সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে খবর করার 'অপরাধ'। ব্রিটিশ আমলের সরকারি গোপনীয়তা রক্ষা আইনে গ্রেফতার করা হল বাংলাদেশের এক মহিলা সাংবাদিককে। মঙ্গলবার এই গ্রেফতারির বিরুদ্ধে মানবাধিকার সংগঠন এবং সাংবাদিকের সতীর্থরা প্রতিবাদ করেছেন। এই ঘটনায় মুখে পুড়েছে বাংলাদেশের শেখ হাসিনা সরকারের।
বাংলাদেশের সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক সংবাদপত্র প্রথম আলোর সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে সোমবার আটক করেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের আধিকারিকরা। পাঁচ ঘণ্টা তাঁকে আটকে রাখা হয়। তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একটি নথির বিনা অনুমতিতে মোবাইল ফোন থেকে ছবি তোলেন। এই অভিযোগে প্রথমে তাঁকে আটক করে শারীরিক নিগ্রহ করা হয়। এরপর পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় তাঁকে।
এই খবর ছড়িয়ে পড়তেই বাংলাদেশের সাংবাদিক মহল প্রতিবাদে গর্জে ওঠে। স্বাস্থ্য মন্ত্রক তাঁর বিরুদ্ধে ১৯২৩ সালের সরকারি গোপনীয়তা রক্ষা আইনে মধ্যরাতে মামলা দায়ের করে। সোমবার রাতভর তিনি পুলিশ হেফাজতে ছিলেন বলে জানা গিয়েছে। মঙ্গলবার তাঁকে আদালতে পেশ করা হয়। পুলিশ তাঁকে পাঁচদিনের জন্য হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানায়। কিন্তু আদালত সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে রোজিনাকে জেল হেফাজতে পাঠায়।
তদন্তমূলক সাংবাদিকতার জন্য জনপ্রিয় রোজিনা। সাম্প্রতিক কালে তিনি স্বাস্থ্য মন্ত্রকের একাধিক দূর্নীতি, কোভিড মোকাবিলায় ব্যর্থতা নিয়ে রিপোর্ট করায় সরকারের কুনজরে পড়েন। স্বাস্থ্য মন্ত্রকের অধীনে চিকিৎসক নিয়োগ, মাসের পর মাসে জরুরি চিকিৎসা সামগ্রী ঢাকা বিমানবন্দরে ফেলে রেখে নষ্ট করার সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশ করেন। তাতেই চক্ষুশূল হন তিনি। এই ঘটনায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক টিভি চ্যানেলগুলিকে বলেন, এই ঘটনা দুর্ভাগ্যজনক।
একাধিক সাংবাদিক রোজিনার গ্রেফতারির প্রতিবাদে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের রুটিন দৈনিক সাংবাদিক সম্মেলন বয়কট করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী এও বলেন, যে মন্ত্রকের দুর্নীতির পর্দাফাঁস করায় সরকার প্রতিহিংসা পরায়ণ হয়ে রোজিনার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে তা সর্বৈব মিথ্যা। মন্ত্রকের জনসংযোগ আধিকারিক মইদুল ইসলাম প্রধানের অভিযোগ, রোজিনা বেশ কিছু নথিপত্র চুরি করেছিলেন তাই পুলিশ ডাকতে হয়।