে ফুল চাষ হয়। এতল্লাটকে 'ফুলের দেশ' বলা হয়ে থাকে। বছরভর এখানে ফুলের চাষ হয়। তবে শীতের মরশুমে হরেক রঙের ফুলের চাষ হয় ক্ষীরাইয়ে। বাহারি এই ফুলের সমারোহ দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে পর্যটকেরা ভিড় জমান ক্ষীরাইয়ে।
একদিন বা একবেলার জন্য ছুটি কাটাতে হলে ক্ষীরাই অন্যতম সেরা চয়েজ। এখানে যত দূর চোখ যাবে বিঘে-বিঘে জমিজুড়ে রঙবাহারি ফুল দেখতে পাবেন। অসাধারণ বাহারি ফুলের সমারোহ দেখে হৃদয় জুড়িয়ে যাবে। এখানকার পরিবেশও বেশ মনোরম। বাগানের ফুলে ফুলে ডানা মেলে উড়তে থাকা রঙিন প্রজাপতি নজর এড়াবে না। গাছে-গাছে মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌমাছির দলের দেখা মিলবে।
এককথায় এক ঝটকায় মন ভালো করে দেওয়ার মতো পরিবেশ পেতে হলে ক্ষীরাই অন্যতম সেরা ঠিকানা। স্থানীয় চাষীরাই ফুলের চাষ করেন । গত দু'তিন বছরের মধ্যে ক্ষীরাই তার ফুলের জন্য জনপ্রিয়তা পেয়েছে। রাজ্যের বিভিন্ন জেলা তো বটেই নতুন বছরে পার্শ্ববর্তী পড়শি রাজ্য থেকেও পর্যটকরা আসছেন ক্ষীরাইয়ের ফুলের সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে। বাগানের সামনে এসে দাঁড়িয়ে এক পলক দেখে মনে হবে এক চিত্র শিল্পীর আঁকা বিরাট একটা রঙিন ক্যানভাস।
আরও পড়ুন- ‘অভিষেক গুরুত্বপূর্ণ, তবে মমতার সঙ্গে তুলনা চলে না’, সাফ কথা বর্ষীয়ান তৃণমূল নেতার
চারিদিকে শুধু ফুল আর ফুল। মাঠে গাঁদা ফুলই বেশি। এছাড়াও রয়েছে অ্যাস্টর, চন্দ্রমল্লিকা, ডালিয়া প্রভৃতি। তবে গোলাপ ফুলের বাগান নেই বললেই চলে। দোকানে যে গোলাপ বিক্রি হচ্ছে তা সবটাই পার্শ্ববর্তী পাঁশকুড়া বা কোলাঘাট থেকে আনা হয়।
ক্ষীরাইয়ে পর্যটকদের ভিড়।
নতুন বছর শুরুর এই আবহে রোজ হাজার-হাজার পর্যটক আসছেন ক্ষীরাইয়ে। ফুলের বাগান ঘুরে দেখছেন তাঁরা। দেদার তুলছেন ছবি, হচ্ছে রিল। অনেকেই ফুল ও ফুলের চারাও কিনছেন। মেয়েরা ফুল দিয়ে তৈরি ব্যান্ড মাথায় দিয়ে ঘুরছেন। এক কথায় কয়েক ঘন্টা সুন্দর সময় কাটাতে ক্ষীরাইয়ের জুড়ি মেলা ভার।
হাওড়া বা শিয়ালদহ থেকে ট্রেনে ক্ষীরাই স্টেশনে নামতে হবে। সেখান থেকে টোটো বা অটো ভাড়া করে নিলেই পৌঁছে যাবেন ফুলের উপত্যকায়। ক্ষীরাইয়ের ফুলবাগানগুলির আশেপাশে গড়ে উঠেছে প্রচুর অস্থায়ী দোকানপাট। ঝটিকা সফরে এখানে এলে খাবারের দোকানের অভাব হবে না।