ইজরায়েল-প্যালেস্তাইনের মধ্যে সংঘর্ষ অব্যাহত। দুই পক্ষের রকেট যুদ্ধের জেরে একরাতে গাজায় ৩৫ জন প্যালেস্তানীয়র মৃত্যু হয়েছে। নিহত হয়েছেন ৩ জন ইজরায়েলি। বুধবার ভোর রাতে প্যালেস্তাইন থেকে ইজরায়েলের তেল আভিভ এবং বিরশেবার দিকে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসে শখানেক রকেট। পাল্টা দ্বিগুণ রকেট বর্ষণ করে ইজরায়েল। প্রায় ১৪ বছর পর এমন ভয়ঙ্কর রকেটের ফুলঝুরি ইজরায়েলের আকাশে। সেই রকেট হানায় মৃত্যু হল কেরলের এক মহিলার।
মঙ্গলবার রাতের দিকে প্যালেস্তাইন থেকে যখন একের পর এক রকেট উড়ে আসছে ইজরায়েলের দিকে, সেইসময় স্বামীর সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলছিলেন সৌম্যা নামে ওই ভারতীয় মহিলা। প্রচণ্ড শব্দে কেঁপে ওঠে এলাকা। সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় মোবাইলের। স্বামী সন্তোষ আর যোগাযোগ করতে পারেননি স্ত্রীর সঙ্গে। সৌম্যার পরিচিতদের পরে ফোন করে তিনি জানতে পারেন, বাড়ির ছাঁদে রকেট এসে পড়ায় মৃত্যু হয়েছে স্ত্রীর। তিনি গত সাত বছর ধরে ইজরায়েলের আশকেলন শহরে পরিচারিকার কাজ করতেন।
এদিকে, প্রায় ৭ বছর পর ফের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে ক্ষতবিক্ষত ইজরায়েল-প্যালেস্তাইন। জেরুসালেম দিবস উপলক্ষে গত রবিবার থেকে ইজরায়েলে উৎসবের আমেজ উধাও। প্যালেস্তাইনি জঙ্গিগোষ্ঠী হামাস জেরুসালেমে আল-আকসা মসজিদে ইজরায়েলি পুলিশের তাণ্ডবের বদলা নিতেই একের পর এক রকেট ছুঁড়ছে। পাল্টা এয়ার স্ট্রাইক করছে ইজরায়েলি বায়ুসেনা। গাজা ভূখণ্ডে একটি বহুতল গুঁড়িয়ে গিয়েছে এয়ার স্ট্রাইকে। হামাসের জঙ্গিঘাঁটি ও রকেট লঞ্চারগুলি লক্ষ্য করে আঘাত হানছে ইজরায়েল।
এদিকে, এই সংঘর্ষের জেরে মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি নিয়ে উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘ। মধ্যপ্রাচ্যের শান্তিদূত টর ওয়েনেসল্যান্ড টুইট করে জানান, অবিলম্বে রকেট হামলা বন্ধ হোক। নাহলে বড় ধরনের যুদ্ধ অবসম্ভাবী। দুই পক্ষের নেতারা এই যুদ্ধের জন্য দায়ী হবেন। দ্রুত সমঝোতার পথে আসুন, যুদ্ধ থামান। গাজার নিরীহ মানুষকে এই যুদ্ধের মাশুল গুনতে হচ্ছে। রাষ্ট্রসংঘ দুই তরফেই শান্তি বজায় রাখার চেষ্টা করছে। হিংসা এখনই বন্ধ করুন।
হামাসের তরফে দাবি, ইজরায়েলের তেল আভিভ ও বিরশেবা লক্ষ্য করে ২১০টি রকেট তারা ছুঁড়েছে। গাজা শহরে বহুতল গুঁড়িয়ে দেওয়ার জবাব দিয়েছে তারা। এদিকে, তেল আভিভ থেকে এয়ার স্ট্রাইকের সাইরেনে আতঙ্কে সাধারণ মানুষ। হামাসের হামলার সামনে তেল আভিভকে অক্ষত রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ ইজরায়েলের কাছে।