প্রেমিকার কথা মতোই তাঁকে বিয়ে করতে আত্মীয়দের সঙ্গে নিয়ে বরের বেশে নির্দিষ্ট ঠিকানায় পৌঁছে গিয়েছিলেন প্রেমিক । কিন্তু কনে বেশে প্রেমিকার দেখা মেলেনি। প্রেমিকার এই 'ছলনা' কিছুতেই যেন মানতে পারেননি প্রেমিক। তাই প্রেমিকাকে শবক শেখাতে বর বেশেই প্রেমিক রবিবার রাতে সটান থানায় পৌঁছে গিয়েছিলেন। কাটোয়া থানায় প্রেমিকার বিরূদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে তবেই তিনি বাড়ি ফিরেছেন। কাটোয়া থানার আই সি জানিয়েছেন, অভিযোগ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রেমিক নয়ন ঘোষের বাড়ি নদিয়ার কালীগঞ্জ থানার বালিয়াডাঙ্গা ফরিদপুরে। তিনি রাজস্থানের জয়পুরে সোনার গয়না তৈরির কাজ করেন। নয়নের কথা অনুযায়ী তাঁর সহকর্মী সোমনাথ ঘোষের বাড়ি মুর্শিদাবাদের শক্তিপুরে। ওই সহকর্মীর মাধ্যমেই বর্ধমান শহরের দত্তপাড়ার এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তার পর থেকে মাঝেমধ্যেই তিনি বর্ধমান স্টেশনে গিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে দেখা করতেন । ক্রমেই তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে । নয়নের দাবি, রবিবার ১৭ ডিসেম্বর তাঁর প্রেমিকা তাঁকে বিয়ে করবেন বলে জানিয়েছিলেন।
এমনকী উভয়ের সুবিধার জন্য কাটোয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে বিয়ের আয়োজন করা হবে বলেও ওই তরুণী নাকি তাঁকে জানায়। কিন্তু পঞ্জিকা মতে ১৭ ডিসেম্বর বিয়ের দিন নির্দিষ্ট নেই। তাহলে কি করে এই বিয়ের জন্যে এই তারিখটা ধরা হল? উত্তরে নয়ন বলেন, "আমার প্রেমিকা জানিয়েছিল তাঁর দাদু মারা যাওয়ার এক বছর পূর্ণ হবে ১৬ ডিসেম্বর । তাই ১৭ ডিসেম্বর তারিখটাই বিয়ের জন্য নির্দিষ্ট করতে।"
প্রেমিকার বিরুদ্ধে প্রতারণার একগুচ্ছ অভিযোগ নিয়ে কাটোয়া থানায় বর বেশে দাঁড়িয়ে প্রেমিক।
প্রেমিকার কথা বিশ্বাস করেছিলেন প্রেমিক নয়ন। প্রেমিকার কথা মতোই রবিবার বিয়ের দিন নির্দিষ্ট হওয়ায় ওই দিন ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী নয়নের বাড়িতে বিভিন্ন অনুষ্ঠানও সারা হয়। সেই অনুষ্ঠান শেষে প্রায় ১৫ জন বরযাত্রীকে নিয়ে নৌকায় চড়ে ভাগীরথী পেরিয়ে কাটোয়ার গোয়ালপাড়া ঘাটে চলে যান নয়ন। তবে ততক্ষণেও নয়নের প্রেমিকার বাড়ির লোকজনের কেউই ঘাটে এসে পৌঁছোননি।
আরও পড়ুন- Premium: ‘চিকিৎসা জাদুঘর’, যুগান্তকারী সৃষ্টির অভাবনীয় নজির গড়ার পথে বিলেত ফেরত প্রবীণ চিকিৎসক
নয়ন বর বেশেই নদীর ঘাটে বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করতে থাকেন। তাড়াতাড়ি আসার জন্য তিনি বারবার প্রেমিকাকে ফোনও করেন। নয়ন বলেন, "যতবার আমি ফোন করেছি ততবারই আমার প্রেমিকা আমায় বলে এখনই লোক যাচ্ছে। এই করতে করতে দুপুর গড়িয়ে সন্ধ্যা হয়ে যায়।"
আরও পড়ুন- জাঁকিয়ে ঠান্ডা বঙ্গে! বড়দিনের আগেই পারদ পতনে নয়া রেকর্ড?
তার পরেও বেশ কিছুক্ষণ প্রেমিকার জন্য পথ চেয়ে নদীর ঘাটে বসে থাকেন নয়ন। এরই মধ্যে প্রেমিকা তাঁর ফোনের সুইচ অফ করে দিলে নয়ন বুঝতে পারেন যে তিনি প্রতারণার শিকার হয়েছেন। ক্ষোভে-অভিমানে নয়নও তাঁর প্রেমিকাকে শবক শেখাতে তৈরি হন। সোজা ওই রাতেই তিনি পৌঁছে যান কাটোয়া থানায়। প্রেমিকার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন তিনি। পুলিশ জানিয়েছে অভিযোগ জমা পড়েছে। সেই মতো তদন্তও শুরু হয়েছে।