বাংলাদেশে ধর্মীয় হিংসার উৎপত্তি যে কারণে, সেই কুমিল্লার দুর্গাপুজো মণ্ডপে কোরান শরিফ রাখার ঘটনায় মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করার দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ পুলিশ। সোশ্যাল মিডিয়ায় যে ছবি ভাইরাল হওয়ার পর উত্তাল পরিস্থিতি হয় বাংলাদেশে। একের পর এক জেলায় দুর্গামণ্ডপে ভাঙচুর, হিন্দু মন্দিরে ভাঙচুর-লুঠপাট, হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। সেই অভিযুক্তকে ধরার চেষ্টা করছে পুলিশ।
পুজোমণ্ডপে ঠাকুরের পায়ের কাছে রাখা কোরান শরিফ। যে ছবি ঘিরে বাংলাদেশ জুড়ে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়। গত কয়েকদিনে নোয়াখালির ইস্কন মন্দিরে হামলা-সহ দুষ্কৃতীদের তাণ্ডবে বহু হিন্দুদের ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা হয়। মৌলবাদীদের হামলায় প্রাণ যায় ইস্কন মন্দিরের দুই সদস্য-সহ অনেকের। ৪৫০-এর বেশি দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। ৭০টির বেশি মামলা দায়ের হয়।
ঢাকা ট্রিবিউনের রিপোর্ট অনুযায়ী, ইকবাল হোসেন (৩৫) নামে মূল অভিযুক্তকে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে চিহ্নিত করা গেছে। ঘটনার দিন রাতে পুজোমণ্ডপের সামনে ঘোরাঘুরি করতে দেখা যায় তাকে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, পুলিশ-প্রশাসন ঘটনার মূল অভিযুক্তকে চিহ্নিত করেছে। আশা করছি কুমিল্লার ওই ঘটনার সন্দেহভাজন দ্রুত গ্রেফতার হবে। বার বার ঠিকানা বদল করছে অভিযুক্ত ধরা পড়ার ভয়ে। অভিযুক্ত গ্রেফতার হলে কুমিল্লার ঘটনার রহস্য উন্মোচন হবে।
প্রসঙ্গত, বাংলাদেশে দুর্গাপুজোয় হিংসা এবং হিন্দুদের উপর আক্রমণের ঘটনায় গোটা বিশ্বে মুখ পুড়েছে শেখ হাসিনা সরকারের। ভারত থেকে আমেরিকা, প্রত্য়েকেই হিন্দুদের উৎসবে হিংসা, হিন্দুদের উপর আক্রমণে নিন্দা জানিয়েছে। পরিস্থিতি এখনও অগ্নিগর্ভ একাধিক জেলায়। এই অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে নির্দেশ দিয়েছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য।
আরও পড়ুন বাংলাদেশে হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদে গর্জে উঠল আমেরিকা
উল্লেখ্য, বাংলাদেশের একাধিক জেলায় হিংসা-অশান্তি, দুষ্কৃতী তাণ্ডব রুখতে কড়া পদক্ষেপ করেছে সরকার। তিনি আগেই বলেছেন, এসব একেবারেই বরদাস্ত করা হবে না। সূত্রের খবর, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে হাসিনার সাফ নির্দেশ, প্রত্যেকটি ঘটনায় যুক্তদের যেন কঠোর শাস্তি হয়। মঙ্গলবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। সেখানেই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে এই নির্দেশ দেন তিনি। এখনও পর্যন্ত হিংসা, হিন্দুদের উপর হামলার ঘটনায় ৭০-এর বেশি মামলা দায়ের হয়েছে। গত পাঁচদিনে পুলিশ ৪৫০ জনকে গ্রেফতার করেছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন