একেই বলে 'রাখে হরি মারে কে'। চলন্ত ট্রেনের তলায় পরে সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এলেন এক ব্যক্তি। তাঁকে ট্রেনের তলায় পরে যেতে দেখে চলন্ত ট্রেন থেকে ঝাঁপ দেন তাঁর স্ত্রীও। অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন তিনিও।
রবিবার সকালে ১০টা ১২ ডাউন বর্ধমান লোকাল একটু দেরিতে চুঁচুড়া স্টেশনে ঢোকে। আগের কাটোয়া লোকাল বাতিল থাকায় প্ল্যাটফর্মে তখন ভালো ভিড় ছিল। ট্রেন প্ল্যাটফর্মে ঢুকতেই ট্রেনে ওঠার জন্য হুড়োহুড়ি শুরু হয়। ব্যাগপত্তর আর কয়েকটি আলুর বস্তা ট্রেনের মাঝামাঝি কামরায় তুলে নিজে উঠতে গিয়ে ধাক্কাধাক্কিতে ট্রেনের তলায় পড়ে যান তরুণ মুখি নামে ওই ব্যক্তি। ট্রেন ও প্ল্যাটফর্মের ফাঁক গলে স্বামীকে পরে যেতে দেখেন স্ত্রী ললিতা।
ট্রেন তখন চলতে শুরু করেছে। হঠাৎ ঝাঁপ দেন ললিতাও। তিনি প্ল্যাটফর্মে ছিটকে পড়তেই হইহই করে ওঠেন সবাই। ছুটে যান কর্তব্যরত জিআরপি কর্মীরা। সবাই মিলে ওই বধূকে তোলেন। স্বামীর চিন্তায় কান্নায় ভেঙে পড়েন ললিতা। ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে বেরোতেই দেখা যায়, রেললাইন থেকে উঠে আসছেন তরুণ। সম্পূর্ণ সুস্থ, গায়ে আঁচড়ও লাগেনি।
সবাই তাঁকে ধরাধরি করে নিয়ে এসে প্ল্যাটফর্মে যাত্রী আসনে বসালে, তরুণ মুখি বলেন, 'নতুন জীবন পেলাম।' তাঁর জন্য স্ত্রীর আকুতি দেখে প্ল্যাটফর্মেই শপথ নেন, আর নেশা করবেন না।
তরুণ ও ললিতা জানান, তাঁরা দিনমজুর। ঝাড়গ্রাম থেকে হগলিতে আলু তোলার কাজ করতে এসেছিলেন। মাসখানেক ধরে পোলবার বীরেন্দ্রনগর ডুবির ভেরী অঞ্চলে আলু তোলার কাজ করছিলেন। দু'জন শিশু-সহ ২২ জনের দলে তাঁরা ছিলেন।
কাজ শেষে রবিবার সবাই মিলে দেশের বাড়ি ঝাড়গ্রামে ফিরছিলেন। এজন্য চুঁচুড়া থেকে হাওড়া যাওয়ার ট্রেনও ধরেন। কিন্তু, ভিড় ট্রেনে উঠতে গিয়েই বিপত্তি। তরুণ বলেন, 'একটু নেশা করেছিলাম। ভুল হয়েছিল। নতুন জীবন পেয়েছি। আর নেশা করব না।' ট্রেনে চলে যাওয়া সঙ্গীদের ফোন করে খবর দিয়ে হাওড়া যাওয়ার পরের ট্রেন ধরেন দম্পতি।