ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার মনোভাব বুঝতে পেরেই কড়া পদক্ষেপ করতে শুরু করেছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। বার বার হুঁশিয়ারি দেওয়া সত্ত্বেও মস্কো ইউক্রেন নিয়ে অনড়। বাধ্য হয়েই এবার পাল্টা পদক্ষেপ করতে শুরু করল ওয়াশিংটন। মঙ্গলবার মার্কিন বিদেশ সচিব অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন রাশিয়ার বিদেশমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক বাতিল করলেন। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, রাশিয়া ইউক্রেন দখল করতে নেমে পড়েছে।
ইউক্রেনের বিদেশ মন্ত্রী দিমিত্রো কুলেবা ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, "গোটা বিশ্ব আর্থিকভাবে রাশিয়াকে তার অপরাধের শাস্তি দিক। আগেও তারা করেছে, এবং আরও করার পরিকল্পনা করেছে।" তিনি তোপ দেগে বলেছেন, "রাশিয়ার অর্থনীতিতে আঘাত হানুন, সজোর হানুন।"
রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সোমবারই সারা বিশ্বকে স্তম্ভিত করে ইউক্রেনের দুই বিদ্রোহী অঞ্চল দোনেৎস্ক এবং লুহানস্ককে স্বাধীন স্বীকৃতি দিয়ে ঘোষণাপত্রে সই করেছেন। দুই বাফার স্টেটকে প্রজাতন্ত্র ঘোষণা করেছেন পুতিন। যার ফলে ইউক্রেনে মস্কোর দখলদারির আশঙ্কা কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। তিনি রুশ ফৌজকে হুকুম দিয়েছেন, পূর্ব ইউক্রেনে সেনা মহড়া করতে। যাকে ক্রেমলিন তাদের ভাষায়, শান্তিরক্ষা মিশনের নাম দিয়েছে বিদ্রোহী অঞ্চলে।
আরও পড়ুন রাশিয়া-ইউক্রেনের দুনিয়া কাঁপানো দ্বন্দ্ব, পুতিন কি সোভিয়েত ইউনিয়নে ফিরে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর?
মঙ্গলবার সাংবাদিরকদের প্রশ্নের উত্তরে ব্লিঙ্কেন আরও বলেছেন, "রাশিয়ার ইউক্রেনে দখলদারি শুরু হয়ে গিয়েছে, এর স্পষ্ট মানে হল এই সপ্তাহে রুশ বিদেশ মন্ত্রী লাভরভের সঙ্গে গণতান্ত্রিক বিষয় নিয়ে বৈঠকের কোনও মানে হয় না।" আগামিকাল, ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউরোপে বৈঠক হওয়ার কথা ছিল। ব্লিঙ্কেনের দাবি, "খুব ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিও কথাবার্তার মাধ্যমে এড়ানো যায়। কিন্তু কিয়েভ-সহ গোটা ইউক্রেনে হামলা দেশবাসীর উপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে। সেটা সবসময় আমরা মাথায় রেখেছি।"
ব্লিঙ্কেনের আরও দাবি, "পুতিন ইউক্রেনে হামলার মনোস্থির করে ফেলেছেন। ইউক্রেন এবং তার বাসিন্দাদের নিয়ন্ত্রণ করার জন্য, ইউক্রেনের গণতন্ত্র ধ্বংস করার জন্য। যা তাঁর স্বৈরাচারী মনোভাবকে আরও প্রকট করে দিয়েছে বিশ্বের সামনে। সোভিয়েত জমানার মতো ফের ইউক্রেনকে আবার রাশিয়া নিজেদের দখলে নিতে চাইছে।" তাঁর সুরেই সুর মিলিয়ে ইউক্রেনের মন্ত্রী বলেছেন, গোটা বিশ্ব এখন ইউক্রেনের পাশে রয়েছে। মস্কোকে কেউ সমর্থন করবে না।