/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/03/russia-attack_new.jpg)
ইউক্রেনে জারি রুশ আগ্রাসন।
আর যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, রুশ সেনাবাহিনীর আক্রমণ এ বার ইউক্রেনের নাগরিকদের উপর। অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে হাসপাতাল, স্কুল, দোকান-বাজারের উপর ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করছে পুতিন-সেনা। মুহুর্মুর্হু বোমা ফেলছে শহরবাসীর উপর। আহত হচ্ছেন বহু সাধারণ মানুষ। রাস্তাতেই মৃত্যু হচ্ছে অনেকের। এমনই অভিযোগ ইউক্রেনের। হতাহতের সংখ্যা বহু। জানিয়েছে ইউক্রেন প্রশাসন।
ইউক্রেনে রাশিয়ার হামলায় বিপুল সংখ্যক সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে। আগেই এমন অভিযোগ করছিল ইউক্রেন প্রশাসন। এবার জেলেনস্কি সরকারের সেই অভিযোগেই কার্যত সিলমোহর দিল রাষ্ট্রসংঘ। গত ২৪ ফেব্রুয়ারি রাশিয়া হামলা শুরুর পর থেকে ইউক্রেনে ৫৯৬ জন সাধারণ নাগরিক প্রাণ হারিয়েছেন। এমনটাই জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের কর্তারা।
এই ব্যাপারে জেনেভায় রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কার্যালয় জানিয়েছে, নিহত সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে ৪৩টি শিশুও রয়েছে। হামলায় আহত হয়েছে আরও ৫৭টি শিশু। সব মিলিয়ে আহত সাধারণ নাগরিকের সংখ্যা ১,০৬৭। ২৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ১২ মার্চের মধ্যে এই পরিসংখ্যান বলেই রাষ্ট্রসংঘ জানিয়েছে।
ইউক্রেনের দাবি, রাশিয়ার নতুন কৌশল হল নাগরিকদের উপর আক্রমণ করে প্রশাসনের চাপ বাড়িয়ে দেওয়া। ইতিমধ্যে খাদ্য ও পানীয়ের সমস্যা, বেকারত্বের সমস্যা শুরু হয়ে গিয়েছে জেলেনস্কির দেশে। সংবাদ সংস্থার দাবি, শুক্রবারই রুশ বাহিনীর এই নয়া কৌশলের প্রমাণ মিলেছে। একটি জুতোর কারখানা, একটি মানসিক হাসপাতাল এবং বহুতল আবাসনে বোমা ফেলেছে রুশ সেনা। তাতে বেশ কয়েক জন নাগরিকের হতাহতের খবর মিলেছে। আমেরিকার সংবাদমাধ্যম সিএনএন জানাচ্ছে, এ ভাবেই ইউক্রেনের উপর নতুন পদ্ধতিতে চাপ সৃষ্টি করছে রাশিয়া।
আরো পড়ুন: যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে ভয়াবহ আকার নিতে পারে করোনা, সাবধান করল বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা
রাষ্ট্রসংঘ জানাচ্ছে, উত্তর-পশ্চিম ইউক্রেনের ডিনিপ্রোর একটি কিন্ডারগার্টেন স্কুল, একটি বহুতল আবাসন এবং দোতলা জুতো কারখানার উপরও ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করার খবর মিলেছে। রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মুখপাত্র লিজ থ্রোসেল জানান, ইউক্রেনের স্কুল, হাসপাতাল এবং কিন্ডারগার্টেনগুলিতে ধ্বংসাত্মক হামলা চলেছে। রুশ বাহিনীর আক্রমণে অন্তত ২৬টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর মিলেছে। অন্য দিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) মুখপাত্র তারিক জাসারেভিচ জানান, পশ্চিম ইউক্রেনে দুই স্বাস্থ্যকর্মী-সহ ১২ জন নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে খবর পেয়েছেন তাঁরা। তা ছাড়া আহত ৩৪ জনের মধ্যে রয়েছেন আট জন স্বাস্থ্যকর্মী।
যুদ্ধের ফলে ইতিমধ্যে ইউক্রেনে শুরু হয়েছে খাদ্যসঙ্কট। পানীয় জলের সরবরাহ কমে আসছে। চিকিৎসা পরিষেবা পাচ্ছেন না মানুষজন। ক্রমশ বাড়ছে শরণার্থী সমস্যা। রাষ্ট্রসংঘ জানাচ্ছে, ইতিমধ্যে প্রায় ২৫ লক্ষ ইউক্রেনীয় দেশ ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিতে বাধ্য হয়েছেন।
মারিউপোলের পরিস্থিতি এমনই যে, সেখানকার মেয়র দাবি করেছেন রাস্তায় পড়ে থাকা মৃতদেহ গোনাই অসম্ভব হয়ে পড়েছে। কারণ, রুশ সেনার বোমা এবং ক্ষেপণাস্ত্র বর্ষণে কোনও বিরতি থাকছে না। মেয়রের উপদেষ্টা পিওত্র আন্দ্রিউশেঙ্কার কথায়, ‘‘রাশিয়া আমাদের সঙ্গে যা করছে, তা বর্ণনার জন্য কোনও শব্দ আবিষ্কার হয়নি।’’