আতঙ্ক বাড়াচ্ছে করোনা। একের পর এক ঢেউ সামলে কিছুটা হলেও স্বাভাবিক হয়েছে জনজীবন তার মাঝেই বাড়ছে উদ্বেগ। চিন সেই সঙ্গে দক্ষিণ কোরিয়ার বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। দক্ষিণ কোরিয়ায় একদিনে ৪ লক্ষের বেশি মানুষ একদিনে মারণ ভাইরাসের স্বীকার। এই অবস্থায় বিশ্বের সমস্ত দেশকে সতর্ক করল হু (WHO)। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বক্তব্য, এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র, উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে আগামীতে আরও বড় বিপদ অপেক্ষা করছে।
মাস খানেক আগে গোটা পৃথিবীতেই কোভিডের (Covid) দাপট কমে এসেছিল। কিন্তু গত এক সপ্তাহে তা ফের হুড়মুড় করে বাড়তে শুরু করেছে। মনে করা হচ্ছে, এর পেছনে রয়েছে ওমিক্রনের (Omicron) অতিসংক্রামক ভ্যারিয়েন্ট বিএ.১ এবং বিএ.২। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার এক কর্তার বক্তব্য, “বিধিনিষেধ শিথিল করার কারণে বাড়াবাড়ি সংক্রমণ শুরু হয়েছে, এইসঙ্গে পর্যাপ্ত কোভিড পরীক্ষাও হচ্ছে না। অর্থাৎ, যে পরিস্থিতি আমরা দেখছি মহামারীর প্রকৃত অবস্থা তারচেয়েও ভয়াবহ।”
হু-র তরফে জানানো হয়েছে, গত সপ্তাহের তুলনায় বিশ্বজুড়ে ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে কোভিড সংক্রমণ। মার্চ মাসের ৭-১৩ তারিখের মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন ১ কোটি ১০ লক্ষ মানুষ, এই সময়ে গোটা পৃথিবীতে করোনায় মৃতের সংখ্যা ৪৩ হাজার। জানুয়ারি মাসের পর এতখানি বাড়বাড়ন্ত দেখা যায়নি। এদিকে অফ্রিকার দেশগুলিতেও ১২ শতাংশ বৃদ্ধি কোভিড সংক্রমণ। ক্রমশ ঊর্ধ্বমুখী মৃতের সংখ্যাও। ইউরোপে নতুন করে বাড়তে শুরু করেছে কোভিড। মার্চের শুরু থেকে অস্ট্রিয়া, জার্মানি, সুইজারল্যান্ড, নেদারল্যান্ড ও ইংল্যান্ডে পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
এর মধ্যেই জরায়েলে পাওয়া গেল করোনার নতুন প্রজাতির সন্ধান। করোনার এই দুই নতুন প্রজাতি হল বিএ.১ এবং বিএ.২। একথা জানিয়েছে ইজরায়েলের স্বাস্থ্য দফতর। টুইটে ইজরায়েলের স্বাস্থ্য দফতর জানিয়েছে, বেন গুরিওন বিমানবন্দরে যাত্রীদের আরটিপিসিআর টেস্ট চলছিল। তখনই করোনার এই নতুন দুই প্রজাতির সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।
আরো পড়ুন: বিজ্ঞানীদের আশঙ্কাই সত্যি! করোনার নতুন প্রজাতির খোঁজ ইজরায়েলে
দিক কয়েক আগেই বিশ্বস্বাথ্য সংস্থার সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ মারিয়া ভ্যান খেরখোভ একটি টুইটার বার্তায় বলেছেন, কোভিড-১৯-এর ওমিক্রন রূপটি এখনও বিশ্বজুড়ে তীব্র পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়ছে। সেই সঙ্গে তিনি বলেন, সংক্রমণ কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে মানুষের মধ্যে সচেতনতার একটা অভাব চোখে পড়েছে। আর তারই ফল ক্রমবর্ধমান সংক্রমণ।
মারিয়া ভ্যান খেরখোভ আরও উল্লেখ করেছেন, সংক্রমণ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এখনও অনেকে দেশেই উচ্চ মৃত্যুহার লক্ষ করা যাচ্ছে যা রীতিমত উদ্বেগের। সেই সঙ্গে তিনি বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশগুলিকে দ্রুত টিকাদান সম্পন্ন করার দাওয়াইও দিয়েছেন। বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে নতুন সাপ্তাহিক কোভিড-১৯ মামলার সংখ্যা ৭-১৩ মার্চের মধ্যে ৮ শতাংশ বেড়েছে। ডব্লিউএইচও তার সাপ্তাহিক প্রতিবেদনে বলেছে, ভিয়েতনাম এবং জার্মানিতে সর্বাধিক সংখ্যক নতুন কেস রিপোর্ট করা হয়েছে।