দুই রাষ্ট্র নেতার ফোনালাপের এই প্রতিলিপি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সুত্র তুলে দিয়েছে রয়টার্সের হাতে।
Afghanisthan Crisis: ১৫ অগাস্ট দেশে ছেড়েছেন আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসরফ ঘানি। সেদিন বিকেলের মধ্যেই কাবুল দখল করে প্রেসিডেন্ট প্যালেসের কব্জা নিয়েছে তালিবানরা। সপ্তাহ তিনেক আগে পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্ট এবং আফগান প্রেসিডেন্ট নিশ্চিত ছিলেন কাবুল পতন অসম্ভব। ২৩ জুলাই দুই রাষ্ট্র প্রধানের মধ্যে হওয়া টেলিফোনিক কথোপকথন ফাঁস হয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্সে। ১৪ মিনিটের সেই গোপন কথোপকথনের প্রতিলিপি নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সুত্র এই সংবাদ সংস্থার হাতে তুলে দিয়েছে। সম্প্রতি সেই প্রতিলিপি পর্যালোচনা করেছে রয়টার্স। এবং দুই কণ্ঠ একটি বিডেন এবং অপরটি আসরফ ঘানির, নিশ্চিত করা গিয়েছে।
Advertisment
সূত্রের খবর ২৩ জুলাইয়ের সেই ফোনালাপের পর আফগানিস্তানের সঙ্কট ঘনিয়ে এসেছে। ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়েছে, মার্কিন সৈন্যরা দেশে ফিরেছেন। আত্মঘাতী বিস্ফোরণে শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে এবং সরকার গড়তে উদ্যোগ নিয়েছে তালিবান। কিন্তু দুই রাষ্ট্র প্রধান ঘুণাক্ষরেও সেই সময় অতি দ্রুত ঘনিয়ে আসা আফগানিস্তানের এই সঙ্কট অনুধাবন করতে পারেননি। ফোনালাপ উদ্ধৃত করে এমনটাই দাবি।
দেশ ছাড়ার আগে কাবুল বিমানবন্দরে সন্তান কোলে এক আফগান মহিলা। সৌজন্য: রয়টার্স
১৪ মিনিটের সেই বার্তালাপে বাইডেন, ঘানিকে শর্তসাপেক্ষে সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ইউএস প্রেসিডেন্টের শর্ত ছিল, ‘দেশকে সঙ্কট থেকে রক্ষা করতে সক্ষম ঘানি প্রশাসন। এমন একটা ইতিবাচক পরিকল্পনা প্রকাশ্যে আনুক আফগান সরকার। সেই শর্তের বিনিময়ে মিলবে মার্কিন সাহায্য।‘ এমনকি,দেশ রক্ষায় কী ভাবছে আফগান সরকার, সেটা নিশ্চিত করা গেলে আকাশপথে আফগান সেনাকে সামরিক সাহায্য দেবে পেন্টাগন। এমন প্রস্তাব ঘানিকে দিয়েছিলেন বাইডেন।
Advertisment
এ প্রসঙ্গে উল্লেখ্য, এই ফোনালাপের দিন দুই আগেই তালিবান ঘাঁটিতে ইউএস বিমান হানা নিয়ে সুর চড়িয়েছিল তালিবানরা। এই হামলা দোহা শান্তি চুক্তির পরিপন্থী। এমন অভিযোগ তোলা হয়েছিল। তালিবানদের বিরুদ্ধে আফগান সেনার প্রতিরোধ আরও কড়া করতে সে দেশের বিত্তবানদের সাহায্য চাইতে ঘানিকে পরামর্শ দিয়েছিলেন বাইডেন। এমনকি, শত্রুপক্ষকে বেগ দিতে সিদ্ধহস্ত আফগান সেনার এমন বাহিনীকে সামনে রাখতে পরামর্শ দিয়েছিলেন ইউএস প্রেসিডেন্ট।
কাবুল বিমানবন্দর সশস্ত্র তালিবান বাহিনীর কব্জায়। ছবি: এপি
এমনকি, সেই ফোনালাপে মার্কিন প্রশিক্ষণে তৈরি আফগান সেনার দক্ষতার ভূয়সী প্রশংসা করেছিলেন বাইডেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনার কাছে বিশ্বের সেরা সামরিক বাহিনী আছে। তিন লক্ষ সেনা লড়বে ৭০-৮০ হাজার তালিবানদের সঙ্গে। এই যুদ্ধে জয় নিশ্চিত।‘ যদিও তারপর থেকেই তালিবানদের কাছে বিনা যুদ্ধেই আত্মসমর্পণ করা শুরু করে আফগান সেনাবাহিনী। একটার পর একটা প্রাদেশিক রাজধানী দখলে নেয় তালিবানরা।