থানা চত্বরে এক যুবকের অস্বাভাবিক মৃত্যুতে চাঞ্চল্য ছড়াল বীরভূমের সাঁইথিয়ায়। মৃতদেহ তড়িঘড়ি উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে সিউড়ি মর্গের বাইরে নামিয়ে দেওয়া হয়। দেহ দীর্ঘক্ষণ মর্গের বাইরে পরে থাকে। চিকিৎসকরাও দেহ মর্গের ভিতর ঢোকাতে রাজি হননি।
মৃত যুবকের নাম সমীর লেট (৩৫)। বাড়ি রামপুরহাট পুরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের ব্রাহ্মণীগ্রাম গুদামপাড়ায়। পেশায় রাজমিস্ত্রির সঙ্গে সেন্টারিংয়ের কাজ করত। তাঁর বাড়িতে রয়েছেন বৃদ্ধা মা, প্রতিবন্ধী দিদি।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার দুপুরে সাঁইথিয়া থানা চত্বরে টিনের ছাউনির বাঁশে গলায় দড়ি দেওয়া ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পায় পুলিশ। পুলিশ তড়িঘড়ি তার মৃতদেহ উদ্ধার করে সিউড়ি মর্গে পাঠায়। কিন্তু মৃতদেহের সঙ্গে কোন পুলিশ না যাওয়ায় জটিলতার সৃষ্টি হয়। মৃতদেহের কোন পরিচয় না মেলায় দীর্ঘক্ষণ হাসপাতালের বাইরে পরে থাকে দেহ। এনিয়ে হাসপাতাল চত্বরে চাঞ্চল্য শুরু হয়। মর্গের চিকিৎসক মৃতদেহ নিতে অস্বীকার করেন। দীর্ঘক্ষণ পর পুলিশ গিয়ে মৃতদেহ সিউড়ির পুলিশ মর্গে ঢোকায়।
ভাইয়ের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন দিদি সুমিতা ও বৃদ্ধা মা। সুমতি লেট বলেন, “বছর আটেক আগে ভাইয়ের বিয়ে হয়েছিল। দুই কন্যা সন্তান নিয়ে ভাইয়ের বউ বাড়ি ছেড়ে চলে যায়। এরপর পাড়াতেই অন্যজনকে পুনরায় বিয়ে করে। ভাইয়ের সঙ্গে স্ত্রীর প্রায় দেখা হতো। চোখের সামনে স্ত্রীকে দেখতে পেয়ে মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছিল ভাই। দুই মেয়ে থাকলেও তাদের সঙ্গে ভাইয়ের দেখা হতো না। সোমবার খুব সকালে সাইকেল নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যায়। কোথায় গিয়েছিল কেউ জানতাম না। বিকেলের দিকে সাঁইথিয়া থানার পুলিশ মৃত্যুর খবর দেয়”।
এই ঘটনা নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে সাঁইথিয়া থানার পুলিশ। খবর পেয়ে সাঁইথিয়া থানায় পৌঁছয় জেলার উচ্চ পর্যায়ের পুলিশ আধিকারিকরা। কিন্তু সমীর সাঁইথিয়া গেল কিভাবে? তাই নিয়েই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাছাড়া পুলিশ মৃতদেহ নিয়ে সাঁইথিয়া থানা কেন লুকোচুরি খেলছিল? সেটা নিয়েও মৃত্যুর কারণ নিয়ে সন্দিহান দানা বাঁধতে শুরু করেছে। মৃতদেহ সিউড়ি থেকে নিয়ে আসা নিয়ে পুলিশের তৎপরতা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।