টানা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশির পর অবশেষে গ্রেফতার করা হয়েছে কংগ্রেসের আইনজীবী নেতা কৌস্তভ বাগচিকে। শনিবার ভোরেই কৌস্তভের ব্যারাকপুরের বাড়িতে পৌঁছে যায় পুলিশ। তাঁকে গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়া হয় বড়তলা থানায়। 'হয়রানি করতেই এই গ্রেফতারি। মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেয়েছেন।' গ্রেফতার করে নিয়ে যাওয়ার সময় এমনই মন্তব্য করেছেন কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি। এদিন গ্রেফতার করার সময় পুলিশের সঙ্গে তুমুল কথা কাটাকাটি হয় কংগ্রেসের আইনজীবী এই নেতার। কৌস্তভের বিরুদ্ধে একাধিক জামিনঅযোগ্য ধারায় মামলা পুলিশের।
উল্লেখ্য, সাগরদিঘি উপ-নির্বাচনের ফল প্রকাশের দিনেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে আক্রমণ শানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অধীর চৌধুরীর মেয়ে ও গাড়িচালকের মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেদিন বলেছিলেন, 'এত বড় বড় কথা বলছে। তাঁর মেয়ের আত্মহত্যা নিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করলে কিছু বলতে পারবে? তাঁর গাড়িচালকের আত্মহত্যা , খুন নিয়ে যদি বলি জোড়া খুন, তাহলে কি কিছু বলতে পারবে? আমার মুখ খোলাবেন না?'
আরও পড়ুন- ‘৫০০ আর ২৮শে চুল্লু পেলেই ব্যস, দিদি জিন্দাবাদ’, অকপট কংগ্রেসের কৌস্তভ বাগচি
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই আক্রমণের পর তাঁকে পাল্টা আক্রমণের কৌশল নেয় কংগ্রেসও। তৃণমূল সুপ্রিমোকে নিয়ে লেখা অবসরপ্রাপ্ত আইএএস অফিসার দীপক ঘোষের লেখা বইয়ের কপি ছড়িয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় কংগ্রেস। সাংবাদিক বৈঠকে কংগ্রেস নেতা কৌস্তভ বাগচি বলেন, 'দীপক ঘোষ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে যে বই লিখেছিলেন তার সফট কপিও যদি কেউ চান মিলবে। আমাকে ফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। কিছু হলে মমতা ব্যানার্জি দায়ী থাকবেন।'
এরপরেই শনিবার ভোররাতে কংগ্রেসের এই যুব নেতার ব্যারাকপুরের বাড়িতে পৌঁছে যায় বটতলা থানার পুলিশ। চলে টানা জিজ্ঞাসাবাদ ও তল্লাশি অভিযান। এরপর সকাল ৮ নাগাদ পুলিশের আরও একটি দল পৌঁছোয়। তখনই গ্রেফতার করা হয় কৌস্তভ বাগচিকে। গ্রেফতারির সময় পুলিশের সঙ্গে তুমুল কথা কাটাকাটি হয় কংগ্রেসের আইনজীবী নেতার।
আরও পড়ুন- পঞ্চায়েতে বিরাট ‘খেলা’, চোখ খুলে দিল সাগরদিঘি
ততক্ষণে কৌস্তভের বাড়িতে পৌঁছে গিয়েছেন যুব কংগ্রেসের নেতা-কর্মীরাও। পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান তুলতে থাকেন তাঁরা। সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় কৌস্তভ জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর রাজনৈতিক লড়াই শুরু হল। আইনি পথেই তিনি এই লড়াই চালিয়ে যাবেন। এরপর বড়তলা থানায় নিয়ে যাওয়া হয় কৌস্তভ বাগচিকে। থানার বাইরে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কংগ্রেস নেতা-কর্মীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী জানিয়েছেন, কৌস্তভের পাশে আছে দল, আইনি পথেই লড়াই চলবে।